Published : 15 Aug 2023, 11:14 PM
আগের ম্যাচের মতো আবারও আঁটসাঁট বোলিং করলেন সাকিব আল হাসান। দলের জয়ে অবদান রাখলেন তিনি ব্যাট হাতেও। তবে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে অভিষেকে ভালো করতে পারলেন না বাংলাদেশের অন্য দুই ক্রিকেটার লিটন কুমার দাস ও শরিফুল ইসলাম।
বাঁচা-মরার ম্যাচে শরিফুলের কলম্বো স্ট্রাইকার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়ে প্লে অফে উঠেছে সাকিব-লিটনের গল টাইটান্স।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে ১৫.৪ ওভারে কলম্বো গুটিয়ে যায় স্রেফ ৭৪ রানে।
এলপিএলের চার আসর মিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর এটি। দ্বিতীয় আসরে জাফনা কিংসের বিপক্ষে তখনকার ডাম্বুলা জায়ান্টসের ৬৯ রান সর্বনিম্ন।
পেসার লাহিরু কুমারা প্রথম দুই উইকেট নেওয়ার পর বাকি আটটি ভাগ করে নেন তিন স্পিনার তাবরাইজ শামসি, সেকুগে প্রসন্ন ও সাকিব।
বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার সাকিব ৩.৪ ওভারে স্রেফ ৮ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। ডট বল খেলান তিনি ১৫টি।
৪ ওভারে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে গলের সফলতম বোলার অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকান বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার শামসি। শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার প্রসন্ন ৩ ওভারে ১৪ রানে নেন ৩টি। কুমারার প্রাপ্তি ২ ওভারে ৯ রানে ২টি।
জবাবে গল লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে ৮.৩ ওভারেই। ১৫ বলে ২ চারে ১৭ রান করে দলের জয় নিয়ে ফেরেন সাকিব। ২৫ বলে ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে অপরাজিত ৪২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন লাসিথ ক্রসপুল।
লিটন ৪ বলে করতে পারেন ১ রান। ব্যাটিংয়ে প্রথম বলে আউট হওয়া শরিফুল বোলিংয়ের সুযোগ পান কেবল এক ওভার। ৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন এই পেসার।
এই ম্যাচ দিয়েই এলপিএলে অভিষেক হলো লিটন ও শরিফুলের। আসরের শুরু থেকে শরিফুল কলম্বো দলের সঙ্গে থাকলেও খেলার সুযোগ পেলেন অবশেষে। তার দলের পথচলাও শেষ হয়ে গেল এখানেই।
এই পর্বের দুই ম্যাচ বাকি থাকতে লিটনকে দলে নেয় গল। তার সামনে সুযোগ থাকছে এখন প্লে অফে খেলার।
আট ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেরা দুইয়ে থেকে প্রাথমিক পর্ব শেষ করল গল। আগামী বৃহস্পতিবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে ডাম্বুলা অরার বিপক্ষে খেলবে তারা। একই দিন এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি হবে বি লাভ ক্যান্ডি ও জাফনা কিংস।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার ওভারে ১৯ রানে দুই ওপেনার পাথুম নিসানকা ও বাবর আজমকে হারায় কলম্বো। দুজনকেই ফেরান কুমারা।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে প্রথম বল হাতে পেয়ে সাকিব দেন স্রেফ ৩ রান। নিজের পরের ওভারেও আঁটসাঁট বোলিং করেন তিনি, এবার দেন ৪ রান। এই দুই ওভারের মাঝে শামসি বিদায় করে দেন নিপুন ধনাঞ্জয়া ও লাহিরু উদারাকে।
১০ ওভার শেষে কলম্বোর স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ৬০ রান। শামসি নিজের শেষ দুই ওভারে আরও দুই শিকার ধরে শেষ করেন বোলিং।
চতুর্দশ ওভারে বোলিংয়ে ফিরে সাকিব খরচ করেন মাত্র ১ রান। পরের ওভারে প্রসন্ন নেন তিন উইকেট। এর মধ্যে গোল্ডেন ডাক এর স্বাদ পান শরিফুল।
সাকিব পরের ওভারে ইফতিখার আহমেদকে বোল্ড করে গুটিয়ে দেন কলম্বোর ইনিংস।
১১ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারায় কলম্বো। দলের হয়ে ১৫ রানও করতে পারেননি কেউ।
কলম্বোর বোলিং শুরু করেন শরিফুল, প্রথম চার বলে তিনি দেন ১ রান, এরপর করেন দুটি ওয়াইড, বাউন্ডারিও হজম করেন একটি।
দ্বিতীয় ওভারে ভানুকা রাজাপাকসার বিদায়ের পর তিন নম্বরে উইকেটে যান লিটন। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে তিনি দেখা পান প্রথম রানের এবং সেখানেই শেষ।
পরের ওভারে লেগ স্পিনার জেফ্রি ভ্যান্ডারসেকে ইনসাইড-আউট শটে তুলে মারেন লিটন। লং অফ থেকে অনেকটা দৌড়ে ফুল লেংথ ডাইভে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন নুয়ানিদু ফার্নান্দো।
ওই ওভারেই পরের বলে সাকিবকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। তবে বেঁচে যান তিনি রিভিউ নিয়ে। রিপ্লেতে দেখা যায়, সুইপ করার চেষ্টায় বল তার গ্লাভসে লেগেছিল।
সাকিব ও ক্রসপুল পরে বল আকাশেও তুলে দেন। তবে সুযোগ নিতে পারেনি কলম্বোর ফিল্ডাররা।
সপ্তম ওভারে ইফতিখারকে দুটি চার মারেন সাকিব। তার ও ক্রসপুলের ৩০ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রানের জুটিতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় গল।