‘রিয়াদ ভাই আমাকে বোঝাচ্ছিলেন, আমিও তাকে বোঝাচ্ছিলাম’

দারুণ বোঝাপড়ায় সম্ভব হয়েছে রেকর্ড গড়া জুটি, ম্যাচ শেষে বললেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

ক্রীড়া প্রতিবেদক
Published : 7 Dec 2022, 05:51 PM
Updated : 7 Dec 2022, 05:51 PM

ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে আরও জোর ধাক্কা দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তার অফ স্পিনে ৩ রানের মধ্যে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেনের উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। চোখের পলকে ৩ উইকেটে ৬৬ থেকে রান হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৬৯। সেখান থেকে কতোই বা হতে পারে দলীয় সংগ্রহ! আট নম্বরে নামা মেহেদী হাসান মিরাজের ভাবনায়ও ছিল না বড় কিছু। 

তবে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে বড় কিছুই করে দেখান মিরাজ। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট পড়ার পর ১৪৮ রানের রেকর্ড জুটি গড়ে বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে পৌঁছে দেন এ দুজন। পরে নাসুম আহমেদকে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে ২৭১ রানে নিয়ে যান মিরাজ।

ভারতের বিপক্ষে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি মাহমুদউল্লাহ-মিরাজের এই ১৪৮ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে সপ্তম উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি রয়েছে স্রেফ দুটি। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ সালে ১৭৭ রান যোগ করেছিলেন জস বাটলার ও আদিল রশিদ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আফিফ ও মিরাজ গড়েন ১৭৪ রানের জুটি।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ শোনালেন, ম্যাচের মোড় ঘোরানো এই জুটির রসায়ন কেমন ছিল।  

“(মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাইয়ের সঙ্গে একটা কথাই হয়েছিল। আমাদের ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, আমরা ঠিক করিনি যে এত রান করতে হবে। আমরা শুধু ‘বল টু বল’ খেলার চেষ্টা করেছি এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি। মাঝেমধ্যে রিয়াদ ভাই আমাকে বোঝাচ্ছিলেন, মাঝেমধ্যে আমি তাকে বোঝাচ্ছিলাম যে, ‘ভাই, এই পরিস্থিতিতে এভাবে খেলি, এভাবে খেলতে ভালো হবে’।”

এমনিতে এসব পরিস্থিতিতে খেলার অভ্যাস অনেক আছে মাহমুদউল্লাহর। প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানও তিনি। তবে এ দিন জুটিতে বেশি অগ্রণী ছিলেন মিরাজ। উইকেটেও নানা সময়ে তিনি মাহমুদউল্লাহর পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন বলে জানালেন।

“একটা ব্যাপার ভালো লেগেছে, রিয়াদ ভাই সিনিয়র হয়ে আমাকে শ্রদ্ধা করেছেন, আমার কথা শুনেছেন। এটা আমার কাছে ভালো লেগেছে। রিয়াদ ভাই মাঝেমধ্যে যখন একটু চিন্তায় পড়ে যাচ্ছিলেন যে আক্রমণ করি, তখন আমি তাকে বোঝাচ্ছিলাম যে, ‘এই পরিস্থিতিতে আক্রমণ না করে আমরা যদি আরেকটু দেখেশুনে খেলে এগিয়ে নিতে পারি, তাহলে ভালো হবে।’ এই আলোচনাগুলি কাজে লেগেছে।”

মাহমুদউল্লাহ আউট হওয়ার পর মিরাজ ও নাসুমের অষ্টম উইকেট জুটিতে স্রেফ ২৩ বলে আসে ৫৪ রান। যা দলকে নিয়ে যায় ২৭১ রানে। ব্যক্তিগত ৬৬ রান থেকে মিরাজ পৌঁছে যান ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে। নাসুম ২ চার ও ১ ছয়ে করেন ১৮ রান।

দলীয় সংগ্রহ ২৭০ ছাড়িয়ে যাওয়ার পেছনে নাসুমের এই ক্যামিও ইনিংসের প্রশংসা করলেন মিরাজ।

 “(শেষ দিকে) আমার একটাই পরিকল্পনা ছিল, ৫০ ওভার ব্যাট করব। রিয়াদ ভাই যখন আউট হয়ে গেলেন, তখন ভেবেছি রানটা যদি ২৪০-২৫০ পর্যন্ত নিতে পারি, তাহলে ভালো হবে। ২৩০ রানের খেলা একরকম, ২৫০ হলে আরেকরকম।”

“একটা ব্যাপার হলো ওখানে নাসুম ভাই অসাধারণ ব্যাট করেছে। উনি যে ২৫-৩০ রান (১৮) করেছেন, দলের জন্য তা অনেক সহায়তা করেছে। বিশেষ করে রান যেখানে হতো ২৫০, সেখানে ২৭০ হয়েছে।এই কৃতিত্ব অবশ্যই নাসুম ভাইয়ের। তিনি ওখানে দ্রুত রান করেছেন। তার এই ছোট অবদান দলের জন্য জরুরি ছিল।”