নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২১৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শেষ বলে জয়ে চমৎকার এক ফিফটিতে বড় অবদান রেখেছেন অধিনায়ক মিচেল মার্শ।
Published : 21 Feb 2024, 02:54 PM
শেষ ২ ওভারে প্রয়োজন ৩৫ রান। অসম্ভব নয় অবশ্যই, তবে সহজও নয়। ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে অ্যাডাম মিল্নকে এক চার ও দুই ছক্কায় ম্যাচ জমিয়ে দিলেন টিম ডেভিড। শেষ ৬ বলে ১৬ রানের লক্ষ্যে প্রথম তিন বলে অস্ট্রেলিয়া নিতে পারল কেবল চার রান। এরপর ফের দৃশ্যপটে ডেভিড। টিম সাউদিকে ছক্কার পর ডাবল নিয়ে বাঁচিয়ে রাখলেন সফরকারীদের আশা। শেষ বলে চার রানের সমীকরণ মিলিয়ে দলকে দুর্দান্ত এক জয় এনে দিলেন তিনি।
ওয়েলিংটনে বুধবার রোমাঞ্চ-উত্তেজনায় ঠাসা প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নিউ জিল্যান্ডকে হতাশ করে ৬ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিকদের ২১৫ রান তারা পেরিয়ে গেছে ম্যাচের শেষ বলে। এই মাঠে প্রথমবার দুইশ রান তাড়া করে জিতল কোনো দল।
শেষ দিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে বড় অবদান রাখা ডেভিড করেন ৩১ রান। তার ১০ বলের বিস্ফোরক ইনিংসটি সাজানো ৩ ছক্কা ও ২ চারে।
ম্যাচের সেরা অবশ্য মিচেল মার্শ। রান তাড়ায় দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৭ ছক্কা ও ২ চারে ৪৪ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। এর আগে বল হাতে ২১ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
ম্যাচের প্রথমভাগে আলো ছড়ান ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রাভিন্দ্রা। ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৪৬ বলে ৬৩ রান করেন কনওয়েল। প্রথমবার তিনে নামা রাভিন্দ্রার ৩৫ বলে ৬৮ রানের ইনিংস গড়া ৬ ছক্কা ও ২ চারে।
দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরুর আভাস দিয়ে চতুর্থ ওভারে ফিরে যান ট্রাভিস হেড। ১ উইকেটে ৫৬ রান নিয়ে পাওয়ার প্লে শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। পরের ওভারেই বিদায় নেন ডেভিড ওয়ার্নার।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (১০৪) খেলার দিন দুটি করে ছক্কা-চারে ১১ বলে ২৫ রান করেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সতীর্থদের বিদায়ে ভড়কে না গিয়ে দলকে পথে রাখেন মার্শ। জশ ইংলিসের সঙ্গে ৩৮ বলে ৬১ রানের জুটিতে অগ্রণী ছিলেন তিনিই।
২৯ বলে ফিফটি করা মার্শ লড়ে যান শেষ পর্যন্ত। এরপর তো ডেভিড এসে তাণ্ডব চালিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দেন অসাধারণ এক জয়। দুইজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৯ বলে আসে ৪৪ রান।
টি-টোয়েন্টিতে চ্যাপেল-হ্যাডলি ট্রফির পথচলা শুরুর ম্যাচে ফিন অ্যালেন ও কনওয়ের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ড। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ভাঙে তাদের ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি; মিচেল স্টার্কের বলে মিডউইকেটে ধরা পড়েন ৩ ছক্কা ও ২ চারে ৩২ রান করা অ্যালেন।
কয়েক ওভার দেখেশুনে খেলেন রাভিন্দ্রা ও কনওয়ে। টানা চার ওভারে কোনো বাউন্ডারি পায়নি নিউ জিল্যান্ড। দশম ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে কনওয়ের ছক্কায় কাটে সেই খরা। পরের ওভারে অ্যাডাম জ্যাম্পাকে ছক্কা হাঁকান রাভিন্দ্রা।
অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনারের ওপর পঞ্চদশ ওভারে ঝড় বইয়ে দেন রাভিন্দ্রা। তিন ছক্কার সঙ্গে মারেন একটি চার। ওই ওভারেই ২৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তার আগে দ্বাদশ ওভারে ৩৪ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন কনওয়ে।
চমৎকার ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেওয়া এই জুটির রান একশ স্পর্শ করে ৫৮ বলে। পরপর দুই বলে ফিরে যান রাভিন্দ্রা ও কনওয়ে। শেষ হয় ৬৪ বল স্থায়ী ১১৩ রানের জুটির পথচলা। শেষ দিকে ২৩ বলে ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে কিউইদের রান দুইশ পার করেন গ্লেন ফিলিপস ও মার্ক চ্যাপম্যান।
দুই দলের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি আগামী শুক্রবার, অকল্যান্ডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২১৫/৩ (অ্যালেন ৩২, কনওয়ে ৬৩, রাভিন্দ্রা ৬৮, ফিপিলিস ১৯*, চ্যাপম্যান ১৮*; স্টার্ক ৪-০-৩৯-১, হেইজেলউড ৪-০-৩৬-০, ম্যাক্সওয়েল ২-০-৩২-০, কামিন্স ৪-০-৪৩-১, মার্শ ৩-০-২১-১, জ্যাম্পা ৩-০-৪২-০)
অস্ট্রেলিয়া: ২০ ওভারে ২১৬/৪ (হেড ২৪, ওয়ার্নার ৩২, মার্শ ৭২*, ম্যাক্সওয়েল ২৫, ইংলিস ২০, ডেভিড ৩১*; সাউদি ৪-০-৫২-০, মিল্ন ৪-০-৫৩-১, ফার্গুসন ৪-০-২৩-১, স্যান্টনার ৪-০-৪২-১, সোধি ৪-০-৪২-০)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল মার্শ
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া