বিসিএলের প্রথম দিন শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েও অল্পের জন্য পারেননি পারভেজ হোসেন।
Published : 05 Dec 2023, 05:43 PM
পেসার নাহিদ রানার ফুল টস বল লেগ সাইডে খেলে অনায়াসে দুই রান নিলেন নাঈম ইসলাম। ৯৮ থেকে পৌঁছে গেলেন কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের ঘরে। হেলমেট খুলে, ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন তিনি। এরপর আলিঙ্গনে বাঁধলেন সঙ্গীকে। উদযাপন সাদামাটা হলেও তার কীর্তিটা অনেক বড়। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে করলেন ৩৩টি শতক।
নাঈমের এই অর্জন ধরা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) প্রথম দিনে। বয়স ৩৭ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যান মধ্যাঞ্চলের হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে করেছেন অপরাজিত শতক। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ৩২ শতক নিয়ে তার পরে আছেন তুষার ইমরান।
গত মাসে জাতীয় ক্রিকেট লিগে ঢাকা মেট্রোর হয়ে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে দ্বিশতক করে তুষারের রেকর্ড স্পর্শ করেন নাঈম। ২০২১ সালে অবসরে যাওয়া তুষার ৩২ শতক করেন ১৮২ ম্যাচে। তাকে নাঈম ছাড়িয়ে গেলেন ১৭০তম ম্যাচে।
প্রথম শ্রেণিতে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড অবশ্য এখনও তুষারের (১১ হাজার ৯৭২)। তার পরেই আছেন নাঈম। উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে প্রথম দিনের অপরাজিত ১০৩ রানসহ তার মোট রান এখন ১০ হাজার ৪৮৬। এই দুজন ছাড়া ১০ হাজার রান নেই বাংলাদেশের আর কারও।
চাপের মুখে ব্যাটিংয়ে নেমে নাঈমের ১৭৫ বলে ১০৩ রানের ইনিংস গড়া ৬ চার ও ৩ ছক্কায়। প্রথম দিনে খেলা হওয়া ৬২ ওভারে মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৫৬ রান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে মঙ্গলবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খায় মধ্যাঞ্চল। ১১ রানের মধ্যে হারায় দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও রনি তালুকদারকে।
এরপরই উইকেটে যান নাঈম। অধিনায়ক সাইফ হাসানের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন তিনি। তবে দ্রুত সাইফ ও মাহিদুল ইসলামের বিদায়ে ৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় মধ্যাঞ্চল।
সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে তাইবুর রহমানের সঙ্গে ১০৪ বলে ৭৭ রানের জুটিতে দলকে টানেন নাঈম। পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তিনি ১০১ বলে। তাইবুর ৫১ বলে ৪০ করে ফেরার পর দ্রুত বিদায় নেন শুভাগত হোম ও আবু হায়দার।
অষ্টম উইকেটে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে ১২৩ বলে ৯৮ রানের ইনিংস সেরা জুটির পথে নাঈম শতকে পা রাখেন ১৬৬ বলে। শহিদুল ৫৮ বলে করেন ৪৭ রান। তিনি ফেরার পর খেলা হয় আর কেবল একটি বল। আলোকস্বল্পতায় আগেভাগেই শেষ হয়ে যায় দিনের খেলা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৬২ ওভারে ২৫৬/৮ (নাঈম শেখ ৫, রনি ৪, সাইফ ৩২, নাঈম ইসলাম ১০৩*, মাহিদুল ০, তাইবুর ৪০, শুভাগত ০, আবু হায়দার ৭, শহিদুল ৪৭, এনামুল ০*; মুশফিক ১৩-২-২৮-৩, নাহিদ ১৭-২-১০০-১, সানজামুল ১১-২-৩৯-১, মামুন ১২-০-৪৬-২, সাব্বির ২-০-৩-০, রিশাদ ৭-০-৩৬-১)
পারভেজের শতক হাতছাড়া
আরেক ম্যাচে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েও অল্পের জন্য পারেননি পারভেজ হোসেন। তবে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে শক্ত ভিত পেয়েছে পূর্বাঞ্চল।
প্রথম দিনের ৮৭ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪২ রান তুলেছে তারা।
পারভেজ ১৬৭ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৯০ রান। ৯ চার ও এক ছক্কায় ১৫০ বলে ৭৭ রান করেন সৈকত আলি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে পারভেজ ও সৈকতের ১৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পায় পূর্বাঞ্চল।
সৈকতকে এলবিডব্লিউ করে দক্ষিণাঞ্চলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। পারভেজও এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি। বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলামকে বেরিয়ে এসে খেলে লং অনে ধরা পড়েন ২১ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
ইয়াসির আলি ও জাকের আলি যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। অমিত হাসান ৯৯ বলে করেন ৩৫।
দিন শেষে শামসুর রহমান ১৯ ও ইরফান শুক্কুর ১১ রানে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৮৭ ওভারে ২৪২/৫ (সৈকত ৭৭, পারভেজ ৯০, অমিত ৩৫, ইয়াসির ৮, জাকের ১, শামসুর ১৯*, ইরফান ১১*; আল আমিন ১৪-৩-৪৭-০, কামরুল ১২-০-৪-৪৫-১, মেহেদি ১৯-১-৪৯-০, তানভির ২৩-৪-৫৬-৩, মইন ১৮-১-৩৮-১, মিঠুন ১-০-৬-০)