টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
সেমি-ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকাকে নিজেদের সুবিধা হিসেবে দেখছেন আফগানিস্তান কোচ।
Published : 26 Jun 2024, 08:58 PM
একের পর এক চমক দেখিয়ে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ওঠা ক্রিকেটের ময়দানে আফগানদের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্জন। এর আগে কখনও এমন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা না থাকাকে বরং সুবিধা হিসেবে দেখছেন আফগানিস্তান কোচ জোনাথন ট্রট। বললেন, কোনো কিছু হারানোর ভয় ছাড়াই খেলতে নামবেন তারা। আর এটাই তাদেরকে প্রতিপক্ষের কাছে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলবে।
আসরে দারুণ সব পারফরম্যান্স উপহার দিচ্ছে আফগানিস্তান। গ্রুপ পর্বে নিউ জিল্যান্ডকে ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে হারায় তারা। সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তুলে নেয় ২১ রানের চমৎকার জয়। এরপর বাংলাদেশকে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেয় রাশিদ খানের দল।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এবার তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। যারা এবারের আসরে রয়েছে দুর্দান্ত ছন্দে। এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচের সবকটি জিতে সেমি-ফাইনালে উঠেছে এইডেন মারক্রামের দল।
তবে নক-আউট ম্যাচে তো প্রোটিয়াদের হারার অনেক নজির আছে। চাপে ভেঙে পড়ার বহু বাজে অভিজ্ঞতা আছে। বারবার চাপের সময় ভেঙে পড়ার কারণেই তো ‘চোকার’ তকমা লেগে গেছে এখন পর্যন্ত সাদা বলের দুই সংস্করণের বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলতে না পারা দলটির গায়ে।
এবারও সেমি-ফাইনালে তাই আফগানদের বিপক্ষে চাপে থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকা, মনে করছেন ট্রট। সেই তুলনায় নিজেদের নির্ভার লাগছে ইংলিশ সাবেক ব্যাটসম্যানের কাছে। তার মতে, হারানোর কিছু নেই তাদের।
“আমরা সেমি-ফাইনালে খেলতে নামব কোনো ভয় ছাড়া এবং সেমিতে খেলার অতীত ইতিহাস ছাড়া। এটা আমাদের অচেনা জায়গা। আমরা স্রেফ মাঠে নামব এবং আমাদের সবটুকু উজাড় করে দেব। সেমি-ফাইনালে ব্যর্থতা বা সাফল্য নিয়ে আমাদের কোনো পূর্ব ধারণা নেই।”
“আমাদের জন্য এটা একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। আমরা এমন একটি দল, যাদের হারানোর কিছু নেই; আর এটাই আমাদের ভয়ঙ্কর করে তুলেছে বলে আমি মনে করি। অবশ্যই প্রতিপক্ষের ওপর অনেক চাপ থাকবে।”
২০২২ সালের জুলাইয়ে আফগানিস্তানের কোচের দায়িত্ব নেন ট্রট। তার কোচিংয়ে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সেমি-ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। এবার তো তারা শেষ চারে উঠে গড়ল ইতিহাস।
আফগানিস্তানের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশটির ক্রিকেটারদের প্রতিভা দেখে বিস্মিত হয়ে যান ট্রট। বললেন, তিনি তেমন কিছুই করেননি। কেবল দেখিয়ে দিয়েছেন পথ এবং শক্ত হাতে ধরে রেখেছেন লাগাম।
“আমি যখন দায়িত্ব নিই, তখন আফগান ক্রিকেটারদের প্রতিভা দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তবে সবকিছুর মধ্যে একটা কাঁচা ভাব ছিল…আমি কেবল কিছু কিছু জায়গায় কিছু যোগ করার চেষ্টা করেছি। কোনো পর্যায়েই কারো এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। আমি শুধু তীরের ধনুককে আরও শক্ত করার চেষ্টা করছি, যাতে সেগুলো আরও অনেক দূর যেতে পারে, আরও বেশি ম্যাচ জিততে পারে এবং আরও বড় লক্ষ্য স্থির করতে পারে।”
এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি টি-টোয়েন্টি খেলে দুটিতেই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুটি ম্যাচই ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। আরেকটি বৈশ্বিক আসরে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে দুই দল। আসরের প্রথম সেমি-ফাইনালে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় মাঠে গড়াবে তাদের লড়াই।