এই সিরিজে যেমন প্রস্তুতি চেয়েছি, তা পেয়েছি, বলেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
Published : 13 Oct 2022, 01:23 PM
ফলাফল চিন্তা করলে নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে মিলেছে শুধুই হতাশা। চার ম্যাচের একটিতেও মেলেনি জয়। তবে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে যে প্রস্তুতির জন্য সিরিজটি খেলেছে বাংলাদেশ, সেই চাহিদার পুরোটাই মিটেছে বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার ফিরতি ম্যাচে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে সাকিব-লিটনরা ১৭৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করালেও, শেষ ওভারে গিয়ে ম্যাচ জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। সিরিজের চার ম্যাচের মধ্যে এটিতেই জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সাকিবও উন্নতির এ জায়গাটি ধরিয়ে দিয়েছেন। তার মতে, সিরিজে ক্রমেই ভালো ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ, শেষ ম্যাচে খেলেছে সবচেয়ে ভালো। তাতে ত্রিদেশীয় সিরিজে যেমন প্রস্তুতি চেয়েছিল বাংলাদেশ, তা নিয়ে সন্তুষ্টি ঝরল অধিনায়কের কণ্ঠে।
“হ্যাঁ এটি (নিউজিল্যান্ডে জেতা) কঠিন। তবে আজকে আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলেছি। হয়তো আর কিছু রান বেশি করতে পারতাম। শেষ ওভারে আমরা মাত্র ৩ রান করেছি। শেষের ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে দলের আশা ছিল ১০-১৫ রানের। তবে এমন হতেই পারে।”
আগের তিন ম্যাচেই মাঝের ওভারগুলোতে (৭ থেকে ১৬) চারটি করে উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব ও লিটন দাসের ৮৮ রানের জুটির সুবাদে এই সময়ে বাংলাদেশ হারিয়েছে মাত্র একটি উইকেট।
মাঝের ওভারের সমস্যা কাটিয়ে ওঠাকে বড় ইতিবাচক দিক হিসেবে উল্লেখ করে এবার বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরার তাগিদ দিলেন সাকিব।
“আমি নেতিবাচক দিকগুলো উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। আমার মতে, আজ মাঝের ওভারে আমরা দারুণ খেলেছি। এই জায়গায় আমরা পিছিয়ে ছিলাম। তো এটি একটি ইতিবাচক দিক। এই সিরিজ থেকে যেমন প্রস্তুতি চাচ্ছিলাম আমরা সেটা পেয়েছি। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরে দেশের জন্য ভালো কিছু করা।”
সাকিব-লিটনের দৃষ্টিনন্দন জুটির পর শেষ তিন ওভারে মাত্র ২১ রান পেয়েছে বাংলাদেশ। এখানে খানিক পিছিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত ১৭৩ রানের সংগ্রহ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিল দল। কিন্তু বোলারদের বিশেষ করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বাজে দিন যাওয়ায় ম্যাচটি জেতা হয়নি। পাকিস্তানের দুই ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়ায় কাজটি কঠিন হয়ে পড়েছিল বলে জানালেন সাকিব।
“আমরা যে অবস্থায় ছিলাম, সেখান থেকে আরও কিছু বেশি রান করতে পারতাম। তবে ইনিংসের শুরুতে যদি আমাকে কেউ বলতো ১৭৫ দেওয়া হবে, আমি সেটি গ্রহণ করতাম। পাঁচজন বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে আমরা আরেকটু ভালো বোলিং করতে পারতাম। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যান সেট হয়ে গেলে আটকে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।”
ত্রিদেশীয় সিরিজে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিউ জিল্যান্ড সফরে নেওয়া সব খেলোয়াড়কে অন্তত একটি করে ম্যাচ খেলিয়েছে বাংলাদেশ। সবাইকেই পরখ করে নিয়েছে ম্যাচ পরিস্থিতি ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে। সেদিক থেকে আসন্ন বিশ্বকাপের দল কেমন হবে- সে ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেছে বলে জানালেন সাকিব।
“টিম ম্যানেজমেন্টের দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এখন পরিষ্কার যে বিশ্বকাপে কোন দল খেলানো হবে, আমরা ঠিক কী চাচ্ছি। হ্যাঁ! (ক্লোজ ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে)। আমরা যেভাবে খেলেছি, প্রথম ম্যাচ ও শেষ ম্যাচের দিকে দেখুন, অনেক উন্নতি হয়েছে। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগ পর্যন্ত আমরা এই ধারা ধরে রাখতে চাই।”
দলীয় পারফরম্যান্স যেমনই হোক, ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে শেষ দুই ম্যাচে উজ্জ্বল ছিলেন সাকিব। বুধবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ রানের পাকিস্তানের বিপক্ষে খেললেন ৬৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস। তবে দুই ম্যাচেই ছিলেন উইকেটশূন্য। তাই বোলিং নিয়ে কাজ করার জায়গা দেখছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডারদের একজন।
“দলের জন্য রান করা আমার কাজ। অন্য দিক থেকে চিন্তা করলে তিন ম্যাচে বোলিংটা পুরোপুরি যথাযথ হয়নি। এই জায়গায় আমার হয়তো কিছু কাজ করতে হবে।”