প্রথম দিনেই লাবুশেনের ১৫৪, অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত শুরু

লাবুশেনের সেঞ্চুরির সঙ্গে খাওয়াজা ও স্মিথের ফিফটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরুটা দারুণ হলো অস্ট্রেলিয়ার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2022, 11:04 AM
Updated : 30 Nov 2022, 11:04 AM

তিন বছর পর পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে টেস্ট ম্যাচ। ক্রিকেট বিশ্বের কত কিছু বদলে গেছে এই সময়ে! কিন্তু বদল নেই সেই টেস্ট আর এই টেস্টের শুরুর দিনটায়। সেদিনও শুরুর দিনে এক ওপেনারের অল্প রানে বিদায়ের পর তিনে নেমে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে করেছিলেন মার্নাস লাবুশেন। এ দিনও সেই একই চিত্র। একটু অমিল বলতে লাবুশেন এবার আরও দাপুটে, প্রথম দিনেই রান তার আরও বেশি।

এক ব্যাটসম্যান যখন দেড়শর বেশি রানে অপরাজিত, দলের অবস্থাও অনুমেয়। ঘরোয়া টেস্ট গ্রীষ্মের শুরুটা দারুণ করল অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের হতাশ করে বুধবার প্রথম দিনে তাদের রান ২ উইকেটে ২৯৩।

চতুর্থ ওভারে উইকেটে গিয়ে দিন শেষে ১৫৪ রানে অপরাজিত লাবুশেন। দিনের দুটি শতরানের জুটির প্রথমটিতে উসমান খাওয়াজা আউট হন ৬৫ রান করে। আরেকটিতে ৫৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন স্টিভেন স্মিথ।

ক্যারিবিয়ান বোলারদের শুরুটা খারাপ ছিল না। বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কিছু ভালো ডেলিভারি বা দুর্দান্ত স্পেল তারা উপহার দেন। কিন্তু যথেষ্ট ধারাবাহিকভাবে চাপ তারা ধরে রাখতে পারেনি।

সকালে উইকেটের যা চিত্র ছিল, তাতে দিনশেষের এই স্কোর অবাক করতে পারে অনেককে। ১০ মিলিমিটার ঘাসে ঢাকা উইকেট! টস জয়ী দল এখানে আগে বোলিং করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স টস জিতে নেন ব্যাটিং। সেই সিদ্ধান্তকেই এখন মনে হচ্ছে ‘মাস্টারস্ট্রোক।’ সময় যত গড়াবে এই টেস্টে, উইকেট আরও গতিময় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নতুন বলে অবশ্য প্রথম উইকেট দ্রুতই পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চতুর্থ ওভারে জেডেন সিলসের বল স্টাম্পে টেনে আনেন ডেভিড ওয়ার্নার। আগের ১৫ টেস্ট ইনিংসে স্রেফ দুটি ফিফটি করা ব্যাটসম্যান এবার আউট ৫ রানেই।

লাবুশেনের লড়াই শুরু সেখান থেকে। সঙ্গী খাওয়াজা। শুরুর সময়টা সাবধানী ব্যাটিংয়ে পার করেন দুজন। ক্যারিবিয়ানদের সব প্রচেষ্টা সামাল দেন তারা দৃঢ়তাপূর্ন ব্যাটিংয়ে। প্রথম সেশনে ২৯ ওভারে রান আসে ৭২। কিন্তু আর কোনো উইকেট হারায়নি অস্ট্রেলিয়া।

পরের সেশনে সাবলিল ব্যাটিংয়ে জুটি এগিয়ে নেন দুজন। ১১১ বলে ফিফটি করে খাওয়াজা, ১১২ বলে লাবুশেন। চার বিশেষজ্ঞ পেসারের সঙ্গে অলরাউন্ডার কাইল মেয়ার্সকে নিয়ে ৫ পেসারের আক্রমণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের। স্পিনের দায়িত্ব অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার রোস্টন চেইসের। তাদেরকে হতাশ করে লাবুশেন-খাওয়াজা জুটিতেই অস্ট্রেলিয়া পেরিয়ে যায় দেড়শ।

চা বিরতির একটু আগে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে খাওয়াজাকে ফিরিয়ে ১৪২ রানের জুটি ভাঙেন মেয়ার্স। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬৫ রানে থামেন খাওয়াজা।

তবে লাবুশেন ও স্মিথ আরেকটি শতরানের জুটি গড়ে তুলে এগিয়ে নেন অস্ট্রেলিয়াকে। স্মিথ শুরুতে একটু সময় নিলেও সময়ের সঙ্গে রান বাড়াতে থাকেন দ্রুত। লাবুশেন তো ততক্ষণে ছুটছেন!

সিলসের বলে বাউন্ডারিতে শতরানে পা রাখেন তিনি ১৯২ বলে। ২৯ টেস্টে তার অষ্টম সেঞ্চুরি এটি। সবশেষ টেস্টেও সেঞ্চুরি করেছিলেন গত জুলাইয়ে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে।

দিনের শেষ ভাগে দ্বিতীয় নতুন বলেও সফল হয়নি ক্যারিবিয়ানরা। ১৩৬ রানে একটু সুযোগের মতো অবশ্য দিয়েছিলেন লাবুশেন। তবে তুলে দেওয়া সেই বলে সময়মতো বলের নিচে যেতে পারেননি এই টেস্টেই অভিষিক্ত তেজনারাইন চন্দরপল। ক্যারিবিয়ান গ্রেট শিবনারাইন চন্দরপলের ছেলে তেজনারাইন এ দিন সকালে টেস্ট ক্যাপ নেন কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা কাছ থেকে।

বেঁচে যাওয়ার পর দেড়শও ছাড়িয়ে যান লাবুশেন। ৭৫ বলে ফিফটি ছুঁয়ে স্মিথও এগিয়ে যান আরও। শেষটুকুও ভালোভাবে সামলে হাসিমুখে মাঠ ছাড়েন দুজন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৯০ ওভারে ২৯৩/২ (ওয়ার্নার ২, খাওয়াজা ৬৫, লাবুশেন ১৫৪*, স্মিথ ৫৯*; রোচ ১৮-৩-৫৯-০, সিলস ১৪-৩-৬৩-১, জোসেফ ১৫-৩-৪৬-০, মেয়ার্স ১১-২-২৪-১, হোল্ডার ১৬-৬-২৯-০, চেইস ১৫-২-৫৩-০, ব্র্যাথওয়েট ১-০-৩-০)।