নিউ জিল্যান্ডকে ১৩৭ রানের লক্ষ্য দিলো স্বাগতিকরা।
Published : 09 Dec 2023, 10:46 AM
একপ্রান্ত আগলে রেখে এগোতে থাকলেন জাকির হাসান। কিন্তু অন্য প্রান্তে যাওয়া-আসার মিছিলে নাম লেখালেন বাকিরা। এর মাশুল গুনে বড় লিডের আশা নিয়ে খেলতে নেমে নিজেদের লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না বাংলাদেশ। নিজেদের প্রত্যাশামতো তুলনামূলক কম রানের লক্ষ্য পেল নিউ জিল্যান্ড।
মিরপুর টেস্টের কুয়াশাচ্ছন্ন চতুর্থ দিন সকালে এক সেশনও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ২ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৭ ওভারে ১০৬ রান করে বাকি ৮ উইকেট হারাল তারা। ম্যাচ জিতে সমতায় সিরিজ শেষ করতে নিউ জিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য এখন ১৩৭ রানের।
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুইশর কম রানের লক্ষ্য দিয়ে জয়ের নজির নেই একটিও। সিরিজ জিততে তাই নতুন রেকর্ড গড়তে হবে স্বাগতিকদের।
বাংলাদেশকে দেড়শর কাছাকাছি নেওয়ার কারিগর জাকির। চলতি সিরিজে আগের তিন ইনিংসে বিশের আগে আউট হওয়া বাঁহাতি ওপেনার এবার খেলেন ৫৯ রানের ইনিংস। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি।
জাকিরকে আউট করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন এজাজ প্যাটেল। পরে শরিফুলকে ফিরিয়ে তিনি গুটিয়ে দেন বাংলাদেশকে। আরেক বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ধরেন ৩ শিকার। বাংলাদেশের ৩৫ ওভারের ইনিংসে কাইল জেমিসনকে বোলিংয়ে আনেনি নিউ জিল্যান্ড।
কুয়াশাভেজা সকালে ইতিবাচক শুরুই করেন জাকির। দিনের দ্বিতীয় ওভারে টিম সাউদিকে মারেন জোড়া বাউন্ডারি। প্রথমটি ব্যাটের কানায় লেগে আসে সৌভাগ্যবশতভাবে। পরেরটি তিনি নিয়ন্ত্রণ রেখেই স্কয়ার কাটে মারেন গালির ওপর দিয়ে।
অন্যপ্রান্তে মুমিনুল হক শুরু থেকেই করেন নড়বড়ে ব্যাটিং। তার অস্বস্তিকর ব্যাটিংয়ের মাঝে রানের চাকা সচল রাখেন জাকির। দিনের সপ্তম ওভারে এই দুজনের ৩৩ রানের জুটি ভাঙেন এজাজ। নিখুঁত টার্ন করা শর্ট লেংথ ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন মুমিনুল।
এরপর দুই ওভারে স্যান্টনারের দুই শিকার মুশফিকুর রহিম ও শাহাদাত হোসেন। জোরের ওপর করা লেংথ ডেলিভারি খেলব না ছাড়ব ভাবতে ভাবতেই যেন খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দেন মুশফিক।
মিডল স্ট্যাম্পে পিচ করে লাইন ধরে রাখা ডেলিভারি শাহাদাতের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত করে প্যাডে। রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচতে পারেননি তরুণ মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান।
দ্রুত তিন জনের বিদায়ের পর বাংলাদেশকে আরও চেপে ধরেন এজাজ। বড় শটের চেষ্টায় মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এক বল পর রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউ থেকে বেঁচে যান নুরুল হাসান সোহান।
তবু নিজেকে গুছিয়ে না নিয়ে ঠিক পরের বলেই স্কুপ খেলার চেষ্টা করেন কিপার-ব্যাটসম্যান। কিন্তু ব্যাটেই লাগাতে পারেননি বল। আউটের সিদ্ধান্ত জানাতে সময় নেননি আম্পায়ার। এবার রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি সোহান।
স্বীকৃত সব ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে একা পড়ে যান জাকির। দলের একশ পূর্ণ হওয়ার পর ফিরে যান নাঈম হাসানও। তাইজুল ইসলামের সঙ্গে ছোট জুটিতে জাকির পূর্ণ করেন পাঁচ ম্যাচের ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি।
বাঁহাতি এই ওপেনারও থামেন এজাজের ওভারে। ফুল লেংথ ডেলিভারি সুইপ করতে গিয়ে তার ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায় লেগ স্লিপে। ৮৬ বলের ইনিংসে ৬ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারেন ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
পরে তাইজুল ও শরিফুল ইসলামের ১৬ রানের শেষ উইকেট জুটিতে কিছুটা বাড়ে বাংলাদেশের লিড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭২
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৮০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৩৮/২) ৩৫ ওভারে ১৪৪ (জাকির ৫৯, মুমিনুল ১০, মুশফিক ৯, শাহাদাত ৪, মিরাজ ৩, সোহান ০, নাঈম ৯, তাইজুল ১৪*, শরিফুল ৮; এজাজ ১৮-১-৫৭-১, স্যান্টনার ১১-০-৫১-৩, সাউদি ৬-১-২৫-১)