সাকিব বোলিং না করলে বাদ পড়বেন কে

ঢাকা টেস্টের আগে প্রথম দিনের অনুশীলনে বোলিং করতে দেখা যায়নি সাকিবকে। কিপিংয়ে মনোযোগী দেখা গেছে লিটন দাসকে।

মঙ্গলবার মিরপুরে অনুশীলনের আগে গা গরমের ফুটবল ম্যাচে প্রিয় দলের জার্সি গায়ে সাকিব আল হাসান। সঙ্গে আছেন নুরুল হাসান সোহান ও লিটন দাস। ছবি: বিসিবি। 

স্কোয়াডে নুরুল হাসান সোহান থাকলে সাধারণত গা গরমের ফুটবল খেলা শেষে তিনিই সবার আগে গ্লাভস হাতে নিয়ে শুরু করেন কিপিং অনুশীলন। কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। কিপিং অনুশীলনের শুরুটা করলেন লিটন দাস।

সবার সঙ্গে ফুটবল খেললেও গ্লাভস হাতে মাঠে নামার তাড়া দেখালেন না সোহান। গা গরম করা শেষে তিন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদকে নিয়ে সেন্টার উইকেটে কিপিং অনুশীলনে নেমে পড়েন লিটন।

এমনিতে নিয়মিতই টুকটাক কিপিং অনুশীলন করেন লিটন। তবে এ দিন অন্য সময়ের চেয়ে মনোযোগী দেখা যায় বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ককে। পরে মাঠের সীমানার কাছে সোহানও কিপিং অনুশীলন করেন। কিন্তু দুজনের অনুশীলনের চিত্র থেকে আভাস মিলছে, মিরপুর টেস্টে হয়তো লিটনই থাকবেন উইকেটের পেছনে।

এই ধারণার পক্ষে শক্ত যুক্তি আছে আরও। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে সাকিব আল হাসান বোলিং করবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে এখনও। মঙ্গলবারের অনুশীলনে ইনডোরে স্রেফ ব্যাটিং করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অনুশীলনের যতটুকু দেখা গেছে, বল নিয়ে হাত ঘোরাতে দেখা যায়নি তাকে। 

চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম দিনের পর বোলিং করেননি সাকিব। ম্যাচ শেষে রাসেল ডমিঙ্গো বার্তা দিয়ে রাখেন, ঢাকা টেস্টে প্রয়োজনে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলানো হবে সাকিবকে। সেক্ষেত্রে মিরপুর টেস্টে বোলিং বিভাগে শক্তি বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন বাংলাদেশ কোচ। 

সাকিব শেষ পর্যন্ত শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললে একাদশে পরিবর্তন প্রায় নিশ্চিত। ঢাকা টেস্টের আগে প্রথম অনুশীলনে লিটন-সোহানের কিপিং থেকে সে ধারণাই মিলেছে। প্রথম ম্যাচের পর ডমিঙ্গোও ইঙ্গিত দিয়েছেন, সাকিব বোলিং করতে না পারলে একাদশের ভারসাম্যে বদল আনা হবে। 

চট্টগ্রাম টেস্ট শুরুর আগে সোহানকে পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়ার কথা জোর দিয়েই বলেন কোচ। ওই ম্যাচে তাই ১৬ ও ৩ রানে আউট হলেও একাদশে এই কিপার-ব্যাটসম্যানের জায়গা নিয়ে সংশয় থাকার কথা নয়। তবে সাকিবের বোলিং করতে না পারলে সোহানের জায়গা নড়বড়ে হতে পারে, ওই টেস্ট শেষে জানিয়ে রাখেন ডমিঙ্গো।

“সাকিব বোলিং করতে না পারলে ব্যাপারটি (সোহানকে খেলানো) ‘ট্রিকি’ হয়ে যায়। সোহান ব্যাট হাতে ভালো করেছে। এই ম্যাচে (চট্টগ্রামে) রান পায়নি। তবে বাংলাদেশে এটিই চ্যালেঞ্জ। রান না পেলেই বাদ পড়ার দাবি ওঠে। আগের ম্যাচে কী হয়েছে, সেটি মনে রাখা হয় না। এক ম্যাচ আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে সে জোড়া ফিফটি করেছে। তাই আমরা কোনো আবেগী সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।” 

বোলার সাকিবকে হারিয়ে ভারসাম্য ফেরানোর চেষ্টায় সম্ভাব্য বাদ পড়াদের মধ্যে ছিল ইয়াসির আলি চৌধুরির নামও। চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিন নম্বরে নেমে দুই ইনিংসে ৪ ও ৫ রান করেন সাধারণত মিডল অর্ডারে খেলা এই ব্যাটসম্যান। রান না পেলেও তার ওপর আস্থা আছে কোচের, তবে সমস্যাটি সেই ভারসাম্য রক্ষা করা নিয়েই।   

বাংলাদেশ কোচের ভাষ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম টেস্টে ‘আর কাউকে না পেয়ে’ ইয়াসিরকে তিন নম্বরে খেলানো হয়েছে। ওই ম্যাচের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে তাকে বাদ দেওয়ার পক্ষে নন ডমিঙ্গো। তবে সাকিবের বোলিং করতে না পারাটাই পাকাচ্ছে ঝামেলা। 

“দলের কম্বিনেশনের ওপর নির্ভর করে (ইয়াসির আবার তিনে খেলবে কি না)। আমরা আশা করছিলাম, সাকিব কয়েক ওভার বল করতে পারবে। এখন এটা নিয়ে ভাবতে হবে আমাদের। মিরপুরের উইকেটের ধরন ভিন্ন। এমনিতে ক্রিকেটারদের নিয়ে খুব বেশি নাড়াচাড়া করতে চাই না আমি। খেলোয়াড়দের প্রতি ন্যায্য থাকতে চাই। মিডল অর্ডার এখন অনেকটাই ঠাসা। তাই সে (ইয়াসির) যেখানেই খেলুক, সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে তাকে।” 

সব মিলিয়ে একাদশ থেকে কাটা পড়ার শঙ্কার সোহান ও ইয়াসিরই। মঙ্গলবারের অনুশীলন থেকে ইঙ্গিত, কোপটা পড়ছে সোহানের জায়গায়।