বিশ্বকাপে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
Published : 06 Nov 2023, 12:57 PM
একের পর এক বাজে পারফরম্যান্সে বড় স্বপ্নের জলাঞ্জলি হয়েছে আগেই। তবু রয়ে গেছে প্রাপ্তির সুযোগ। বিশ্বকাপে বাকি থাকা দুই ম্যাচে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করার অভিযানে নামছে বাংলাদেশ।
দিল্লির আরুন জেটলি স্টেডিয়ামে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে সাকিব আল হাসানের দল। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে খেলা।
এই ম্যাচে দুই দলের জন্যই বড় মাথাব্যথার কারণ হতে পারে গত কয়েক দিন ধরে চলা দিল্লির মাত্রাতিরিক্ত বায়ু দূষণ। ম্যাচের দিন দুপুরেও দিল্লির বাতাসের মান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) চারশর বেশি। যা ভয়ঙ্কর হিসেবে বিবেচিত হয়।
এর মাঝেই টানা ছয় ম্যাচ হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর অভিযানে নামবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কা সাত ম্যাচে জিতেছে স্রেফ দুটি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকেট নিশ্চিত করতে তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচ।
প্রতিপক্ষের ১১ ক্রিকেটারের পাশাপাশি দিল্লির দূষিত পরিবেশের চ্যালেঞ্জও জয় করতে হবে দুই দলকে। চলতি মাসের শুরু থেকে ভারতের রাজধানী শহরটির বাতাসের মান (একিউআই- এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) চারশর বেশি। কখনও সেটি পাঁচশ ছাড়িয়েছে। যা ভয়ঙ্কর হিসেবে বিবেচিত হয়।
আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী, ম্যাচের ভেন্যুতে একিউআই ২০০'র মধ্যে থাকলে সেটি খেলার জন্য নিরাপদ। এর বাইরে গেলে তা স্বাস্থ্যঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। তাই দিল্লিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ বাতিল হওয়ার শঙ্কার কথাও শোনা গেছে অনেক।
আপাতত তেমন কিছু হচ্ছে না। যথাসময়েই শুরুর কথা রয়েছে ম্যাচ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সার্বক্ষণিকভাবে আরুন জেটলি স্টেডিয়ামের বাতাসের মান পর্যবেক্ষণে রাখছে। যা আইসিসি ও দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডকেও জানানো হচ্ছে।
ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, দুই দলের ওপরই প্রভাব ফেলছে দিল্লির বায়ু দূষণ। তবে আর কোনো উপায় না থাকায়, সামনে যা আছে তা নিয়েই খেলতে হবে তাদের।
মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে ম্যাচের আগে দুই দলই এক দিন করে নিজেদের অনুশীলন বাতিল করেছে। হাঁপানিজনিত সমস্যা থাকার কারণে রোববার বাংলাদেশ স্কোয়াডের ৭ ক্রিকেটার অনুশীলন করতে পারেননি। স্রেফ ৮ জন নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরেছে তারা।
বিশ্বকাপে আরও একবার টস জিতলেন সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
দিল্লির মাঠে সন্ধ্যার পরে শিশিরের কথা মাথায় রেখে পরে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সাকিব।
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুসাল মেন্ডিস বলেছেন, আগে ব্যাটিং করা নিয়ে সমস্যা নেই তাদের। তিনশর বেশি রান করার লক্ষ্য তার দলের।
সাত ম্যাচ বেঞ্চে বসে থাকার পর বিশ্বকাপে মাঠে নামার সুযোগ পেলেন তানজিম হাসান। টসের সময় সাকিব আল হাসান জানালেন, খেলার জন্য ফিট নন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারের জায়গায়ই এলেন তানজিম।
বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন এই একটিই। সাকিবের সঙ্গে স্পিন বিভাগে থাকছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পেস বিভাগে তানজিমের সঙ্গী তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম। দলের প্রয়োজনে হাত ঘোরাতে দেখা যেতে পারে মাহমুদউল্লাহকে।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।
ভারতের বিপক্ষে বড় পরাজয়ের ম্যাচ থেকে একাদশে দুটি পরিবর্তন করেছে শ্রীলঙ্কা। দলে ফিরেছেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা, কুসাল পেরেরা। বাদ দেওয়া হয়েছে দিমুথ কারুনারাত্নে, দুশান হেমান্থকে।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিসানকা, কুসাল পেরেরা, কুসাল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাউইক্রামা, চারিথ আসালাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা, মাহিশ থিকশানা, কাসুন রাজিথা, দুশমন্থ চামিরা, দিলশান মাদুশাঙ্কা।
শরিফুল ইসলামের অফ স্টাম্পের বাইরের বল দূর থেকেই ড্রাইভ করতে চাইলেন কুসাল পেরেরা। ব্যাটের বাইরের বানায় লেগে বল চলে গেল প্রথম স্লিপের দিকে। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে উড়ন্ত অবস্থায় এক হাতে দুর্দান্ত ক্যাচ নিলেন মুশফিকুর রহিম।
প্রথম ওভারেই সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে একটি বাউন্ডারি মেরেছেন পেরেরা। পাথুম নিসানকার সঙ্গে জুটি বাধতে তিন নম্বরে নেমেছেন অধিনায়ক কুসাল মেন্ডিস।
২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৬ রান।
আক্রমণে এসেই সাফল্য পেলেন সাকিব আল হাসান। দারুণ এক ডেলিভারিতে ফিরিয়ে দিলেন হাত খোলার আভাস দেওয়া কুসাল মেন্ডিসকে।
বাঁহাতি স্পিনারকে লং অন দিয়ে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক। তাকে এগোতে দেখে বলের গতি কমিয়ে দেন সাকিব। তাই বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় টাইমিং করতে পারেননি মেন্ডিস। সীমানায় স্লাইড করে চমৎকার ক্যাচ নেন শরিফুল ইসলাম। ভাঙে ৬৩ বল স্থায়ী ৬১ রানের জুটি।
৩০ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে মেন্ডিস করেন ১৯ রান।
১২ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেটে ৬৯। ক্রিজে পাথুম নিসানকার সঙ্গী সাদিরা সামারাউইক্রামা।
দারুণ খেলতে থাকা পাথুম নিসানকাকে থামালেন তানজিম হাসান। অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথ ডেলিভারি আড়াআড়ি ব্যাটে খেলেন নিসানকা। নিচের কানায় লেগে বল আঘাত করে স্টাম্পে।
৮ চারে ৩৬ বলে ৪১ রান করেছেন নিসানকা। সাদিরা সামারাউইক্রামার সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে জুটি বাধতে নেমেছেন চারিথ আসালাঙ্কা।
১৪ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭৬ রান। সামারাউইক্রামা অপরাজিত ৬ রানে।
পরপর দুই ওভারে দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে হারালেও একই গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। চারিথ আসালাঙ্কা ও সাদিরা সামারাউইক্রামার বাউন্ডারিতে সরে যাচ্ছে সব চাপ।
১৮ ওভারে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেছে শ্রীলঙ্কার রান। তানজিম হাসানের পর সাকিব আল হাসানকে ছক্কা মেরেছেন আসালাঙ্কা। মেহেদেী হাসান মিরাজকে পরপর দুই বলে চার মেরেছেন সামারাউইক্রামা। তার প্রথম চারে পূর্ণ হয়েছে লঙ্কানেদর একশ।
১৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ১০৫। ১৯ বলে দুই ছক্কায় ১৯ রানে খেলছেন আসালাঙ্কা। ১৮ বলে দুই চারে ১৯ রানে ব্যাট করছেন সামারাউইক্রামা।
এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তবে তাতে মেলেনি সাফল্য।
মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিন ব্যাটে খেলতে পারেননি সাদিরা সামারাউইক্রামা। তবে বাংলাদেশের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন সাকিব।
দারুণ টার্ন পাওয়ায় বল স্পিন করে বেরিয়ে যেত লেগ স্টাম্প ঘেঁষে! নষ্ট হয় বাংলাদেশের একটি রিভিউ।
২০ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ১১৩।
দ্রুত দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে হারানোর ধাক্কা সামাল দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ উইকেটে ৫৩ বলে পঞ্চাশ রানের জুটি উপহার দিয়েছেন চারিথ আসালাঙ্কা ও সাদিরা সামারাউইক্রামা।
২২ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৩ উইকেটে ১২৫। ২৯ বলে ২৫ রানে খেলছেন আসালাঙ্কা। ৩২ বলে সামারাউইক্রামার রান ৩৩।
নতুন ওভারের প্রথম বলে সুইপ করে সাকিব আল হাসানকে চার মারেন সাদিরা সামারাউইক্রামা। বেশ কিছুক্ষণ হাওয়ায় ভেসে ছিল বল। তবুও ডিপ স্কয়ার লেগের ফিল্ডারকে চাপিয়ে দেননি অধিনায়ক। পরের বলেই পেয়ে যান সুফল। ছক্কার চেষ্টায় সেখানেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সামারাউইক্রামা!
বেরিয়ে এসে বাঁহাতি স্পিনারকে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন সামারাউইক্রামা। কিন্তু ঠিক মতো খেলতে পারেননি ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। ভাঙে ৬৯ বল স্থায়ী ৬৩ রানের জুটি।
৪২ বলে চারটি চারে ৪১ রান করেন সামারাউইক্রামা।
২৪.২ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১৩৫।
সাদিরা সামারাউইক্রামা আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু কোনো বল না খেলেই ফিরে যেতে হল তাকে! সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার রাসেল আর্নল্ড জানালেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইম আউট হওয়া প্রথম ব্যাটসম্যান ম্যাথিউস।
বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী নতুন ব্যাটসম্যান প্রথম বলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য দুই মিনিট সময় পান। সেই সময়ের মধ্যে প্রস্তুত হতে পারেননি ম্যাথিউস। হেলমেট ঠিক নেই, দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি। তার কথায় সাড়া দেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। নিয়ম অনুযায়ী ম্যাথিউসকে টাইমড আউট দেন আম্পায়ার।
২৫ ওভারে ৫ উইকেটে শ্রীলঙ্কার রান ৫ উইকেটে ১৩৭। ক্রিজে চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গী ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাচলেন চারিথ আসালাঙ্কা। বল লেগেছিল তার গ্লাভসে!
সে সময় ৪০ রানে ছিলেন আসালাঙ্কা।
চাপের মুখেও সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছেন চারিথ আসালাঙ্কা। পাল্টা আক্রমণে বাড়িয়ে নিচ্ছেন শ্রীলঙ্কার রান। তানজিম হাসানকে চার মেরে বাঁহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান স্পর্শ করেছেন ফিফটি, ৫৬ বলে।
৩১ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৫ উইকেটে ১৬৯। ৫৭ বলে তিন ছক্কা ও দুই চারে ৫২ রানে ব্যাট করছেন আসালাঙ্কা। ১৬ বলে ৯ রানে ব্যাট করছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের টাইমড আউটের ধাক্কা সামলে দারুণভাবে এগোচ্ছেন চারিথ আসালাঙ্কা, ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছেন দুই মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান। ৩৭ ওভারে দুইশ পূর্ণ করেছে শ্রীলঙ্কা।
১৮ ওভারে একশ ছোঁয়ার পর আরও একশ তারা করল ১৯ ওভারে। ৩৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০৮ রান।
ষষ্ঠ উইকেটে আসালাঙ্কা, ধানাঞ্জয়া মিলে যোগ করেছেন ৭৬ বলে ৭৩ রান। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত আসালাঙ্কা। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ বলে ৩০ রান নিয়ে খেলছেন ধানাঞ্জয়া।
বিপজ্জনক হওয়ার আভাস দেওয়া জুটি ভাঙলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৮তম ওভারের শেষ বলে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ক্রিজ ছেড়ে বের হতে দেখে লেংথ খানিকটা টেনে টেন মিরাজ। অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি ধানাঞ্জয়া।
ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে। শুরুতে ধরতে না পারলেও দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় বল ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন মুশফিকুর রহিম। বিদায়ঘণ্টা বাজে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ বলে ৩৪ রান করা ধানাঞ্জয়ার।
তার বিদায়ে ভেঙেছে ৭৮ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। পঞ্চাশ পেরিয়ে খেলতে থাকা চারিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে জুটি বাধতে ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান মাহিশ থিকশানা।
৩৯ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২১৬ রান।
দ্রুত এগোনো জুটি ভাঙলেন শরিফুল ইসলাম। তার শর্ট বলে থার্ড ম্যানে ধরা পড়লেন মাহিশ থিকশানা।
র্যাম্প শটের মতো করে ফিল্ডারের উপর দিয়ে পাঠাতে চেয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু যতটা চেয়েছিলেন ততটা দূরে নিতে পারেননি। সহজ ক্যাচ নেন বদলি ফিল্ডার নাসুম আহমেদ। ভাঙে ৪৮ বল স্থায়ী ৪৫ রানের জুটি।
৩১ বলে তিন চারে থিকশানা করেন ২২ রান।
৪৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৭ উইকেটে ২৫৮। ৯১ রানে খেলছেন চারিথ আসালাঙ্কা। ক্রিজে তার সঙ্গী দুশমন্থ চামিরা।
এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে টানছেন চারিথ আসালাঙ্কা। দলকে তিনশ রানের কাছাকাছি নেওয়ার পথে ছুঁয়েছেন সেঞ্চুরি।
১০১ বলে ছয় চার ও চার ছক্কায় শতরান স্পর্শ করেন আসালাঙ্কা। ওয়ানডেতে বাঁহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করা ১১০ তার সর্বোচ্চ।
৪৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৭ উইকেটে ২৭০।
সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর বেশি দূর যেতে পারলেন না চারিথ আসালাঙ্কা। তানজিম হাসানকে ছক্কা মেরে পরের বলে ফিরে গেলেন পুনরাবৃত্তির আশায়।
শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ কাভারে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন আসালাঙ্কা। ১০৫ বলে পাঁচ ছক্কা ও ছয় চারে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান করেন ১০৮ রান।
এক বল আরেকটি উইকেট নেন তানজিম। তার শর্ট বলে রাজিথার পুল পেরিয়ে যাচ্ছিল সীমানা। কিছুটা সরে গিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন লিটন। ভারসাম্য কিছুটা হারালেও বল ছাড়েনি।
২ বল খেলেও রান করতে পারেননি রাজিথা।
পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারল না শ্রীলঙ্কা। ঝুঁকিপূর্ণ রানের চেষ্টায় রান আউট হয়ে গেলেন দুশমন্থ চামিরা। ২৭৯ রানে গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কার ইনিংস।
শরিফুল ইসলামের শর্ট বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি দিলশান মাদুশাঙ্কা। বল যায় যায় লেগ সাইডে। রানের জন্য ছুটেন দুই ব্যাটসম্যান। তবে দারুণ তৎপরতা দেখান মুশফিকুর রহিম। ছুটে গিয়ে সরাসরি থ্রোয়ে এলোমেলো করে দেন স্টাম্প।
৯ বলে ৪ রান করেন চামিরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.৩ ওভারে ২৭৯ (নিসানকা ৪১, পেরেরা ৪, মেন্ডিস ১৯, সামারাউইক্রামা ৪১, আসালাঙ্কা ১০৮, ম্যাথিউস ০, ডি সিলভা ৩৪, থিকশানা ২২, চামিরা ৪, রাজিথা ০, মাদুশাঙ্কা ০*; শরিফুল ৯.৩-০-৫২-২, তাসকিন ১০-১-৩৯-০, তানজিম ১০-০-৮০-৩, সাকিব ১০-০-৫৭-২, মিরাজ ১০-০-৪৯-১)
প্রথম ওভারে জোড়া বাউন্ডারিতে ইতিবাচক শুরুর ইঙ্গিত দেন তানজিদ হাসান। কিন্তু সেটি ধরে রাখতে পারলেন না তরুণ ওপেনার। এক ওভার পরই তিনি ধরলেন ড্রেসিং রুমের পথ।
দিলশান মাদুশাঙ্কার করা প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে দুটি চার মারেন তানজিদ। পরের ওভারের প্রথম বল অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে করেন মাদুশঙ্কা। দূর থেকে খেলার চেষ্টায় হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন তানজিদ।
কভারে সহজ ক্যাচ নেন পাথুম নিসানকা। ২ চারে ৫ বলে ৯ রান করেন তানজিদ।
লিটন দাসের সঙ্গী হতে তিন নম্বরে নেমেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
তানজিদ হাসানের পর লিটন দাসকেও আউটের সম্ভাবনা জাগালেন দিলশান মাদুশঙ্কা। ডিপ ফাইন লেগে কুসাল পেরেরার আয়েশি ফিল্ডিংয়ে ৬ রানের মাথায় বেঁচে গেলেন বাংলাদেশের ওপেনার।
মাদুশঙ্কার লেগ স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি আলতোভাবে পুল করেন লিটন। ক্যাচ উঠে যায় ডিপ ফাইন লেগে। কিন্তু পেরেরা খুবই ধীরগতিতে এগোন তা হাতে নিতে। শেষ পর্যন্ত তার হাতের ফাঁক গলে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে।
৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৩ রান। লিটন অপরাজিত ১০ রানে। নাজমুল হোসেন শান্ত খেলছেন ১ রানে।
জীবন পেয়ে বেশি দূর যেতে পারলেন না লিটন দাস। দিলশান মাদুশঙ্কার নিখুঁত এক ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ হলেন তিনি। বল তার বুটে আঘাত করলে আউটের সিদ্ধান্ত জানাতে দেরি করেননি আম্পায়ার। নিশ্চিত আউট বুঝে রিভিউ নেননি লিটন।
আউট হওয়ার আগের ওভারে কাসুন রাজিথাকে পরপর দুই বলে ছক্কা মারেন লিটন। সেই ছন্দ টেনে নিতে পারলেন না তিনি। দুটি করে চার-ছক্কায় ২২ বলে ২৩ রান করে তিনি ফিরলেন ড্রেসিং রুমে।
৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৩ রান। ক্রিজে দুই ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান।
দুই ওপেনারের উইকেট হারালেও প্রথম পাওয়ার প্লেতে রানের চাকা সচল রেখেছে বাংলাদেশ। ১০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দুই উইকেটে ৫৭ রান। বাকি ৪০ ওভারে প্রয়োজন আরও ২২৩ রান।
রান তাড়া করতে নেমে দিলশান মাদুশঙ্কার করা প্রথম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি মারেন তানজিদ হাসান। মাদুশঙ্কার পরের ওভারের প্রথম বলে অনেক দূর থেকে বাজে শট খেলে ক্যাচ আউট হন ৯ রান করা বাঁহাতি ওপেনার।
পরে কাসুন রাজিথার ওভারে পরপর দুই বলে ছক্কা মারেন লিটন দাস। তাকে থামান মাদুশঙ্কা। নিখুঁত ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ হন দুটি করে চার-ছক্কায় ২৩ রান করা লিটন।শুরুর এই চাপ সামাল দেওয়ার অভিযানে লড়ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান। ছয় ম্যাচ পর দুই অঙ্ক ছুঁয়ে ১৪ রানে খেলছেন শান্ত। সাকিব ৭ রানে অপরাজিত।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের খানিক টেনে দেওয়া ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে কাভার দিয়ে মারতে চাইলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু টাইমিংয়ের গড়বড়ে ক্যাচের মতো ওঠে শর্ট কাভারে। তবে বল হাতে রাখতে পারেননি চারিথ আসালাঙ্কা।
ফলে ৭ রানে বেঁচে যান সাকিব।
১১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৬১ রান। নাজমুল হোসেন শান্ত ২৪ বলে ১৭, সাকিব ১৫ বলে ৮ রানে অপরাজিত।
লিটন দাসের বিদায়ের পর থেকে দলকে টানছেন সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়বক ও সহ-অধিনায়কের জুটি পঞ্চাশ ছুঁয়েছে ৬১ বলে।
টুর্নামেন্টে নিজেদের খুঁজে ফেরা দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পেয়েছেন ভালো শুরু। হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে তাদের দিকেই তাকিয়ে দল।
১৭ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৯৭। ৪৫ বলে চারটি চারে ৩০ রানে ব্যাট করছেন শান্ত। ৩০ বলে এক ছক্কা ও চারটি চারে সাকিবের রান ২৮।
দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কা সামলে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান। দুজনের জুটিতে অষ্টাদশ ওভারে শতরান পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ।
১৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১০৮ রান। জয়ের জন্য ৩২ ওভারে প্রয়োজন ১৭২ রান।
এরই মধ্যে শান্ত, সাকিবের তৃতীয় উইকেট জুটিতে এসেছে ৭০ বলে ৬৭ রান। ছয় ম্যাচ পর দুই অঙ্ক ছুঁয়ে ৫০ বলে ৪০ রানে অপরাজিত শান্ত। সাকিব খেলছেন ৩১ বলে ২৯ রানে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে বিশ্বকাপ শুরু করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর টানা ছয় ইনিংস দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
অবশেষে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফের রানের দেখা পেলেন শান্ত। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে হাজার রান পূর্ণ করা ইনিংসে তিনি করলেন সপ্তম ফিফটি। ৫৯ বলে ৮ চারে এই মাইলফলকে পা রাখেন ২৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
২১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৩৩ রান। ৬১ বলে ৫৬ রানে খেলছেন শান্ত। সাকিব আল হাসান ৩৭ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম শতরানের জুটি গড়লেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান। ৪১ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর পর এই মাইলফলক ছুঁতে দুজন খেললেন স্রেফ ৯৫ বল।
শান্ত, সাকিবের জুটিতে ওভারপ্রতি রানের চাহিদা পাঁচের নিচে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। ২৩ ওভারে তারা করেছে ২ উইকেটে ১৪৭ রান। জয়ের জন্য বাকি ২৭ ওভারে প্রয়োজন আর ১৩৩ রান।
৬৪ রানে খেলছেন শান্ত। পঞ্চাশের দুয়ারে দাঁড়ানো সাকিব অপরাজিত ৪৪ রানে।
চলতি আসরে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল ৯৭ রানের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটেই সেটি করেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ।
আগের সাত ম্যাচ দুবার চল্লিশ ছুলেও ফিফটি করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পেলেন চলতি আসরে প্রথম পঞ্চাশের দেখা। সাবলীল ব্যাটিংয়ে স্রেফ ৪৭ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় স্পর্শ করলেন এই মাইলফলক।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে সাকিবের একাদশ ফিফটি এটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫৬তম। এর সঙ্গে ৯টি সেঞ্চুরি রয়েছে তার।
২৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৬৮ রান। জয়ের জন্য বাকি ২৪ ওভারে প্রয়োজন আর ১১২ রান।
নাজমুল হোসেন শান্ত ৮১ বলে ৭৮ ও সাকিব ৪৮ বলে ৫১ রানে খেলছেন। দুজনের তৃতীয় উইকেট জুটির সংগ্রহ ১১৮ বলে ১২৭ রান।
রান তাড়ায় দারুণ জুটিতে রেকর্ড গড়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান। তৃতীয় উইকেটে এরই মধ্যে দুজন মিলে যোগ করেছেন ১৬৫ রান। একইসঙ্গে পূর্ণ হলো দলের দুইশ রান।
৩০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২০৬ রান। বাকি ২০ ওভারে প্রয়োজন আর ৭৪ রান। স্রেফ ৬০ বলে ৮১ রানে অপরাজিত সাকিব। শান্ত খেলছেন ৯৩ বলে ৮৬ রান নিয়ে।
বিশ্বকাপে তৃতীয় উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। আগের রেকর্ড গত আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাকিব, মুশফিকুর রহিমের ১৪২ রান।
বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের এর চেয়ে বড় জুটি আছে আর একটি। গত আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩১৮ রান তাড়ায় চতুর্থ উইকেটে সাকিব, লিটন দাসের অবিচ্ছিন্ন ১৮৯ রান।
এছাড়া ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে কোনো উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। আগের সর্বোচ্চ ২০১৭ সালে সাকিব, তামিম ইকবালের ১৪৪ রান।
প্রথম ইনিংসে টাইমড আউট ঘিরে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে এক দফা তর্কে জড়ান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। পরে সাকিব ব্যাটিংয়ে নামার পর শুরু থেকেই স্লেজিং করতে থাকেন লঙ্কান অলরাউন্ডার। তার প্রথম ওভারে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান সাকিব।
শেষ পর্যন্ত ম্যাথিউসের বলেই ফিরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৩২তম ওভারে ম্যাথিউসের স্লোয়ার ডেলিভারি অনসাইডে খেলতে গিয়ে সাকিবের ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে। শর্ট মিড অফে সহজ ক্যাচ নেন ৭ রানে তাকে জীবন দেওয়া চারিথ আসালাঙ্কা।
সাকিব ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় তার দিকে তাকিয়ে হাতে সময়ের ইঙ্গিত করে নিজের টাইমড আউটের জবাব দেন ম্যাথিউস।
১২ চার ও ২ ছক্কায় স্রেফ ৬৫ বলে ৮২ রান করেছেন সাকিব। তার বিদায়ের ভেঙেছে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়া ১৬৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি। শান্তর সঙ্গে জুটি গড়তে পাঁচ নম্বরে নেমেছেন মাহমুদউল্লাহ।
পরপর দুই ওভারে দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে আউট করলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। সাকিব আল হাসানের পর ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মারতে গিয়ে ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বোল্ড হয়েছেন শান্ত। ১২ চারে ১০১ বলে তিনি খেলেছেন ৯০ রানের ইনিংস।
বিশ্বকাপে নব্বইয়ের ঘরে আউট হওয়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান তিনি। প্রথমজন তামিম ইকবাল, ২০১৫ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৫ রানে।
সাকিব, শান্তর বিদায়ে ক্রিজে এখন দুই নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম।
৩৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২১৬ রান। বাকি ১৬ ওভারে প্রয়োজন আর ৬৪ রান।
নতুন বলে বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে ফেরানোর পর শেষ দিকে এসেও আঘাত হানলেন দিলশান মাদুশঙ্কা। তার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বোল্ড হলেন মুশফিকুর রহিম।
৩৮তম ওভারের প্রথম দুই বল গতি কিছুটা কমিয়ে করেন মাদুশঙ্কা। তৃতীয় বলে গতি বাড়িয়ে শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি করেন বাঁহাতি পেসার। জায়গায় দাঁড়িয়ে থার্ড ম্যানে খেলতে গিয়ে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি মুশফিক।
১ চারে ১৩ বলে ১০ রান করেছেন মুশফিক। ক্রিজে গিয়ে ওই ওভারের শেষ বলে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মেরেছেন তাওহিদ হৃদয়।
৩৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫৫ রান। জয়ের জন্য ১২ ওভারে প্রয়োজন আর ২৫ রান।
পরপর দুই ওভারে ড্রেসিং রুমে ফিরলেন মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ। শ্রীলঙ্কার স্পিনার মাহিশ থিকশানার ১০৩ কিমি প্রতি ঘণ্টায় করা ইয়র্কার ডেলিভারির জবাব দিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ।
৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ বলে ২২ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয় ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
৩৯ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৫৬ রান। জয়ের জন্য ১১ ওভারে প্রয়োজন ২৪ রান।
জয়ের দুয়ারে দাঁড়িয়ে উইকেট বিলিয়ে এলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মাহিশ থিকশানার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়লেন ৩ রান করা মিরাজ।
তার বিদায়ের পর ক্রিজে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই বোলারের মাথার ওপর দিয়ে বাউন্ডারি মারলেন তানজিম হাসান।
জয়ের জন্য ৫৬ বলে প্রয়োজন আর ৭ রান। হাতে রয়েছে ৩ উইকেট। তাওহিদ হৃদয় ৭ বলে ১৫ রানে অপরাজিত।
রেকর্ড গড়া জুটিতে ভিত গড়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান। আশি ছোঁয়া ইনিংসে খেলে দুজন ফেরার পর কিছুটা শঙ্কা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত ৫৩ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটের জয়ে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশ।
শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজরা দ্রুত ফিরে গেলে খানিক শঙ্কা চেপে বসে বাংলাদেশের। তাওহিদ হৃদয় ৭ বলে ১৫ ও তানজিম হাসান ৬ বলে ৫ রান করে দল জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
দিল্লির আরুন জেটলি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা থামে ২৭৯ রানে। শান্ত ৯০ ও সাকিব ৮২ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ছয় ম্যাচ পর দারুণ এক জয় এনে দিলেন।
বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচবারের দেখায় এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়। চলতি আসরে আট ম্যাচে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জয় এটি। সমান ম্যাচে শ্রীলঙ্কাও জিতেছে দুটি।
স্রেফ ৪১.১ ওভারে ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলে দুই ধাপ এগিয়ে সাতে উঠে গেছে বাংলাদেশ। আট নম্বরে নেমেছে লঙ্কানরা।
২০২৫ সালে পাকিস্তানে হতে যাওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পেতে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত সেরা আটের মধ্যে থাকতে হবে সাকিবের দলকে।
বাংলাদেশের দারুণ জয়ে তৃতীয় উইকেটে ১৬৯ রানের জুটি গড়েছেন শান্ত, সাকিব। বিশ্বকাপে তৃতীয় উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। যে কোনো উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি রয়েছে স্রেফ একটি।
বোলিংয়ে ৮০ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা তানজিম হাসান। সাকিব ও শরিফুল ইসলাম ধরেছেন ২টি করে শিকার।
অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সাকিবের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.৩ ওভারে ২৭৯ (নিসানকা ৪১, পেরেরা ৪, মেন্ডিস ১৯, সামারাউইক্রামা ৪১, আসালাঙ্কা ১০৮, ম্যাথিউস ০, ডি সিলভা ৩৪, থিকশানা ২২, চামিরা ৪, রাজিথা ০, মাদুশাঙ্কা ০*; শরিফুল ৯.৩-০-৫২-২, তাসকিন ১০-১-৩৯-০, তানজিম ১০-০-৮০-৩, সাকিব ১০-০-৫৭-২, মিরাজ ১০-০-৪৯-১)
বাংলাদেশ: ৪১.১ ওভারে ২৮২/৭ (তানজিদ ৯, লিট্ম ২৩, শান্ত ৯০, সাকিব ৮২, মাহমুদউল্লাহ ২২, মুশফিক ১০, হৃদয় ১৫*, মিরাজ ৩, তানজিম ৫*; মাদুশঙ্কা ১০-১-৬৯-৩, থিকশানা ৯-০-৪৪-২, রাজিথা ৪-০-৪৭-০, চামিরা ৮-০-৫৪-০, ম্যাথিউস ৭.১-১-৩৫-২, ধানাঞ্জয়া ৩-০-২০-০)
ফল: বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান
সেমি-ফাইনাল খেলার স্বপ্ন মিইয়ে যাওয়ার পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকেট পাওয়াকে নিজেদের লক্ষ্য হিসেবে ঠিক করেছিল বাংলাদেশ। সেই অভিযানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়া জয়ে পয়েন্ট টেবিলের সাতে উঠে এসেছে সাকিব আল হাসানের দল।
আট ম্যাচে বাংলাদেশের জয় দুটিতে। সমান ম্যাচে শ্রীলঙ্কাও জিতেছে দুটি। এছাড়া নেদারল্যান্ডস সাত ম্যাচে পেয়েছে দুই জয়। তিন দলের মধ্যে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় সাতে রয়েছে বাংলাদেশ।
২০২৫ সালে পাকিস্তানে হতে যাওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পেতে টুর্নামেন্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত সেরা আটের মধ্যে থাকতে হবে তাদের।