জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম টেস্ট হারের পর অনেক বেশি খারাপ লাগছে না নাজমুল হোসেন শান্তর, অন্য যে কোনো পরাজয়ের মতোই অনুভূতি বাংলাদেশ অধিনায়কের।
Published : 23 Apr 2025, 08:13 PM
নিউ জিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার পর এবার জিম্বাবুয়ে। ঘরের মাঠে টানা ছয় টেস্ট হারল বাংলাদেশ। শক্তি-সামর্থ্য, সাম্প্রতিক ফর্ম, অভিজ্ঞতা কিংবা অন্যান্য যে কোনো তুলনায় জিম্বাবুয়ের চেয়ে ঢের এগিয়েই থাকবে বাংলাদেশ। কিন্তু ২২ গজে ছাপ পড়েনি তেমন। তবে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছেন বলেই বাড়তি হতাশার কারণ দেখেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের অধিনায়কের হতাশা অন্য সব পরাজয়ের মতোই।
সিরিজের প্রথম টেস্টে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে কিছুটা আশা জাগাতে পেরেছিল তারা। তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। চতুর্থ দিনের ওই শেষ সেশনের বাইরে পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়ে জিতেছে সফরকারীরা।
ব্লেসিং মুজারাবানি, ভিক্টর নিয়াউচিদের পেস বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ব্রায়ান বেনেট, বেন কারানদের ইতিবাচক মানসিকতার ব্যাটিংয়ের জবাব দিতে পারেননি স্বাগতিক পেসাররা।
অথচ ২০২১ সালের মার্চে আফগানিস্তানকে হারানোর পর থেকে টেস্টে জয়হীন ছিল জিম্বাবুয়ে। এই সময়ে নিজেদের ঘরের মাঠে টেস্টের দুই নবীন সদস্য আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের কাছেও হারে তারা। হারারেতে বাংলাদেশের বিপক্ষেও হেরে যায় বড় ব্যবধানে।
সার্বিক অভিজ্ঞতার বিচারেও অনেক পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা। সিলেট টেস্টের আগে তাদের পুরো দল মিলে ছিল ৮১ ম্যাচের অভিজ্ঞতা। মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে ছিল ৯৪টি টেস্ট।
সব কিছু বিবেচনা করে সিলেট টেস্টে পরিষ্কার ফেবারিট ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সামর্থ্যের ছাপ রাখতে পারেনি তারা। দুই ইনিংসে একবারও তিনশ রান করতে পারেনি দল। পুরো ম্যাচে ফিফটি হয়েছে মোটে তিনটি।
সিরিজটি শুরুর আগে দেশে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার আশায় প্রথম ম্যাচ থেকেই নতুন কিছু দেখানোর কথা বলেছিলেন শান্ত। কিন্তু মাঠে তার কথার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
হতশ্রী পারফরম্যান্সে ম্যাচ হারের পর তাই হতাশ তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বাংলাদেশ অধিনায়ক জানিয়ে দেন, সেই হতাশায় বাড়তি কোনো উপকরণ নেই।
“(পরাজয়) অবশ্যই হতাশাজনক। পুরো ম্যাচ যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যে কারণেই এই হার। অতিরিক্ত আপসেট, এটা আসলে বলব না। কারণ এটাও একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। ভালো করিনি, এই কারণে আপসেট।”
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষ প্রায় সাত বছর পর হারল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে সিলেটের অভিষেক টেস্টে স্বাগতিকদের ১৫১ রানে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ওই ম্যাচেও একাদশে ছিলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত।
এবার অধিনায়ক হয়ে দেখলেন আরেকটি পরাজয়। সাত বছরের আগের ওই ম্যাচে জিম্বাবুয়ে দলে ছিলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ব্রেন্ডান টেইলর, সিকান্দার রাজা, কাইল জার্ভিসের মতো তারকারা। এবারের দল সেই তুলনায় অনেক অনভিজ্ঞ।
তাই এই পরাজয়ের গ্লানিই বেশি কি না, জানতে চাওয়া হয় শান্তর কাছে। কিন্তু হতাশাবোধের তুলনায় যেতে চাইলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“(কষ্ট) বেশি বলব না। যে কোনো ম্যাচ হারলে খারাপ লাগে। অবশ্যই আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি, এটা আমি বিশ্বাস করি। আমরা এর চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলার মতো দল। এজন্যই হতাশ।”
“এই ম্যাচ হেরে অনেক বেশি খারাপ লাগছে, জিনিসটা এরকম নয়। নরম্যালি ম্যাচ হারলে যেমন খারাপ লাগে, আজকেও অমনই লাগছে।”
চট্টগ্রামে আগামী সোমবার শুরু হবে সিরিজের শেষ টেস্ট।