অভিজ্ঞতা, সাহস ও স্কিল, সবদিক থেকে এবারের দলকে এগিয়ে রেখে এই অলরাউন্ডার স্বপ্ন দেখছেন বিশ্বকাপে বড় কিছু করার।
Published : 21 Jun 2023, 07:59 PM
২০১৯ বিশ্বকাপে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা এখনও হাহাকার জাগায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে। আরেকটি বিশ্বকাপ যখন এগিয়ে আসছে, স্বপ্নগুলোও আবার তাজা হতে শুরু করেছে। মেহেদী হাসান মিরাজ তো প্রত্যাশার আকাশে ছড়িয়ে দিলেন নতুন রঙ। আগের বিশ্বকাপের দলের চেয়ে এখনকার দলকে সবদিক থেকেই এগিয়ে রাখছেন এই অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপে দল বিশেষ কিছু করতে পারবে বলেই বিশ্বাস তার।
বিশ্বকাপ শুরু হতে বাকি আছে আর সাড়ে তিন মাস। তবে বিশ্ব আসরকে ঘিরে রোমাঞ্চের হাওয়া বইতে শুরু করেছে বেশ আগে থেকেই। সমীকরণ মেলানো চলছে, প্রস্তুতির পরিকল্পনা আঁকা হচ্ছে। সেই প্রস্তুতির পথে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ যেমন আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
আগামী ৫ জুলাই চট্টগ্রামে শুরু হবে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ দলের প্রাক-সিরিজ প্রস্তুতি ক্যাম্প।
এই সিরিজ দিয়ে বলা যায় বিশ্বকাপ প্রস্তুতির মূল স্রোতে ঢুকে পড়ছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের আগে আর কোনো টেস্ট সিরিজ নেই। টি-টোয়েন্টি সিরিজও আছে কেবল আফগানদের বিপক্ষেই। সামনের সময়টুকু তাই প্রায় পুরোটাই থাকবে বিশ্বকাপময়।
ক্যাম্পের প্রথম দিন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিরাজ অবশ্য বললেন, তারা বিশ্বকাপের আবহে ঢুকে গেছেন আরও আগেই।
“আমরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই নিচ্ছি। এখন থেকে শুরু করব, এটা নয়। আমাদের প্রস্তুতি সেই অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। সেভাবেই আমরা পরিকল্পনা করছি, খেলছি। এর ভেতরই টেস্ট ম্যাচ ছিল (আফগানদের বিপক্ষে), শেষ করলাম। সামনে কোনো টেস্ট নেই, এখন ওয়ানডে নিয়ে চিন্তাভাবনা। বিশ্বকাপও বেশি দেরি নেই। সব মিলিয়ে যেভাবে প্র্যাকটিস করছি, ভালো করছি।”
ভালো করেছে বাংলাদেশ সদ্য সমাপ্ত টেস্ট ম্যাচেও। আফগানদের একরকম গুঁড়িয়ে দিয়েছে তারা রেকর্ড গড়া জয়ের ব্যবধানে। ওয়ানডেতে তো বাংলাদেশ আরও ধারাবাহিক ও আত্মবিশ্বাসী। এই সংস্করণেও একইরকম দাপট দেখাতে চান মিরাজ। তবে তার ভাবনায় শুধু এই সিরিজই নয়, সামনে ট্রফি জয়ের স্বপ্নও দেখছেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার।
“আমরা তো ডমিনেট করেই ক্রিকেট খেলছি সবসময় এবং আমরা যেভাবে টেস্ট জিতেছি, চেষ্টা করব ওয়ানডে সিরিজেও সেভাবে ডমিনেট করতে। সেই ডমিনেট করাটা যেন এখানেই শেষ না হয়, যেন চালিয়ে যেতে পারি। সামনে বিশ্বকাপ আছে। আমরা বড় কোনো টুর্নামেন্টে ভালো কিছু করতে পারিনি। এবার আমাদের চান্স আছে। আমি বিশ্বাস করি, সামনে যে টুর্নামেন্ট আছে, আমরা অনেক ভালো করব ও ইনশাল্লাহ কাপ জিতব।”
অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপে তাকিয়ে মিরাজের স্বপ্নগুলোও ডানা মেলতে শুরু করেছে। গত বিশ্বকাপ দলেও তিনি ছিলেন। সেবারও কয়েক বছরের দারুণ খেলার ধারাবাহিকতায় দলকে নিয়ে ছিল অনেক আশা। কিন্ত পূরণ হয়েছিল সামান্যই। ৯ ম্যাচের স্রেফ ৩টিতে জিতে ১০ দলের আসরে অষ্টম হয়েছিল বাংলাদেশ।
তবে এবারের দলটাকে আরও পোক্ত মনে করেন মিরাজ। ক্রিকেটারদের মানসিকতা-দক্ষতা-অভিজ্ঞতা, সব দিক থেকেই এই দলকে এগিয়ে রাখছেন তিনি।
“হ্যাঁ, অবশ্যই (এই দল আরও ভালো)। এই দলে কিন্তু অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছেন। ২০১৯ সালে আমি অতটা অভিজ্ঞ ছিলাম না, আমার প্রথম বিশ্বকাপ ছিল। লিটন দা, আরও অনেকের প্রথম বিশ্বকাপ ছিল। এই বিশ্বকাপে সবাই অনেক অভিজ্ঞ।”
“যারা সিনিয়র আছেন, তারা তো অনেক বছর ধরে সার্ভিস দিয়ে চলেছেন, অনেকগুলো বিশ্বকাপ খেলেছেন। তাদের পাশাপাশি আমরা যারা আছি, আমি-তাসকিন-লিটন-শান্ত ও আরও যারা আছে, আমরা কিন্তু ৭ বছর খেলে ফেলেছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তাই অনেক অভিজ্ঞ আমরা। আমি অবশ্যই এই দলকে অনেকটা এগিয়ে রাখব, অভিজ্ঞতার দিক থেকে, সাহসের দিক থেকে এবং স্কিলের দিক থেকে, সব দিক থেকে।”
আগেরবারের চেয়ে দল আরও ভালো বলেই মিরাজের প্রত্যাশার সীমানাও বেশি। শিরোপা স্বপ্নের কথা সরাসরি না বললেও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন তেমন কিছুরই।
“অবশ্যই অনেক বড় সুযোগ (এবারের বিশ্বকাপে)। যেভাবে গত এক-দেড় বছরে আমরা খেলেছি, যেভাবে দল ফল পেয়েছে দেশে ও বাইরে, ঘরে জিতেছি, বাইরে জিতেছি, এবার তাই আশা করতে পারি, এই বিশ্বকাপ আমাদের অন্যতম একটা বিশ্বকাপ যাবে।”