‘বাবরের বাজে সময় কোহলির মতো দীর্ঘ হবে না’

টেকনিকের খুঁতের কারণে কোহলি লম্বা সময় ধরে ভুগছেন, অভিমত সাবেক পাকিস্তানি পেসার আকিব জাভেদের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2022, 07:38 AM
Updated : 13 August 2022, 07:38 AM

একসময় বিরাট কোহলিকে যেমন মনে হতো অপ্রতিরোধ্য, তেমনই সুসময় চলছে এখন বাবর আজমের ক্যারিয়ারে। তবে ক্রিকেটীয় নিয়মে একদিন নিশ্চয়ই দুঃসময় আলিঙ্গন করবে তাকেও। সেই সময়টা কোহলির মতো এত দীর্ঘ হবে না বলেই বিশ্বাস আকিব জাভেদের। পাকিস্তানের সাবেক এই পেসার যুক্তি দিয়ে ব্যখ্যা করলেন নিজের ভাবনা।

বাবর আজম এখন আইসিসি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে আছেন শীর্ষে, টেস্টে তিন নম্বরে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান মনে করা হয় তাকে। এক সময় যে স্বীকৃতি পেতেন কোহলি।

তবে সেই কোহলির এখন চলছে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময়। ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর তিন অঙ্কের স্বাদ পাননি তিনি। পেরিয়ে গেছে এর মধ্যেই ৭৯ ইনিংস।

একসময় তার সেঞ্চুরি খরা নিয়ে ছিল আলোচনা, এখন তা রূপ নিয়েছে রান খরায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবশেষ ১৪ ইনিংসে তার স্রেফ ১টি ফিফটি, সেটিও স্রেফ ৫২ রানের। সবশেষ আইপিএলেও তার পারফরম্যান্স ছিল না প্রত্যাশার ধারেকাছে। ১৬ ইনিংসে ফিফটি করেছিলেন স্রেফ দুটিতে। ব্যাটিং গড় ছিল ২২.৭৩, স্ট্রাইক রেট মাত্র ১১৫.৯৮।

একসময় কোহলির সঙ্গে স্টিভেন স্মিথ, জো রুট, কেন উইলিয়ামসনদের মিলিয়ে বলা হতো ‘ফ্যাবুলাস ফোর।’ পরে সেখানে বাবরকে রাখতেন অনেকেই। এখন তো বাবর আপাতত সবাইকে ছাড়িয়ে, কোহলিকে রাখতে হয় এই বন্ধনীর বাইরে।

পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে রুট, বাবরদের সঙ্গে কোহলির পার্থক্য তুলে ধরলেন পাকিস্তানের ১৯৯২ বিশ্বকাপ জয়ী পেসার আকিব।

“গ্রেট ব্যাটসম্যানদেরও দুটি ধরন আছে। একধরনের ব্যাটসম্যান হলো তারা, যারা কোথাও আটকে গেলে তাদের বাজে সময় বেশ দীর্ঘ হয়। অন্যরা হলো টেকনিক্যালি আঁটসাঁট ব্যাটসম্যান, যাদের বাজে সময় খুব দীর্ঘ হয় না। যেমন বাবর আজম, কেন উইলিয়ামসন, জো রুট…। তাদের বাজে সময় কোহলির মতো লম্বা হবে না, কারণ তাদের দুর্বলতা বের করা কঠিন।”

খেলোয়াড়ী জীবন শেষে কোচ হিসেবে বেশ খ্যাতি পাওয়া সাবেক এই পেসারের মতে, টেকনিকের একটি দুর্বলতার কারণেই ভুগতে হচ্ছে কোহলিকে।

“অফ স্টাম্পের ঠিক বাইরের ডেলিভারিতে কোহলি আটকে যায়। জেমস অ্যান্ডারসন সেটি টার্গেট করেছে অসংখ্যবার। সেদিনও আমি তার ব্যাটিং খেয়াল করছিলাম। মনে হলো, সে খুব সচেতনভাবেই বাইরের ডেলিভারিগুলো শরীরের দূর থেকে না খেলার চেষ্টা করছে।”

“টেকনিকে পরিবর্তন আনলে সমস্যার জন্ম নেবেই। এখান থেকে বের হতে হলে তার উচিত, খুব সাবধান না থেকেই একটি বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করা। সেটি পারলেই আবার সুসময়ের সূচনা হবে।”

আর সপ্তাহ দুয়েক পরই এশিয়া কাপের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। এই দলে কোহলির জায়গা পাওয়া নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তার সাম্প্রতিক পড়তি ফর্ম আর বিকল্প আরও অনেকের আবির্ভাব মিলিয়েই প্রশ্নটা উঠছে।

আকিবের মতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যর্থ হলে আরও উচ্চকিত হবে কোহলিকে নিয়ে প্রশ্ন। পাশাপাশি তিনি কোহলির জন্য আশার জায়গাও দেখালেন।

“কোহলি যদি পারফর্ম না করে এবং ভারত যদি হেরে যায়, তাহলে আমাদের মতোই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে কোহলিকে। যেমন ধরুন, তখন প্রশ্ন উঠবে, দিপক হুডার মতো ফর্মে থাকা একজনকে তারা কেন খেলায়নি? অবশ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেটে বাজে ফর্মের ব্যাটসম্যানও যে কোনো সময় ছন্দে ফিরে আসতে পারে।