রেকর্ড গড়ে লিটন বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা পারলে আমরাও পারব’

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার পর আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্ব রেকর্ডের কথা বলেছিলেন লিটন দাস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2023, 02:43 PM
Updated : 27 March 2023, 02:43 PM

ইনিংসের চতুর্থ বলে ছক্কা দিয়ে শুরু। পরের ওভারে ছয়ের সঙ্গে এলো চার। এরপর আর থামাথামি নেই। প্রতি ওভারেই এলো বাউন্ডারি। চট্টগ্রামের মেঘলা আবহাওয়ায় চার-ছয়ের বৃষ্টি নামিয়ে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রেকর্ড গড়লেন লিটন দাস ও রনি তালুকদার। দুই ওপেনারের খ্যাপাটে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে শুরু হয় আগের রাতের দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের আলোচনা। 

সেঞ্চুরিয়নে রোববার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২৫৮ রানের জবাবে পাওয়ার প্লেতে ১০২ রান করে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দুই দেশের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে যা রেকর্ড। সোমবার বাংলাদেশ সেটির কাছে যেতে না পারলেও গড়েছে পাওয়ার প্লেতে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।  

লিটন ও রনির ঝড়ে ছয় ওভারে ৭ চার ও ৫ ছয়ে ৮১ রান করে বাংলাদেশ। দুই ওপেনারের ব্যাটিংয়ের সময় ড্রেসিং রুমে ফিরে ফিরে আসে দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিকসের ব্যাটিং তাণ্ডব।  

ভেতরের সেই আলোচনা ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্য করেন তাসকিন আহমেদ।

“(শুরুতে লিটন-রনির ব্যাটিং) খুবই ভালো লাগছিল। গতকালকে দক্ষিণ আফ্রিকার খেলায় ৬ ওভারে ১০০ রান (১০২ রান) দেখেছি। তো আমরা ভাবছিলাম ওরকম কিছু হতে যাচ্ছে নাকি!” 

অষ্টম ওভারে ক্রেইগ ইয়াংয়ের স্লোয়ারে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন। ৪ চার ও ৩ ছয়ে ২৩ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে ড্রেসিং রুমে ফেরার পর তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের কথা মনে করিয়ে দেন তাসকিন। 

“লিটন আউট হয়ে আসার পর আমি বললাম, ‘কিরে তুই কি কালকের ম্যাচ দেখে ওরকম পিটাচ্ছিলি(হাসি)?’ তখন (লিটন) বলে, ‘হ্যাঁ! ওরা পারলে আমরাও পারব।” 

“এটা খুব ইতিবাচক বিষয় এবং আমরাও খুব উপভোগ করছিলাম। এরকম ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে থাকলে অনেক ভালো কিছু হবে।” 

লিটন অল্পের জন্য ফিফটি করতে না পারলেও স্রেফ ২৪ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেন রনি। ৩৮ বলে ৬৭ রানের ইনিংসের সৌজন্যে তিনিই পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

ম্যাচের আগের দিনই দুই দলের কোচ বলেছিলেন, উইকেট দেখে ব্যাটিং বান্ধব মনে হয়েছে তাদের। ম্যাচেও দেখা গেছে তা-ই। শুরু থেকেই দারুণভাবে ব্যাটে এসেছে বল। অসম গতি বা বাউন্স নিয়ে তেমন চিন্তা করতে হয়নি ব্যাটসম্যানদের। পরে বৃষ্টি নামার পর ব্যাটিংয়ের জন্য আরও সহায়ক হয় কন্ডিশন। যা দেখা যায় আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময়।  

শুধু এই ম্যাচই নয়, সিলেটে ওয়ানডে সিরিজেও তুলনামূলক স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হয়েছে। এসব উইকেট-কন্ডিশনে ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা সহজ হলেও, চ্যালেঞ্জ বেড়ে যায় বোলারদের। 

তবে এটি নিয়ে চিন্তিত নন তাসকিন। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ১৬ রানে ৪ উইকেট নেওয়া পেসার বলেন, ভালো উইকেটেই বেশি ম্যাচ খেলতে চান তারা। 

“বড় ইভেন্টগুলো স্পোর্টিং কন্ডিশনেই হয়। যত বেশি ভালো উইকেটে খেলা হবে, ঘরোয়া থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক, আমাদের জন্যই ভালো। কারণ স্পোর্টিং কন্ডিশনে ব্যাটসম্যান-বোলার দুজনেরই একটু সুযোগ থাকে। যত বেশি ভালো কন্ডিশনে খেলব, তত কিন্তু বোলারদেরও চ্যালেঞ্জ বেশি, ব্যাটিংবান্ধব উইকেট থাকলে। আমাদেরও উন্নতির জায়গাটা ভালো থাকে। এ রকম ভালো উইকেটে যখন ভালো করতে পারব, আত্মবিশ্বাসটা বেশি থাকবে।” 

“আল্লাহর রহমতে শেষ দুটা সিরিজ খুব একটা খারাপ উইকেট ছিল না। যথেষ্ট ভালো উইকেট ছিল, আমরা তুলনামূলক ভালো ক্রিকেট খেলেই জিতেছে। হয়তো অনেকে চিন্তা করতে পারে, মিরপুর দেখেই জিতেছি বা হোম কন্ডিশন দেখে জিতেছি, কিন্তু সেটা না। আমরা কিন্তু ভালো উইকেটে খেলেই জিতেছি। এটা একটা বাড়তি প্রেরণা এবং চাইব এমন ভালো উইকেটেই খেলা হোক।”