জাতীয় লিগে অভিষেক মৌসুমে দ্বিতীয় ম্যাচেই ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন ১৮ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ আল মামুন
Published : 31 Oct 2022, 09:59 AM
২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপের প্রাথমিক ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। সুযোগ হয়নি মূল দলে। পরের আসরে ছিলেন মূল দলে। তবে ম্যাচ খেলতে পারেন স্রেফ একটি। ইংল্যান্ডের যুবাদের বিপক্ষে করেন কেবল ৪ রান। তবে হতাশা জেঁকে বসতে দেননি পেস বোলিং অলরাউন্ডার মামুন, নিরাশ হননি একবারের জন্যও। কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলেন এবার। উপহার দিলেন জাতীয় ক্রিকেট লিগের চলতি আসরের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি।
যেকোনো সুযোগের প্রস্তুত থাকতে নিজ উদ্যোগেই ভর্তি হন মাসকো সাকিব ক্রিকেট একাডেমিতে। সেখানে অনুশীলন করতে করতেই খবর আসে জাতীয় লিগে জায়গা মিলেছে রংপুর বিভাগ দলে। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে মূল একাদশে জায়গা পাননি। অভিষেক হয় দ্বিতীয় রাউন্ডে। পরের ম্যাচেই ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান মামুন।
সিলেট বিভাগের বিপক্ষে সাড়ে ৮ ঘণ্টার বেশি উইকেটে থেকে ৩৬৪ বল খেলে ১৬ চারের সঙ্গে ১৩ ছক্কায় খেলেন অপরাজিত ২১০ রানের ইনিংস। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকেই ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়া চতুর্থ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান মামুন। তার আগে এই কীর্তি আছে তাইবুর পারভেজ (২০৭), মোসাদ্দেক হোসেন (২৫০) ও তৌহিদ হৃদয়ের (২১৭)।
বগুড়ায় ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে জাতীয় লিগের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে নামার আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের গল্প শোনালেন মামুন। ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও বোলিংয়ে মনোযোগ ধরে রাখার ইচ্ছের কথা জানালেন তিনি।
সিনিয়র পর্যায়ে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে দ্বিতীয় ম্যাচেই ডাবল সেঞ্চুরি। তাৎক্ষণিক অনুভূতি কেমন ছিল?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: অনুভূতি আসলে বলে বোঝাতে পারব না! তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহ্র কাছে শুকরিয়া আদায় করেছি। ব্যাটিংয়ে নামার শুধু বারবার করে চাচ্ছিলাম যেন দিনটা শেষ করে আসতে পারি। আল্লাহ্র রহমতে, আল্লাহ্ চেয়েছেন বিধায় করতে পেরেছি।
অভিষেক মৌসুমেই ডিউক বলে খেললেন। এসজি বলের তুলনায় এই বলে রান করা কঠিন। সেখানে প্রায় দেড়দিন ব্যাটিং করে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকালেন। এত লম্বা ব্যাটিংয়ের সময় পরিকল্পনা কী ছিল?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: যেটা বললাম, আমার একটাই চিন্তা ছিল যে, দিনটা শেষ করতে হবে। আরেকটা বিষয় মাথায় রেখেছি যে সব বল সোজা খেলব। এর বাইরে দ্বিতীয় কোনো চিন্তাই করিনি। এছাড়া বড় ভাইরা তো সবসময়ই সাপোর্ট দিয়েছেন।
ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই খেলেছেন। সবার সঙ্গেই জুটি বেঁধেছেন। নাঈম ইসলামের সঙ্গে ১৫১, নাসির হোসেনের সঙ্গে ৭০ রান যোগ করেছেন। তাদের কাছ থেকে কেমন বার্তা পেয়েছেন? কীরকম পরামর্শ দিচ্ছিলেন তারা?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: হ্যাঁ, সবার সঙ্গেই জুটি হয়েছে আমার। কিছু বল আমার পায়ে লাগছিল। তখন নাইম ভাই এসে বলছিলেন যে, তোমার পা একটু সরিয়ে নাও। তাহলে বল দেখতে আরও সুবিধা হবে। উনি সবসময় আমাকে এটা-সেটা বলছিলেন। কিছু ভুল করলে সঙ্গে সঙ্গে দেখিয়ে দিয়েছেন। নাসির ভাই, আরিফুল (হক) ভাই, (সোহরাওয়ার্দি) শুভ ভাইয়ের সঙ্গেও বড় জুটি হয়েছে। উনারা সার্বক্ষণিক আমাকে সাপোর্ট দিয়েছেন। কোনটা ভালো হচ্ছে, কোনটা করে ভালো হতে পারে বলে দিচ্ছিলেন। বড় ভাইদের সাপোর্ট আমাকে খুব সাহায্য করেছে।
সিলেট বিভাগের নাবিল সামাদ প্রথম দুই রাউন্ডে ১৬ উইকেট নিয়ে দারুণ ফর্মে ছিলেন। তার বিপক্ষে আপনি ৫টি ছক্কা মেরেছেন। আরেক বাঁহাতি স্পিনার রাহাতুল ফেরদৌসের বোলিংয়েও চারটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। বাঁহাতি স্পিনারদের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে নেমেছিলেন?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: নাবিল ভাইয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা হয়েছে যে, ম্যাচের আগের দিন আমি নাবিল ভাইয়ের বোলিং কীভাবে খেলব তা নিয়ে শুভ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তিনিও যেহেতু বাঁহাতি স্পিনার। দুজন প্রায় কাছাকাছি বয়সের, অনেকদিনের পরিচিত। তো শুভ ভাই বলছিলেন যে, নাবিল ভাই জোরের ওপর বল করেন। অন্যান্য বড় ভাইরাও এ কথা বলছিলেন যে, উনার বল খুব বেশি টার্ন করবে না। তবে জোরের ওপর বেরিয়ে যাবে। আমিও ওভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যে, একটু উঠে খেলব। উনাদের বলগুলো বেশি বের হয়ে যেতে দেব না। আল্লাহ্র রহমতে সফল হয়েছি।
মৌসুমের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করলেন। সামনে বিসিএল আছে। এরপর বিপিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগও আছে। সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে কী ভাবছেন?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: আপনারা হয়তো জানেন, আমি একটু মেরে খেলতে পছন্দ করি। বাজে বল পেলে ছাড় দিতে চাই না। তো সাদা বলের টুর্নামেন্টগুলোতে সুযোগ পেলে তো অবশ্যই অনেক বড় বিষয়। তবে আমি আসলে এতো দূরের কথা ভাবি না। আল্লাহ্ আমাকে যা দেবেন, তাতেই খুশি। এখন আমার চিন্তা জাতীয় লিগের ম্যাচগুলো ভালোভাবে শেষ করা। এরপর যা হবে দেখা যাবে। এখনই আসলে কিছু বলতে চাই না।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে মিডল-অর্ডারে ব্যাটিং করতেন। জাতীয় লিগের দুই ম্যাচেই ওপেনিংয়ে নামলেন। ব্যাটিং পজিশন স্থায়ীভাবেই বদলে ফেলার ভাবনা এসেছে মাথায়?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: বদলে ফেলা বলতে, দলে নেওয়ার আগে রংপুর বিভাগের কোচ (সাইফুল ইসলাম), ম্যানেজার (শামসুজ্জামান) ও অধিনায়ক আকবর ভাই বলে দিয়েছিলেন যে, আমরা যদি তোমাকে খেলাই তাহলে তোমার ওপেনিংয়ে নামতে হবে। তুমি জাতীয় লিগের জন্য সেভাবেই প্রস্তুতি নাও। পরে ম্যাচের আগে তারা স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ দিয়েছেন। সবাই বলেছেন মন খুলে খেলতে। বাড়তি কোনো চিন্তা না করতে। আর স্থায়ীভাবে ওপেনিংয়ে আসা বলতে, আমি আসলে সব পজিশনেই ব্যাটিং করেছি। তো যখন যেখানে সুযোগ আসবে, দল যেখানে চাইবে আমি সেখানেই ভালো খেলতে চেষ্টা করব।
বোলিংয়ের দিকে যাই যদি, জাতীয় লিগে প্রথম ম্যাচে ৮ ওভার বোলিং করেছিলেন, মুমিনুল হকের উইকেট পেয়েছেন। বোলার হিসেবে ভাবনা কেমন থাকে?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: আমি মূলত মিডিয়াম পেসার। লাল বলে, বিশেষ করে এখন তো ডিউক বল, দুই দিকেই মুভ করে। তাই সবসময় চেষ্টা করি সামনে বল করতে। ব্যাটসম্যানকে খেলানোর চেষ্টা থাকে। আর সাদা বলে আমার লেগ কাটারটা ভালো হয়, ভালো জায়গায় করতে পারি।
ব্যাটিং পজিশন এখন ওপরের দিকে, ওপেনিং করেছেন। ওপরের দিকে ব্যাটিং করে বোলিংয়েও মনোযোগ ধরে রাখার ব্যাপারে কী ভাবছেন?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: ওপেনিং করলেও আমি সবসময় বোলিংটা ধরে রাখতে চাই। দুইটাই যদি থাকে তাহলে সবসময়ই ভালো। বিশ্বে অনেক খেলোয়াড়ই আছে, যারা টপ অর্ডারে ব্যাটিং করে সঙ্গে বোলিংও করে। ওভাবেই মেইন্টেন করতে হবে। অধিনায়কের জন্য একটা অপশন রাখতে চাই। অধিনায়ক কখনও প্রয়োজন মনে করলে যেন আমাকেও বোলিং দিতে পারে। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংয়েও মনোযোগ রাখব।
অনেক দিন ধরেই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলে। ব্যাটিং-বোলিং প্যাকেজ মিলিয়ে আপনার মধ্যেও সেই সম্ভাবনা আছে। এ বিষয়ে ভাবনাটা কী?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: আমি আসলে ভাবনার জায়গাটা খুব স্বাভাবিক রাখছি। এখন যে টুর্নামেন্টে আছি, সেখানে কীভাবে ভালো করা যায় তা চিন্তা করছি। যদি আল্লাহ্পাক সামনে আরও ভালো কিছু রাখে, তাহলে দেখি। এভাবেই স্বাভাবিক চিন্তা রাখছি। আল্লাহ্ যদি কখনও ভাগ্যে রাখেন জাতীয় দলের খেলা, তাহলে তো ইনশাআল্লাহ্ হবে।
একটু পেছনে ফেরা যাক ক্রিকেটার হবেন ঠিক করলেন কবে? শুরুর দিকে গল্পটা যদি বলতেন...
আব্দুল্লাহ আল মামুন: আমার ভাই, খালাতো ভাইরা সবাই টেপ টেনিসে খেলতেন। ছোটবেলায় ওরা আমার খেলা দেখেছিল। সিনিয়র-জুনিয়র খেলায় সবসময় ওদের বল মারতাম আমি। তখন কোনো ভয়-ভীতি ছিল না। ওরা দেখে বুঝতে পেরেছিল যে, আমার ভেতরে কিছু আছে। তো তখনই ওরা ঠিক করেছিল যে বড় হওয়ার পর আমাকে ক্রিকেট অনুশীলনে ভর্তি করিয়ে দেবে। ওই ভাবেই ওরা ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। পরে গাজী ক্রিকেট হান্টে সালাউদ্দিন স্যারের নজরে পড়ে যাই। সালাউদ্দিন স্যারই তৃতীয় বিভাগ খেলার সুযোগ করে দেন। সেখান থেকেই প্রথম বিভাগে খেলি। পরে যুব চ্যালেঞ্জ সিরিজের ম্যাচে ভালো করায় (৩৪ ও ৭৮) পথটা কিছুটা সহজ হয়।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের কথা যদি বলি, প্রাথমিক ক্যাম্পে থাকলেও ২০২০ সালের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি। পরে ২০২২ সালের যুব বিশ্বকাপে একটির বেশি ম্যাচে সুযোগ পাননি। সাধারণত দেখা যায়, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ভালো করতে না পারলে হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কাটা অনেক বেশি থাকে। তখন নিজেকে ঠিক পথে রাখতে কী করেছিলেন?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: আমি সবসময় আল্লাহ্র উপর বিশ্বাস রেখেছি। একটা সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু ভালো হয়নি। তবে এতে নিরাশ হইনি। আমার পরিবার থেকেও অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। আমার কোচ রাশেদ ইকবাল স্যার, রংপুর বিভাগের কোচ, রংপুর একাডেমির স্যারদের সঙ্গে কথা বলে মাসকো অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হয়ে যাই। মাসকোতে অনুশীলন করলাম।
সেখানের স্যাররা বলছিলেন, জাতীয় লিগে সুযোগ আসতে পারে। যদি সুযোগ পাস, তাহলে কাজে লাগাতে হবে। আর না পেলে তো নেই। আমিও ওটাই চিন্তাই করেছি যে, যদি জাতীয় লিগে সুযোগ পাই, যদি একটা কামব্যাক করা যায়... আমি আসলে ভাবিনি এত বড় কিছু (ডাবল সেঞ্চুরি) হবে। আল্লাহ্র অশেষ রহমতে করতে পেরেছি।
আমি কখনও নিরাশ হই না। আপনি খেলোয়াড় হিসেবে একটা, দুইটা বা পাঁচটা ম্যাচে খারাপ খেলতেই পারেন। বিরাট কোহলিরও খারাপ সময় গেছে। ভালো-খারাপ সময় সবারই আসে। আজকে ভালো খেলেছি, কালকে খারাপও খেলতে পারি। তবে আমার মধ্যে একটা চিন্তা সবসময় ছিল যে, যেহেতু আমি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত গিয়েছি তার মানে আমার ভেতরে কিছু আছে। সবাই আমার ওপর একটা বিশ্বাস রাখে। সেই বিশ্বাসেই ভরসা করে আমি অনুশীলন করছিলাম যে, আল্লাহ্ একদিন না একদিন দেবেনই। একটাই চিন্তা ছিল, এক-দুই-পাঁচ বছর লাগুক আমি চেষ্টা করে যাব। আমাদের হাতে তো শুধু এটাই আছে।
মাসকোর অভিজ্ঞতাটা একটু বলুন। ব্যাটিংয়ের কোনো বিশেষ জায়গা নিয়ে কাজ করেছেন?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: মাসকোতে সালাউদ্দিন স্যারের সঙ্গেই কাজ করেছি বিশেষভাবে। শেষ দুই মাস স্যারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে অনুশীলন করেছি। অন্য স্যাররাও ছিলেন। তবে সালাউদ্দিন স্যারই সার্বিক দিক নির্দেশনা দিতেন। ব্যাটিংয়ের বিশেষ জায়গা বলতে, সালাউদ্দিন স্যার তো সবসময়ই পাওয়ার হিটিংয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। তো সেটা নিয়ে কাজ করেছি। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে স্যারকে বলেছিলাম যে, হয়তো জাতীয় লিগে খেলতে পারি। এজন্য কী করা যায়। তখন স্যারের সঙ্গে ডিফেন্সটা নিয়েও কাজ করেছি। জাতীয় লিগে আল্লাহ্র রহমতে ফল পেয়েছি।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আপনাকে ‘টাইগার মামুন’ নামে ডাকা হতো। এর পেছনে গল্পটা কী?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: (হাসি) হ্যাঁ! ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আগে গোলাম মর্তুজা স্যার এই নামটা দিয়েছেন। চট্টগ্রামে যুব চ্যালেঞ্জ সিরিজে এক ম্যাচের জন্য ডাক পেয়েছিলাম। আমি যেদিন চট্টগ্রাম যাই, পরদিনই খেলা ছিল। তো আগের দিনের অনুশীলনে আমার ব্যাটিং দেখে মর্তুজা স্যার বলছিলেন, সবাই ৩-৪ ম্যাচ খেলে ফেলেছে ঠিক আছে। তুই বিশ্বাস রাখ, একটা ম্যাচেই পারবি। তো প্রথম ইনিংসে ৩৪ রানে আউট হয়ে যাই। তবে ভালো মেরেছিলাম। তখনই মর্তুজা স্যার আমাকে নাম দিলেন টাইগার মামুন। পরের ইনিংসে নেমে করেছিলাম সম্ভবত ৭৮ রান। আরও পাকাপোক্ত হয় এই নাম। তখন থেকে এখন পর্যন্ত, জাতীয় লিগেও যে দেখা হয়েছে, মর্তুজা স্যার আমাকে টাইগার মামুন নামেই ডাকেন।
আবারও যুব ক্রিকেটের কথা। তখন আপনি পরতেন ৩১ নম্বর জার্সি। এখন জাতীয় লিগে দেখা যাচ্ছে ৫৫ নম্বর জার্সি পরেছেন। জার্সি নম্বর বদলে ফেললেন...
আব্দুল্লাহ আল মামুন: আমি ডেভিড ওয়ার্নারকে পছন্দ করি। তার ভয়ডরহীন আগ্রাসী ব্যাটিং ভালো লাগে। তাই তার মতো ৩১ নম্বর জার্সি পরতাম। কিন্তু জাতীয় লিগে আমাদের রংপুর বিভাগের ওপেনার জাহিদ জাভেদ ভাইও ৩১ নম্বর পরেন। তো আমি আর কাউকে জানাইনি যে, আমার ৩১ পছন্দ। পরে আমি চিন্তা করলাম বেন স্টোকসের মতো ৫৫ নম্বর জার্সি নেই। উনি আমার আরেক পছন্দের খেলোয়াড়। যেহেতু আমিও উনার মতো বাম হাতে ব্যাটিং ও ডান হাতে পেস বোলিং করি, তাই ৫৫ নম্বর জার্সি নিয়েছি।
স্টোকসের সঙ্গে খেলার ধরনে মিল প্রসঙ্গে আবার পেস বোলিং অলরাউন্ডারের বিষয়ে ফিরি। ব্যাটিংয়ে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নামতে হয় স্টোকসকে। বোলিং-ফিল্ডিংয়েও তার নিবেদন প্রশংসনীয়। তাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: অনুপ্রেরণা বলতে স্টোকসের খেলা আমার ভালো লাগে। আইডল কি না ঠিক বলতে পারব না। তবে খেলা ভালো লাগে। অনুপ্রেরণা… অমন কিছুই আর কি। আমি কিন্তু মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। স্টোকসের মতো মেরে খেলতে পছন্দ করি। আল্লাহ্র রহমতে আগে থেকেই ব্যাটিং-বোলিং দুইদিকেই আমার এনার্জি লেভেলটা অনেক ভালো। আমার নিজের ওপর বিশ্বাস আছে, দুটিই একসঙ্গে চালিয়ে নিতে পারব। ওপরের দিকে ব্যাটিং করলেও কোনো সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ্। নিজের খেলার জন্য পরিশ্রম করব। এটাই আমার হাতে আছে।
ভবিষ্যতে জাতীয় দলে সুযোগ পেলে তখন কত নম্বর জার্সি পরবেন? ৩১ নাকি ৫৫?
আব্দুল্লাহ আল মামুন: সেটা ভবিষ্যতের জন্য তোলা থাক! জাতীয় দলে সুযোগ পেলে তখন আপনাকে বলব।