প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের নেতৃত্ব পেয়ে রোমাঞ্চের সাগরে ভাসছেন না এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
Published : 24 Jul 2022, 03:45 PM
জাতীয় দলে জায়গা পাকা করার লড়াইয়ে থাকা নুরুল হাসান সোহানের জন্য নেতৃত্ব পাওয়া গর্বের। একই সঙ্গে একাদশে থাকার নিশ্চয়তাও। তবে এসবের চেয়ে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে এই কিপার-ব্যাটসম্যানের কাছে।
মাহমুদউল্লাহর অনুপস্থিতিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য নেতৃত্ব পেয়েছেন সোহান। আগামী মঙ্গলবার দেশ ছাড়বে টি-টোয়েন্টি দল। এর দুই দিন আগে রোববার প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।
“এটা অবশ্যই গর্বের ব্যাপার। সামনে যে চ্যালেঞ্জটা আছে, সেটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছি। খুব বেশি রোমাঞ্চ বা এসবের কোনো সুযোগ নেই। মনে হয়, দল হিসেবে সেরাটা দেওয়াই লক্ষ্য।”
“নেতৃত্ব পাওয়া নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার কিছু নেই। আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছি। অবশ্যই এট গর্বের ব্যাপার। এটা অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জ আমার জন্য।”
চার ঘরোয়া টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে সোহানের। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দিয়ে ওঠে আসা এই কিপার ৯৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, একশর বেশি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ। খেলেছেন প্রায় দেড়শ টি-টোয়েন্টি।
অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। সব কিছু মিলিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাতে পাল্টে গেছে সোহানের দৃষ্টিভঙ্গী।
“আমি যদি আমার জীবন নিয়ে কথা বলি, ক্রিকেট এবং সব কিছু নিয়ে প্রত্যাশা, সেটা আমার ভেতরে খুব কম। সব কিছু মিলিয়ে রোমাঞ্চ বা এসব অনেক কিছুই কম। আমার মনে হয়, আমি নিজে সততার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করব এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করব। ফল নিয়ে কিংবা ভবিষ্যত বা অতীত নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করি না। চাপ থেকে আমি এখন দূরে থাকার চেষ্টা করি। গত অনেক দিন ধরেই করতে পারছি। (চাপ মুক্ত থাকা) আমার জন্য এটা বড় ব্যাপার হবে না।”
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৩৩ ম্যাচে ১২.৯০ গড় ও ১১১.৯৮ স্ট্রাইক রেটে ২৭১ রান করেছেন সোহান। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩০। একজন ব্যাটসম্যানের জন্য যা আদর্শ নয়। তবে রানের চেয়ে ছোট ছোট ইনিসগুলোর প্রভাবকে নতুন অধিনায়ক দেখছেন বড় করে।
“টি-টোয়েন্টিতে আমরা যারা মিডল অর্ডারে বা লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করি, সেখানে রানের সংখ্যার চেয়ে ইমপ্যাক্টটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ১৫-২০ রান দেখতে অনেক ছোট লাগতে পারে তবে আমার মনে হয়, এই রান খেলায় কতটা প্রভাব রাখতে পারছে সেটাই আমার চিন্তা থাকবে। টি-টোয়েন্টিতে আমি যেখানে ব্যাটিং করি সেখান থেকে পঞ্চাশ বা একশ করার সুযোগ খুব কম থাকে। দলে চাহিদা যতটুকু থাকবে সেই ইম্প্যাক্ট আমি ফেলার চেষ্টা করব।”
এক সিরিজের জন্য নেতৃত্ব পাওয়া সোহান খুব দূর ভবিষ্যতে তাকাচ্ছেন না। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মতো বড় আসরের ভাবনায় কঠিন করে তুলতে চাচ্ছেন না আসন্ন চ্যালেঞ্জ।
“এক সিরিজের জন্য আমি নেতৃত্ব পেয়েছি, আমার ভাবনা এই তিন ম্যাচ নিয়েই। আমার মনে হয়, আমরা কীভাবে এখানে ভালো করতে পারি (সেটাই গুরুত্বপূর্ণ)। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে জিতবোই এমন কোনো কথা নেই। অবশ্যই চেষ্টা থাকবে যেন শতভাগ দিতে এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে পারি আর ফল যেন ইতিবাচক হয় অবশ্যই সেই লক্ষ্য থাকবে।”
“গত এক-দেড় বছর ধরে আমি আসলে ভবিষ্যৎ বা অতীত নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে চাই না। এখন যে কাজ করছি আমি সততার সঙ্গে সেই কঠোর পরিশ্রম করে যেতে চাই। ভবিষ্যতে কিছু হবে সেটা নিয়ে নিয়ে আমি চিন্তিত না। যেহেতু জিম্বাবুয়ে সিরিজ আগে আসবে, এই তিন ম্যাচে নিজের সেরাটা দিতে চাই।”
আগামী ৩০ জুলাই সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।