তানজিমের ছোবল ও তানজিদের ঝড়ে ওমানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ

ওমানকে ১২৬ রানে গুটিয়ে ২০১ বল বাকি রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

১০৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তানজিদ (বাঁয়ে) ও নাঈম। ছবি: এসিসি

দলে ফিরেই দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিলেন পেসার তানজিম হাসান। চমৎকার বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে অল্পে গুটিয়ে দিতে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পরে সহজাত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে টানা দ্বিতীয় ফিফটি করলেন তানজিদ হাসান। দাপুটে পারফরম্যান্সে ওমানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। 

কলম্বোয় শনিবার ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ৮ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারের ম্যাচটিতে প্রতিপক্ষকে ১২৬ রানে আটকে রেখে তারা লক্ষ্যে পৌঁছায় ২০১ বল বাকি থাকতে। 

বাংলাদেশের এই জয়ের নায়ক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে যাওয়া ম্যাচের একাদশে না থাকা তানজিম। অসাধারণ বোলিংয়ে ৯ ওভারে মাত্র ১৮ দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। এমন পারফরম্যান্সের পর ম্যাচের সেরা তিনি ছাড়া আর কে! 

ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে তানজিদ খেলেন ৪৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। ২টি ছক্কার সঙ্গে ১১টি চার হাঁকান এই ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনি করেছিলেন ১১ চারে ৩৯ বলে ৫১। 

অবদান কম নয় রকিবুল হাসান, মাহমুদুল হাসান জয় ও মোহাম্মদ নাঈম শেখেরও। দুটি করে উইকেট নেন রকিবুল ও মাহমুদুল। আর ৭টি চারে ৪৭ রান করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন নাঈম।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওমান শিবিরে শুরুতেই হানা দেন রিপন মন্ডল, চতুর্থ ওভারে ফিরিয়ে দেন আব্দুল রউফকে। ওমান অধিনায়ক আকিব ইলিয়াসকে রানের খাতাই খুলতে দেননি তানজিম। 

৯ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে পথে ফেরানোর চেষ্টা চালান কাশ্যপ প্রজাপতি ও আয়ান খান, গড়েন ৪৫ রানের জুটি। কিন্তু পরপর দুই ওভারে বিদায় নেন দুজনই। আয়ান (২৬) বোল্ড রকিবুলের বলে, শেখ মেহেদি হাসানের শিকার প্রজাপতি (২২)। 

এরপর আরেকটি ৪৫ রানের জুটি গড়েন শুব পাল ও শোয়াইব খান। কিন্তু তারাও পারেননি বড় কিছু করতে। ১১৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ওমানের ইনিংস এরপর দ্রুত গুটিয়ে দেন তানজিম। ৪ বলের মধ্যে শেষ ৩ শিকার ধরেন তিনি। 

জবাবে শুরু থেকেই আক্রমণ চালান তানজিদ। কালিমুল্লাহর ওপর দিয়ে বইয়ে দেন ঝড়। এই পেসারের দুই ওভারে মোট দুটি ছক্কা ও চারটি চার মারেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

খুনে ব্যাটিংয়ে ২৮ বলে ফিফটিতে পা রাখেন তানজিদ। নাঈমও নিজের জোনে পেলে হাঁকান বাউন্ডারি। তাদের জুটিতে ত্রয়োদশ ওভারেই একশ পেরিয়ে যায় বাংলাদেশের রান। 

একটা সময় মনে হচ্ছিল কোনো উইকেট না হারিয়েই কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু আকিব ইলিয়াসের তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট হারায় দলটি। ছক্কার চেষ্টায় ক্যাচ তুলে দেন তানজিদ ও অধিনায়ক সাইফ হাসান। 

এরপর জাকির ও নাঈম বাকি কাজ সারেন অনায়াসেই।                                                                          

আগামী মঙ্গলবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওমান ইমার্জিং দল: ৪৬ ওভারে ১২৬ (প্রজাপতি ২২, রউফ ২, ইলিয়াস ০, আয়ান ২৬, শুব ২৫, শোয়াইব ২৩, ওয়াসিম ৬, ফায়াজ ৫, জয় ২*, কালিমুল্লাহ ০, বিলাল ৪; রিপন ৭-২-১৮-১, তানজিম ৯-২-১৮-৪, রকিবুল ১০-২-৩২-২, মেহেদি ১০-১-২৯-১, মাহমুদুল ৯-১-২১-২, সৌম্য ১-০-২-০)

বাংলাদেশ ইমার্জিং দল: ১৬.৩ ওভারে ১৩০/২ (নাঈম ৪৭*, তানজিদ ৬৮, সাইফ ০, জাকির ১১*; কালিমুল্লাহ ৪-১-৩৭-০, ফায়াজ ২-০-১৫-০, বিলাল ৩-০-৩৩-০, জয় ৪-০-২০-০, ইলিয়াস ২.৩-০-১৭-২, ওয়াসিম ১-০-৪-০)

ফল: বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: তানজিম হাসান