ভারতের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের ২ ওভারের আক্ষেপ

আর দুই ওভার খেলা হলেই জিততে পারত নিউ জিল্যান্ড, কিন্তু তা হতে পারল না বৃষ্টির কারণে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2022, 11:47 AM
Updated : 30 Nov 2022, 11:47 AM

ভারতকে অল্পতে গুটিয়ে রান তাড়ায় দারুণ শুরু করেছিল নিউ জিল্যান্ড। জয় মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু বাধ সাধল প্রকৃতি। ফল পেতে প্রয়োজন ন্যূনতম ২০ ওভার ব্যাটিং। কিন্তু ১৮ ওভার শেষে এমন বৃষ্টি নামল, আর খেলাই শুরু হলো না। সম্ভাব্য জয় ফসকে গেল কেন উইলিয়ামসনের দলের।

ক্রাইস্টচার্চে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে বৃষ্টির বাগড়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করে ভারত ও নিউ জিল্যান্ড। আগের ম্যাচেও কোনো ফল আসেনি। তবে প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজের ট্রফি ঘরেই রেখেছে কিউইরা।

হ্যাগলি ওভালে সবুজ ঘাসের উইকেটে ভারতকে ২১৯ রানে গুটিয়ে নিউ জিল্যান্ড ১৮ ওভারে তোলে ১ উইকেটে ১০৪ রান। এরপর আর ম্যাচ এগোতে দেয়নি বৃষ্টি।

নিয়ম অনুযায়ী ডিএলএস পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য দুই দলকে খেলতে হবে কমপক্ষে ২০ ওভার করে। ডিএলএস পদ্ধতিতে ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে স্রেফ ৫৪ রান করলেই হতো নিউ জিল্যান্ডের।

প্রথম ওয়ানডেতে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১৪৫ রানের ইনিংস খেলা টম ল্যাথাম জিতেছেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। পরের দুই ম্যাচে আর ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পাননি বাঁহাতি এ কিপার-ব্যাটসম্যান।

বৃষ্টির শঙ্কা মাথায় রেখে শেষ ম্যাচটিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান উইলিয়ামসন। শুরুর আগে এক পশলা বৃষ্টিতে বেশ কিছুক্ষণ পরে মাঠে গড়ায় খেলা।

 ভারতের দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও শুবমান গিল শুরুটা খারাপ করেননি। ধাওয়ান ছিলেন সাবলীল, রয়েসয়ে শুরু করেন গিল। প্রথম রান নিতে ১২ বল খেলেন ডানহাতি এ ওপেনার। অ্যাডাম মিল্নের করা ইনিংসের নবম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি মেরে হাত খোলার আভাস দেন গিল।

সে ওভারে পরের বলেই তাকে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান কিউই ফাস্ট বোলার (১৩)। দলীয় সংগ্রহ ৫০ পেরোনোর পর মিল্নের দ্বিতীয় শিকার হন ধাওয়ান। ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৮ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর একপ্রান্ত আগলে রাখার দায়িত্ব সামলান শ্রেয়াস আইয়ার। তবে অপরপ্রান্তে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি রিশাভ পান্ত ও সূর্যকুমার যাদব। বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঝড়ের আভাস দেওয়া সূর্যকুমার এবার স্রেফ ৬ রান করেন।

২৬তম ওভারে ডিপ পয়েন্ট থেকে দৌড়ে প্রায় ৩০ গজের বৃত্তের কাছাকাছি এসে দুর্দান্ত ক্যাচে শ্রেয়াসের বিদায়ঘণ্টা বাজান ডেভন কনওয়ে। ১ রানের জন্য ফিফটি করতে পারেননি শ্রেয়াস। তার ৫৯ বলের ইনিংসে ছিল ৮টি চার।

১২১ রানে ওপরের সারির ৫ ব্যাটসম্যানের বিদায়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। ইনিংসের বাকি অংশের দায়িত্ব নেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর। ড্যারেল মিচেলের মিডিয়াম পেসে আরেক প্রান্তে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি দীপক চাহার, যুজবেন্দ্র চেহেলরা।

তবে লড়াই করে ফিফটি তুলে নেন ওয়াশিংটন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করতে ৬২ বল খেলেন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। তার সৌজন্যেই দুইশ পেরোয় ভারতের স্কোর। ৫ চার ও ২ ছয়ে ১ ছয়ে ৫১ রান করে টিম সাউদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

নিউ জিল্যান্ডের পক্ষে ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন মিল্ন ও মিচেল। এছাড়া সাউদির ঝুলিতে ২ উইকেট।

রান তাড়ায় শুরুতে খানিকটা সময় নেন ফিন অ্যালেন ও কনওয়ে। প্রথম তিন ওভারে আসে ৪ রান। চতুর্থ ওভারে আর্শদিপ সিংয়ের বলে প্রথম বাউন্ডারি মারেন অ্যালেন। এরপর স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান তিনি। প্রতি ওভারেই আসতে থাকে বাউন্ডারি।

চাহারের করা দশম ওভারে ৪টি চার মেরে রান রেট বাড়ান কনওয়ে। ১৬তম ওভারে ওয়াশিংটনের বলে ছক্কা মেরে পঞ্চাশে পৌঁছান অ্যালেন। পরের ওভারেই তাকে আউট করেন উমরান মালিক। ৮ চার ও ১ ছয়ে ৫৭ রান করে ফেরেন ডানহাতি এ ওপেনার। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।

এক ওভার পর নামে বৃষ্টি। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পরও তা থামার সম্ভাবনা না দেখায় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কনওয়ে ৬ চারে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।

বিশ্বকাপ সুপার লিগের এই সিরিজ থেকে এক জয় ও দুই পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে ২০ পয়েন্ট পেয়েছে স্বাগতিকরা। ভারত পেয়েছে ১০ পয়েন্ট। দুই দলের ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে আগেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৪৭.৩ ওভারে ২১৯ (ধাওয়ান ২৮, গিল ১৩, শ্রেয়াস ৪৯, পান্ত ১০, সূর্যকুমার ৬, হুডা ১২, ওয়াশিংটন ৫১, চাহার ১২, চেহেল ৮, আর্শদিপ ৯, উমরান ০*; সাউদি ৮.৩-১-৩৬-২, হেনরি ১০-২-২৯-০, মিল্ন ১০-০-৫৭-৩, ফার্গুসন ১০-০-৪৯-১, মিচেল ৭-০-২৫-৩, স্যান্টনার ২-০-১৫-১)

নিউ জিল্যান্ড: ১৮ ওভারে ১০৪/১ (অ্যালেন ৫৭, কনওয়ে ৩৮*, উইলিয়ামসন ০*; চাহার ৫-০-৩০-০, আর্শদিপ ৫-১-২১-০, ওয়াশিংটন ৩-০-১৬-০)

ফল: ম্যাচ পরিত্যক্ত।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দা সিরিজ: টম ল্যাথাম।