বিদায়ের ঘোষণা দিলেন গোলাপি বলের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট দিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করছেন আজহার আলি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2022, 09:12 AM
Updated : 16 Dec 2022, 09:12 AM

হাতছানি দিচ্ছিল টেস্ট খেলার সেঞ্চুরি। কিন্তু এর আগেই এলো কঠিন বাস্তবতার থাবা। জায়গা হারাতে হলো একাদশে। সামনে তাকিয়ে করণীয়ও যেন বুঝে গেলেন আজহার আলি। দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান, পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসের সফল ব্যাটসম্যানদের একজন জানিয়ে দিলেন, থামছে তার পথচলা।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নেবেন আজহার। করাচিতে শনিবার সিরিজের শেষ টেস্টের একাদশে জায়গা হলে সেটিই হবে তার শেষ টেস্ট। একাদশে জায়গা না পেলে শেষ টেস্ট তিনি খেলে ফেলেছেন।

পাকিস্তানের ওয়ানডে দলে তার জায়গা হয় না প্রায় ৫ বছর ধরে। দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি তো খেলেননি একটিও। টেস্ট থেকে অবসর মানে তাই ৩৮ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেরও সমাপ্তি।

টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবেই মূলত তার পরিচয় বিশ্বক্রিকেটে। ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট দিয়ে অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৯৬ টেস্ট, পাকিস্তানের হয়ে যা ষষ্ঠ সর্বোচ্চ। ১৯ সেঞ্চুরিতে ও ৪২.৪৯ গড়ে তার রান ৭ হাজার ৯৭। পাকিস্তানের হয়ে তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল চারজনের।

টেস্ট ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ পাওয়া স্রেফ চার ব্যাটসম্যানের একজন তিনি। ২০১৬ সালে দুবাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার ৩০২ রানের সেই ইনিংস ইতিহাসে আলাদা জায়গা নিয়ে আছে গোলাপি বলের টেস্টের প্রথম ত্রিশতক হয়ে। পরে দিন-রাতের টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেন ডেভিড ওর্য়ানারও।

৯ টেস্ট ও ৩১ ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে নেতৃত্বেও দিয়েছেন তিনি। ওয়ানডেতে ৫৩ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরিতে তার রান ৩৬.৯০ গড়ে ১ হাজার ৮৪৫।

গত এক যুগে টেস্টে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা ছিলেন তিনি। এই বছরের শুরুতেও বেশ ভালোই ফর্মে ছিলেন। মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলেন ১৮৫ রানের ইনিংস, শেষ টেস্টে করেন ৭৮। কিন্তু জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম টেস্টে পারফরম্যান্সের পর বাদ পড়েন। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে রাওয়ালপিন্ডির ব্যাটিং স্বর্গে ২৭ ও ৪০ রানের ইনিংসের পর আবার বাদ পড়েন দ্বিতীয় টেস্ট থেকে। এবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেললেন তিনি।

“সর্বোচ্চ পর্যায়ে এতদিন ধরে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা ছিল আমার জন্য বড় সম্মান ও সৌভাগ্যের। থেমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সবসময়ই কঠিন। তবে গভীরভাবে ভাবার পর আমার মনে হয়েছে, টেস্ট থেকে বিদায়ের উপযুক্ত সময় এটিই।”

“সবকিছুর যেমন শুরু আছে, শেষও আছে। আমার হৃদয় ও মস্তিষ্ক বলছিল, এখনই সঠিক সময়। পাকিস্তানের হয়ে খেলতে পারা ছিল সম্মানের। দারুণ সব স্মৃতি আমার সঙ্গী। আমার সব কোচ ও সতীর্থর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।”

১০০ টেস্টের মাইলফলক ছোঁয়ার ইচ্ছে ছিল, আজহার তা লুকালেন না। তবে এটিও নিশ্চিত করে দিলেন, বাইরের কোনো চাপ এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেনি।

“আমার নিজের সিদ্ধান্ত এটি। কেউ বাধ্য করেনি। তরুণরা যেভাবে উঠে আসছে, আমি তাতে খুশি। এমনিতেও এই মৌসুমেই শেষ করতাম। ১০০ টেস্ট খেলরতে চেয়েছিলাম বটে। মৌসুমের প্রতিটি টেস্ট খেললে ১০০ হয়েও যেত। সেটা যেহেতু হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে তরুণদের জায়গা করে দেওয়াই ভালো। নিজের ভালো থাকা ও সামনের জীবনের ভাবনাও এসেছে আমার। সব মিলিয়েই এটি আমার সিদ্ধান্ত।”