শামিলের ৬৭ রানে আড়াল জিসানের ঝড়ো ফিফটি

টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের পর একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও পাকিস্তানের বিপক্ষে হারল বাংলাদেশের যুবারা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 09:16 AM
Updated : 17 May 2023, 09:16 AM

৭ বলে প্রয়োজন ৪ রান। দারুণ ডেলিভারিতে ফিফটি করা শামিল হোসেনকে বোল্ড করলেন ইকবাল হোসেন। শেষ ওভারের আগে টিম হাডলে পরিকল্পনা সাজাল বাংলাদেশ। কিন্তু কাজে লাগল না সেটি। প্রথম বলেই ৪ মেরে ম্যাচ শেষ করে দিলেন আলি আসফান্দ। 

রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে বুধবার পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশের যুবারা। ১৬০ রানের লক্ষ্য ৫ বলে বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে সফরকারীরা। 

একমাত্র আনঅফিসিয়াল টেস্টে ১০ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। পরে ৫ ম‍্যাচের যুব ওয়ানডে সিরিজ হারে ৪-১ ব‍্যবধানে। এবার টি-টোয়েন্টিতেও হেরে শেষ হলো স্বাগতিকদের হতাশার সিরিজ। 

বাংলাদেশকে দেড়শ ছাড়ানো স্কোর এনে দেন জিসান আলম। স্রেফ ২৬ বলে ৫২ রান করেন মারকুটে ওপেনার। পরে দারুণ বোলিংয়ে স্রেফ ২৩ রানে ৩ উইকেট নেন ইকবাল। কিন্তু এগিয়ে আসতে পারেননি অন‍্যরা। তাতে পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। 

পাকিস্তানের জয়ের নায়ক শামিল ৪৯ বলে ১ ছক্কা ও ৭ চারে করেন ৬৭ রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে তার হাতে। 

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই অবশ্য জীবন পান জিসান। আমির হাসানের বলে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি কিপার মির্জা সাদ। 

এরপর আর পেছনে তাকাননি জিসান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে মারেন প্রথম চার। এক বল পর আমিরকে ওড়ান ছক্কায়। এক বল পর আবার বাউন্ডারি। 

আইমাল খানের করা পঞ্চম ওভারে এক চারের সঙ্গে জোড়া ছক্কা মারেন জিসান। অষ্টম ওভারে আরাফাতের বলে দৃষ্টিনন্দন ইনসাইড আউট শটে ছক্কা মেরে স্রেফ ২৪ বলে পূরণ করেন নিজের ফিফটি। 

পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর চমৎকার এক ক্যাচে তাকে আর এগোতে দেননি তৈয়ব আরিফ। নবম ওভারের প্রথম বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কার চেষ্টা করেন জিসান। একদম সীমানায় দাঁড়িয়ে দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন তৈয়ব। 

ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন দেখে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে বাইরে চলে যান তিনি। বল বাতাসে থাকতেই ফের মাঠে ঢুকে নেন দারুণ এক ক্যাচ। শেষ হয় জিসানের ৫ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংস। 

জিসানের ঠিক বিপরীত অবস্থা ছিল আরেক ওপেনার মইনুল ইসলামের ব্যাটে। ৩ চারে ২১ রান করতে ৩৩ বল খেলেন তিনি। 

তিন নম্বরে নেমে অধিনায়ক আহরার আমিন রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩ ছয়ে স্রেফ ১০ বলে ২০ রান করে আউট হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। 

এরপর আরিফুল ইসলাম (২৫ বলে ৩০) ও আশিকুর রহমানের (১২ বলে ১৮) ব্যাটে দেড়শ পেরোয় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ওপেনিং করলেও এই ম্যাচে আশিকুরকে ছয় নম্বরে নামানো হয়। 

রান তাড়ায় শুরুতেই পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দেন ইকবাল। প্রথম ওভারের শেষ বলে আউট করেন দারুণ ছন্দে থাকা শাহজাইব খানকে। রানের খাতাই খুলতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার। 

তিন নম্বরে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টায় বেশি দূর যেতে পারেননি অধিনায়ক সাদ। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ বলে ২৪ রান করে ফেরেন তিনি। চার নম্বরে নামা তৈয়ব ১৬ রান করতে খেলেন ১৯ বল। 

এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন শামিল। তার সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে রানের পালে হাওয়া দেন আরাফাত। দুজন মিলে স্রেফ ৩৩ বলে যোগ করেন ৫৬ রান। যেখানে ৭ চার ও ১ ছক্কায় সিংহভাগ রান করেন আরাফাত। 

১৫ রান বাকি থাকতে আরাফাত ফিরলেও দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যান ৩৩ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া শামিল। ১৯তম ওভারের শেষ বলে থামে তার ৫২ বলের ইনিংস। তবে এতে জয় পেতে কোনো সমস্যা হয়নি পাকিস্তানের।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ২০ ওভারে ১৫৯/৫ (জিসান ৫২, মইনুল ২১, আহরার ২০, আরিফুল ৩০, মাহফুজুর ১১, আশিকুর ১৮*, শিহাব ৩*; আমির ৪-০-২৮-১, আসফান্দ ৪-০-১৭-১, আইমাল ৩-০-৪১-০, আরাফাত ৪-০-৩৪-০, হুসাইন ৩-০-২৫-২, তাহির ২-০-১২-১)

পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল:  ১৯.১ ওভারে ১৬০/৬ (শামিল ৬৭, শাহজাইব ০, সাদ ২৪, তৈয়ব ১৬, আরাফাত ৪১, হামকা ১, আসফান্দ ৬*, আমির ০*, ইকবাল ৪-০-২৩-৩, রোহানাত ৪-০-৩৯-২, জিসান ৪-০-৩৩-০, আরিফুল ১-০-৯-১, ওয়াসি ৪-০-২৪-০, মাহফুজুর ১.১-০-১১-০, জাকারিয়া ১-০-২০-০)

ফল: পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৪ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শামিল হুসাইন