টানা পাঁচ ম্যাচ হারল গতবারের রানার্স-আপ সিলেট স্ট্রাইকার্স।
Published : 30 Jan 2024, 09:20 PM
শুরুতে ঝড় তুললেন আহমেদ শেহজাদ। শেষে পূর্ণতা দিলেন মাহমুদউল্লাহ। ফরচুন বরিশাল পেল বড় সংগ্রহ। জবাবে জাকির হাসান ছাড়া সিলেট স্ট্রাইকার্সের কেউই পারলেন না তেমন কিছু করতে। তাতে জয়ের সম্ভাবনা জাগানো দূরের কথা, ন্যূনতম লড়াইও করতে পারল না স্বাগতিক দল।
সিলেট আন্তর্জাতি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ৪৯ রানে জিতেছে বরিশাল। ১৮৭ রানের লক্ষ্যে ১৫ বল বাকি থাকতে ১৩৭ রানে গুটিয়ে গেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
টানা তিন হারের পর জয়ের দেখা পেল বরিশাল।
আগের ম্যাচে মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য সমালোচিত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবার খেলেন ২৪ বলে ৫১ রানের টর্নেডো ইনিংস। তার আগে শেহজাদের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৬৬ রান।
পরে বল হাতে ৪ উইকেট নেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইমরান। মেহেদী হাসান মিরাজ ও খালেদ আহমেদ ধরেন ২টি করে শিকার।
জয় দিয়ে আসর শুরু করা বরিশাল পাঁচ ম্যাচে জিতল দুটি। টানা পাঁচ ম্যাচ হারল গতবারের রানার্স-আপ সিলেট।
রান তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে সিলেট। মিরাজের করা তৃতীয় ওভারে কট বিহাইন্ড হন নাজমুল হোসেন শান্ত। নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা ওপেনার ৭ বলে করেন ৯ রান।
এই ম্যাচে প্রথম সুযোগ পাওয়া শামসুর রহমানও পারেননি বড় কিছু করতে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তিনি ফেরেন ২৩ বলে ২৫ রান করে। চার নম্বরে নেমে চমক দেওয়া মাশরাফিও আউট হন দ্রুতই।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে খানিকটা সম্ভাবনা জাগান জাকির ও বেনি হাওয়েল। ৪২ বলে দুজন মিলে যোগ করেন ৫৮ রান। দ্বাদশ ওভারে দুনিথ ওয়েলালাগের বলে পরপর দুটি ছক্কা মারেন সিলেটের ছন্দে থাকা একমাত্র ব্যাটসম্যান জাকির।
খালেদের করা পরের ওভার থেকে আসে ১৫ রান। ওই ওভারে মিরাজকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান ৩৭ রানে খেলতে থাকা জাকির। তবে এর মাশুল বেশি দিতে হয়নি।
ইমরানের স্লোয়ারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে মিরাজের হাতেই ক্যাচ দেন জাকির। ৩৪ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি। পরের ওভারে প্রথম বলেই ১৯ বলে ২৪ রান করা হাওয়েলকে ফেরান মিরাজ।
এরপর আর কেউই পারেননি টিকতে। ২২ বলের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় সিলেট।
ম্যাচের প্রথমভাগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ফেরেন তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় ওভারে নাঈম হাসানের বলে ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউ হওয়া বরিশাল অধিনায়ক ২ রান করতে খেলেন ৮ বল। তিন নম্বরে নেমে ব্যর্থ হন প্রিতম কুমার।
তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৩৫ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন শেহজাদ। ভালো শুরুর পরও বেনি হাওয়েলের বলে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন ১৭ বলে ২০ রান করা সৌম্য।
সৌম্যর বিদায়ের আগে স্রেফ ৩০ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন শেহজাদ। এরপর বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। হাওয়েলের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে থামে তার ৯ চার ও ২ ছক্কার ইনিংস। পরে মুশফিককেও ফেরান হাওয়েল।
এরপর দায়িত্ব নেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ১২ বলে ১৫ রান করা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান স্রেফ ২৩ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। তার ঝড়ে শেষ তিন ওভারে ৫৩ রান করে বরিশাল।
অষ্টাদশ ওভারে রিচার্ড এনগারাভার বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে তিনি মারেন বিশাল ছক্কা। একই ওভারে মারেন আরও দুটি চার। এনগারাভার করা ইনিংসের শেষ ওভারে দুই চারের পর একটি ছক্কা মারেন মাহমুদউল্লাহ। নিজের ইনিংস তিনি সাজান ৭ চার ও ২ ছক্কায়।
স্রেফ ৬ বলে ১৫ রানের ক্যামিও খেলে মিরাজও রাখেন কার্যকর অবদান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৮৬/৫ (তামিম ২, শেহজাদ ৬৬, প্রিতম ১, সৌম্য ২০, মুশফিক ২২, মাহমুদউল্লাহ ৫১*, মিরাজ ১৫*; আরিফুল ১-০-১১-০, নাঈম ৪-০-৩৬-১, সামিত ৪-০-৩৬-০, এনগারাভা ৪-০-৪৯-১, রাজা ৩-০-২১-০, হাওয়েল ৪-০-২১-৩)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৭.৩ ওভারে ১৩৭ (শান্ত ৯, শামসুর ২৫, জাকির ৪৬, মাশরাফি ২, হাওয়েল ২৪, বার্ল ১, আরিফুল ২, সামিত ৮*, নাঈম ১, রাজা ১২, এনগারাভা ০; ইমরান ৩.৩-০-২৯-৩, আকিফ ৩-০২২-১, মিরাজ ৩-০-২১-২, ওয়েলালাগে ৩-০-২৪-০, খালেদ ৪-০-২৯-২, সৌম্য ১-০-৮-০)
ফল: ফরচুন বরিশাল ২৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ