বাভুমার সেঞ্চুরি, মিলার ঝড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড গড়া জয়

ইংল্যান্ডকে আবার হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 04:48 PM
Updated : 29 Jan 2023, 04:48 PM

জিততে হলে গড়তে হতো রেকর্ড। বড় রান তাড়ায় দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে সুর বেঁধে দিলেন টেম্বা বাভুমা। ডেভিড মিলার উপহার দিলেন ঝড়ো ফিফটি। ইংল্যান্ডকে আবার হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে নিল ওয়ানডে সিরিজ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে পেল মূল্যবান আরও ১০ পয়েন্ট।

ব্লুমফন্টেইনের ম্যানগাউং ওভালে রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ৫ উইকেটে। ৩৪৩ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা পেরিয়ে যায় ৫ বল বাকি থাকতে।

এই মাঠে ওয়ানডেতে প্রথমবার তিনশর বেশি রান তাড়ায় জিতল কোনো দল। আগের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডও ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচে ২৭২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তাদের জয় ছিল ৬ উইকেটে।

এবারের জয়ের নায়ক বাভুমা ১০২ বলে ১৪ চার ও এক ছক্কায় খেলেন ১০৯ রানের দারুণ ইনিংস। ৩৭ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে অপরাজিত ৫৮ রানের ইনিংসে জয় নিয়ে ফেরেন মিলার।

ইংল্যান্ডকে এ দিন প্রায় সাড়ে তিনশ রানের পুঁজি এনে দিতে বড় ভূমিকা ছিল জস বাটলারের। ইংলিশ অধিনায়ক ৮২ বলে খেলেন অপরাজিত ৯৪ রানের ইনিংস। হ্যারি ব্রুক ৭৫ বলে করেন ৮০। ফিফটি আসে মইন আলির ব্যাট থেকেও।

বড় পুঁজি নিয়ে তাদের বোলাররা তেমন কিছু করে দেখাতে পারল না। এই সংস্করণে টানা পঞ্চম হারের তেতো স্বাদ পেল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

বোলিংয়ে ছন্দছাড়া ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাও। তাদের বোলাররা ওয়াইড দেয় ১৮টি! ৫০ ওভার শেষ করতে সময় লাগে চার ঘণ্টার বেশি। বাজে বোলিংয়ের হতাশা কেটে গেল অবশ্য দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে।

রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার ভিত গড়ে দেয় কুইন্টন ডি কক ও বাভুমার উদ্বোধনী জুটি। শুরুর জুটিতে ১২ ওভারে দুজন যোগ করেন ৭৭ রান। ২৮ বলে ৩১ রান করা ডি কককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন অলি স্টোন।

৪৭ বলে ফিফটি ছুঁয়ে এগিয়ে যান বাভুমা। দ্বিতীয় উইকেটে রাসি ফন ডার ডাসেনের সঙ্গে তিনি গড়েন ৯৭ রানের আরেকটি দারুণ জুটি।

৯৬ থেকে আদিল রশিদকে চার মেরে বাভুমা পূর্ণ করেন তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি, ৯০ বলে। একটু পরই স্যাম কারানকে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি।

পরের ওভারে বিদায় নেন ফন ডাসেনও। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার করেন ৩৮ বলে ৩৮ রান। এরপর হাইনরিখ ক্লাসেনের ১৯ বলে ২৭ ও এইডেন মারক্রামের ৩৩ বলে ৪৯ রানের ইনিংস এগিয়ে নেয় প্রোটিয়াদের।

শেষ ৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা দরকার ছিল ৫৯ রান। মার্কো ইয়ানসেনের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেন মিলার। ৩৩ বলে ফিফটির পর একবার তিনি জীবন পান মইন ক্যাচ নিতে না পারায়। শেষ ওভারে ২ রানের সমীকরণে ক্রিস ওকসকে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের ইতি টেনে দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।   

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডের শুরুটা ভালো ছিল না। ৭ ওভারের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও দাভিদ মালান।  তিনে নামা বেন ডাকেটও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। সপ্তদশ ওভারে ৮২ রানে ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা।

রানের গতিতে দম দেন এরপর ব্রুক ও বাটলার। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুই জনে যোগ করেন ৭৩ রান। অভিষেকে শূন্য রানের পর এবার ৭৫ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৮০ রান করেন ব্রুক। 

বাটলার ও মইন উপহার দেন ইনিংস সেরা ১০১ রানের জুটি। এই সংস্করণে সাড়ে পাঁচ বছর আর ৪৫ ইনিংস পর ফিফটির স্বাদ পাওয়ার পরপরই থামেন মইন। ৪৫ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় গড়া তার ৫১ রানের ইনিংস।

শেষ দিকে ঝড় বইয়ে দেন বাটলার ও কারান। শেষ ৪ ওভারে আসে ৬০ রান। এতে সফরকারীরা বড় পুঁজি গড়তে পারলেও দিন শেষে তা যথেষ্ট হলো না।

কিম্বার্লিতে আগামী বুধবার শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৪২/৭ (রয় ৯, মালান ১২, ডাকেট ২০, ব্রুক ৮০, বাটলার ৯৪*, মইন ৫১, ওকস ১৪, কারান ২৮, রশিদ ০*; পার্নেল ১০-১-৫৪-১, এনগিডি ৯-০-৬৬-১, ইয়ানসেন ১০-০-৬৬-১, নরকিয়া ৯-১-৬৪-২, মহারাজ ৯-১-৬৪-১, মারক্রাম ৪-০-২৬-১)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৯.১ ওভারে ৩৪৭/৫ (ডি কক ৩১, বাভুমা ১০৯, ফন ডাসেন ৩৮, মারক্রাম ৪৯, ক্লাসেন ২৭, মিলার ৫৮*, ইয়ানসেন ৩২*; ওকস ৬.১-০-৬০-০, টপলি ৯-০-৭৪-০, মইন ৪-০-৩২-০, স্টোন ১০-১-৪৮-২, কারান ১০-১-৬০-১, রশিদ ১০-০-৭২-২)

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: টেম্বা বাভুমা

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০তে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা