রিজওয়ানদের স্বপ্ন ভেঙে ফের পিএসএল চ্যাম্পিয়ন আফ্রিদির লাহোর

আসর শুরুর ম্যাচের মতো ফাইনালেও মুলতান সুলতান্সকে ১ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতল লাহোর কালান্দার্স।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2023, 06:38 PM
Updated : 18 March 2023, 06:38 PM

আসর শুরু হয়েছিল যে দুই দলের জমজমাট লড়াই দিয়ে, শেষটায়ও দেখা হলো তাদের। এবারও রোমাঞ্চের নানা অলিগলি পেরিয়ে ম্যাচের নিষ্পত্তি হলো শেষ বলে। জয়ী দলটাও থাকল একই। মোহাম্মদ রিজওয়ানের মুলতান সুলতান্সকে হারিয়ে আবারও পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) শিরোপা জিতল শাহিন শাহ আফ্রিদির লাহোর কালান্দার্স।

এবারের আসর শুরুর ম্যাচের মতো শনিবারের ফাইনালেও লাহোর কালান্দার্সের জয় ১ রানে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ২০০ রানের পুঁজি গড়ে মুলতানকে আটকে দেয় তারা ১৯৯ রানে।

গতবারের ফাইনালেও মুলতানকে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাহোর। সেই ফাইনাল থেকে এবারের ফাইনাল পর্যন্ত টানা চার ম্যাচে মুলতানকে হারাল তারা।

দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালের নায়ক লাহোর অধিনায়ক আফ্রিদি। ব্যাটিংয়ে সাত নম্বরে নেমে স্রেফ ১৫ বলে ৫ ছক্কা ও ২ চারে খেলেন অপরাজিত ৪৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস।

পরে বল হাতে প্রথম ২ ওভারে ৩৪ রান দিলেও শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান তিনি। পরের ২ ওভারে ১৭ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।

শেষ ২ ওভারে মুলতানের দরকার ছিল ৩৫ রান। হারিস রউফের করা শেষের আগের ওভারে আসে ২২। শেষ ওভারে ১৩ রানের সমীকরণে আর পারেনি রিজওয়ানের দল।

লাহোরের দুইশ ছোঁয়া সংগ্রহে বড় অবদান ছিল আবদুল্লাহ শফিকের। ৪০ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। দলের জয়ে বল হাতে আফ্রিদির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে রশিদ খানের, ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে তিনি নেন গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো সূচনা পায় লাহোর। মির্জা বেইগ ও ফখর জামান প্রথম ৪ ওভারে তোলেন ৩৭ রান। পরের ওভারে বেইগ ফিরে যান ১৮ বলে ৩০ রান করে।

দ্বিতীয় উইকেটে ফখর ও শফিক ৩৮ বলে ৫৭ রানের জুটিতে এগিয়ে নেন দলকে। ৩৪ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৯ রান করেন ফখর।

খানিক পর ৪ বলের মধ্যে স্যাম বিলিংস, আহসান হাফিজ ও সিকান্দার রাজাকে হারায় লাহোর।

১৫ ওভার শেষে তাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ১১৫। আফ্রিদি ও শফিকের নৈপুণ্যে শেষ ৫ ওভারে আসে ৭৫ রান!

রান তাড়ায় মুলতানের শুরুটাও হয় দারুণ। প্রথম ৩ ওভারে তারা তুলে ফেলে বিনা উইকেটে ৪০ রান। চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে উসমান খানকে (১২ বলে ১৮) ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন ডেভিড ভিসা।

মোহাম্মদ রিজওয়ানকে এক পাশে দর্শক বানিয়ে রেখে ঝড় তোলেন রাইলি রুশো।  ১০ ওভারে মুলতানের রান ছিল ১ উইকেটে ১০১। এরপর রশিদ পরপর দুই ওভারে দুই থিতু ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিলে কমে যায় মুলতানের রানের গতি।

৩২ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫২ রান করেন রুশো। বাউন্ডারিতে ভিসার দারুণ ক্যাচে ফেরা রিজওয়ান ২৩ বলে করেন ৩৪।

শেষ ৫ ওভারে দরকার ছিল ৬০ রান। আফ্রিদি নিজের শেষ দুই ওভারে কাইরন পোলার্ড  ও টিম ডেভিডসহ আরও দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে কঠিন করে তোলেন প্রতিপক্ষের সমীকরণ।

কিন্তু রউফের ১৯তম ওভারে খুশদিল শাহর এক ছক্কা এবং আব্বাস আফ্রিদির এক ছক্কা ও দুই চারে আবার জমে ওঠে লড়াই।

আসরের প্রথম ম্যাচে শেষ ওভারে ১৫ ডিফেন্ড করেছিলেন জামান খান। এবারও শেষ ওভারে তার হাতে বল তুলে দেন আফ্রিদি।

প্রথম চার বলে আসে ৫ রান। পঞ্চম বলে চার মেরে শেষ বলে ৪ রানের সমীকরণে নিয়ে যান খুশদিল। শেষ বলে ২ রানের পর তৃতীয় রানের চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান তিনি। উল্লাসে মাতে লাহোর।

গতবার প্রথম নেতৃত্ব পেয়েই লাহোরকে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন আফ্রিদি। এবার এনে দিলেন আরেকটি। রিজওয়ানের নেতৃত্বে টানা দুই ফাইনালে হারল মুলতান।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

লাহোর কালান্দার্স: ২০ ওভারে ২০০/৬ (বেইগ ৩০, ফখর ৩৯, শফিক ৬৫, বিলিংস ৯, আহসান ০, রাজা ১, আফ্রিদি ৪৪*, ভিসা ২*; কটরেল ২-০-২৪-০, আনোয়ার ৪-০-৪৬-১, ইহসানউল্লাহ ৩-০-৩৭-১, আব্বাস ৪-০-৩৮-০, পোলার্ড ২-০-১৮-০, উসামা ৩-০-২৪-৩, খুশদিল ২-০-১১-১)

মুলতান সুলতান্স: ২০ ওভারে ১৯৯/৮ (উসমান ১৮, রিজওয়ান ৩৪, রুশো ৫২, পোলার্ড ১৯, ডেভিড ২০, খুশদিল ২৫, আনোয়ার ১, উসামা ০, আব্বাস ১৭*; আফ্রিদি ৪-০-৫১-৪, জামান ৪-০-৩৩-০, ভিসা ৪-০-৩১-১, রশিদ ৪-০-২৬-২, রউফ ৪-০-৪৯-০)

ফল: লাহোর কালান্দার্স ১ রানে জয়ী ও চ্যাম্পিয়ন

ম্যান অব দা ম্যাচ: শাহিন শাহ আফ্রিদি