রান উৎসবের ম্যাচের মাঝ বিরতিতে দলকে সাহস জুগিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলার।
Published : 27 Mar 2023, 01:45 PM
দক্ষিণ আফ্রিকা যে ম্যাচে অবিশ্বাস্য রান তাড়ায় জিতে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল, ওই ম্যাচের একটি ঘটনা ক্রিকেটে কিংবদন্তি হয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়া ৪৩৪ রান তোলার পর ড্রেসিং রুমে প্রোটিয়াদের সবার যখন মন খারাপ, জ্যাক ক্যালিস তখন বলেছিলেন, “আমার মনে হয়, ১০ রানের মতো কম করে ফেলেছে ওরা…!” সতীর্থরা সবাই তখন চমকে গিয়েছিলেন, হেসে উঠেছিলেন, নির্ভার ও উজ্জীবিত হয়ে স্মরণীয় রান তাড়ায় দলকে জিতিয়েছিলেন। ২০০৬ সালের মার্চের সেই ঘটনাই যেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে আবার ফিরে এলো ১৭ বছর পরের মার্চে!
প্রতিপক্ষ এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেঞ্চুরিয়নে রোববার জনসন চার্লসের ৪৬ বলে ১১৮ রানের ইনিংসে ২০ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা গড়ল ২৫৮ রানের পাহাড়। ক্যালিসের ভূমিকায় এবার কাগিসো রাবাদা। ড্রেসিং রুমে ফেরার পর এই ফাস্ট বোলার বললেন, ‘দে আর অ্যাবাউট টেন রানস শর্ট…।”
বাকিটা, লোকে যেমন বলে, ইতিহাস!
কুইন্টন ডি কক আর রিজা হেনড্রিকসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারে রান উঠল ১০২। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবার পাওয়ার প্লেতে শতরান কোনো দলের। ১০ ওভারে রান পেরিয়ে গেল দেড়শ।
ডি কক ৪৪ বলে ১০০ রান করে আউট হয়ে গেলেন, হেনড্রিকস করলেন ২৮ বলে ৬৮। অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন ২১ বলে ৩৮ রানের ইনিংসে। ৭ বল বাকি রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকা জিতল রান তাড়ার বিশ্বরেকর্ড গড়ে।
৫১৭ রান আর ৩৫ ছক্কার এই ম্যাচ রেকর্ড বইয়ে ফেলে দিল তোলপাড়।
ম্যাচ শেষে রিজা হেনড্রিকস জানালেন ম্যাচের মাঝ বিরতিতে বলা রাবাদার সেই কথা।
ম্যাচের সেরা কুইন্টন ডি কক পরে বললেন, উইকেট ছিল অনেকটা সড়কের মতো। নিজের ইনিংস আর দলের অর্জন নিয়ে গর্বের কমতি নেই তার।
“আমরা সত্যিই স্পেশাল কিছু একটা করেছি এবং যা করেছি, এতে আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। উদ্বোধনী জুটিতে আমাদের চাওয়া ছিল দলকে কিছুটা আশা জোগানো এবং আমরা তা পেরেছি। আমরা জানতাম, সেঞ্চুরিয়নে সবসময়ই রান হয়। মাঠে বল ছুটে যায় দ্রুত। আমরা জানতাম, আমাদের সুযোগ আছে, বিশেষ করে উইকেট যখন এরকম সড়কের মতো!”
“(নিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি) এটাও দারুণ স্পেশাল। অনেক দিন ধরেই সেঞ্চুরির ইচ্ছে ছিল আমার।”
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল কৃতিত্ব দিলেন প্রতিপক্ষকে। নিজেকে নিয়ে খানিকটা মজাও করলেন তিনি।
“পুরো পাগলাটে ব্যাপার। মাঝ বিরতিতে আমরা মনে করেছিলাম, যথেষ্ট পুঁজি হয়েছে। তবে কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিকসকে কৃতিত্ব দিতে হবে। প্রথম বল থেকে নিজেদের মেলে ধরেছে তারা।”
“এই নিয়ে সম্ভবত সপ্তমবার হলো, টি-টোয়েন্টিতে ২৪০-২৫০ রান করেও হেরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হলো আমার। এখন তাই আমি মোটামুটি অভ্যস্ত। সমর্থকদের জন্য এই ম্যাচ ছিল দারুণ। তারা দিনজুড়েই বিনোদনের খোরাক পেয়েছে প্রবল।”
দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম নিজেদের জয় ও উচ্ছ্বাস ছাপিয়ে দেখছেন ক্রিকেটের জয়।
“সবচেয়ে বড় কথা হলো, এরকম একটি ম্যাচের অংশ হতে পারা দারুণ। আমার মনে হয়, দুই দলই এটির প্রশংসা করতে পারে। দুই দলের হয়ে দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরি দেখেছি আমরা এবং আশা করি, অনেক দিন ধরে স্মরণে থাকবে এই ম্যাচ।”