নিউ জিল্যান্ডকে ১০৮ রানে গুঁড়িয়ে সিরিজ ভারতের

বোলারদের নৈপুণ্যে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অনায়াসে জিতল রোহিত শর্মার দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2023, 01:06 PM
Updated : 21 Jan 2023, 01:06 PM

উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া। সিম মুভমেন্ট পেয়ে ফাস্ট বোলিংয়ের অসাধারণ প্রদর্শনী মেলে ধরলেন ভারতের পেসাররা। তাতে পুড়ে খাক হলো নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটিং। অনায়াস জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল রোহিত শর্মার দল।

রায়পুরের শহীদ বীর নারায়ণ সিং আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের উপলক্ষটা বড় জয়ে রাঙাল ভারত। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শনিবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে স্বাগতিকদের জয় ৮ উইকেটে।

হায়দরাবাদে প্রথম ওয়ানডেতে হয়েছিল রান উৎসব। ভারতের ৩৪৯ রানের জবাবে নিউ জিল্যান্ড করেছিল ৩৩৭।

ভেন্যু বদল হওয়ায় এবার চিত্রও পাল্টে গেল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৫ রানের ধ্বংসস্তূপ থেকে কিউইরা যেতে পারে ১০৮ রান পর্যন্ত। অধিনায়ক রোহিতের দায়িত্বশীল ফিফটিতে ভারত তা পেরিয়ে যায় ২০.১ ওভারে।

নিউ জিল্যান্ডের প্রথম ৭ উইকেট নেন ভারতের চার পেসার মিলে। পরের ৩টি ভাগ করে নেন দুই স্পিনার। ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার মোহাম্মদ শামি। ম্যাচের সেরাও তিনিই।

নতুন বলে শামির সুইং আর মোহাম্মদ সিরাজের গতিতে নিউ জিল্যান্ড ধুঁকতে থাকে শুরু থেকে। ইনিংসের পঞ্চম বলে দারুণ এক আউটসুইঙ্গারে ফিন অ্যালেনের স্টাম্প এলোমেলো করে দেন শামি।

সিরাজের বলে হেনরি নিকোলস ধরা পড়েন স্লিপে। শামি পরে এক হাতের ফিরতি ক্যাচে বিদায় করেন ড্যারিল মিচেলকে।

প্রথম স্পেলে শামির বোলিং ফিগার ছিল ৪-১-৫-২, আর সিরাজের ৪-১-৪-১।

হার্দিক পান্ডিয়া আক্রমণে এসেই ডেভন কনওয়েকে ফেরান এক হাতে দুর্দান্ত ফিরতি ক্যাচ নিয়ে। শার্দুল ঠাকুরের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন টম ল্যাথাম।

একাদশ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের রান ৫ উইকেটে ১৫!

ওয়ানডেতে এত কম রানে আগে কখনও প্রথম ৫ উইকেট হারায়নি তারা, ভারতও আগে কখনও এত কম রানে প্রতিপক্ষের ৫ উইকেট নিতে পারেনি।

এর আগে ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোয় ১৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড, গত বছর দা ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৬ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিল ভারত।

নিউ জিল্যান্ডের সর্বনিম্ন ৬৪ রানের রেকর্ড নতুন করে লেখার চোখ রাঙানি তখন। তা হতে দেননি মূলত গ্লেন ফিলিপস। ষষ্ঠ উইকেটে মাইকেল ব্রেসওয়েলের সঙ্গে ৪১ ও সপ্তম উইকেটে মিচেল স্যান্টনারের সঙ্গে ৪৭ রানের দুটি জুটিতে দলের স্কোর একশ পার করেন তিনি।

দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে দারুণ এক বাউন্সারে ব্রেসওয়েলকে (২২) ফেরান শামি। ২ রানে জীবন পেয়ে স্যান্টনার করেন ২৭।

পরের ওভারেই অফ স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দরকে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে থামে ফিলিপসের ৫২ বলে ৫ চারে ৩৬ রানের ইনিংস। এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি তারা। ৫ রানে হারায় শেষ ৪ উইকেট।

পরের ভাগে শিশিরের কারণে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ হয়ে আসে। রান তাড়ায় ভারতকেও তাই কোনো বেগ পেতে হয়নি।

৭২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে সুর বেঁধে দেন রোহিত ও শুবমান গিল। ফিফটির পরপরই রোহিত ফেরেন ৫০ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ রান করে।

ভালো করতে পারেননি বিরাট কোহলি। ১১ রান করে স্টাম্পড হন তিনি। ইশান কিষানকে নিয়ে বাকিটা সারেন গিল। এই ওপেনার অপরাজিত থাকেন ৫৩ বলে ৬ চারে ৪০ রান করে।

আগামী মঙ্গলবার ইন্দোরে শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ৩৪.৩ ওভারে ১০৮ (অ্যালেন ০, কনওয়ে ৭, নিকোলস ২, মিচেল ২, ল্যাথাম ১, ফিলিপস ৩৬, ব্রেসওয়েল ২২, স্যান্টনার ২৭, শিপলি ২*, ফার্গুসন ১, টিকনার ২; শামি ৬-১-১৮-৩, সিরাজ ৬-১-১০-১, শার্দুল ৬-১-২৬-১, পান্ডিয়া ৬-৩-১৬-২, কুলদিপ ৭.৩-০-২৯-১, ওয়াশিংটন ৩-১-৭-২)

ভারত: ২০.১ ওভারে ১১১/২ (রোহিত ৫১, গিল ৪০*, কোহলি ১১, কিষান ৮*; ফার্গুসন ৫-০-২১-০, শিপলি ৫-০-২৯-১, টিকনার ৪-০-১৯-০, স্যান্টনার ৪.১-০-২৮-১, ব্রেসওয়েল ২-০-১৩-০)

ফল: ভারত ৮ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম দুটির পর ২-০তে এগিয়ে ভারত

ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ শামি