বিপিএল সতীর্থ লিটন কুমাস দাস বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি স্কোয়াড জায়গা না পাওয়ায় ভালো লাগছে না তানজিদ হাসানের।
Published : 15 Jan 2025, 04:35 PM
ঢাকা ক্যাপিটালসের অনুশীলনের ফাঁকে লিটন কুমার দাসের সঙ্গে কথা বলছিলেন তানজিদ হাসান। একটু পর সেখানে এলেন ফরচুন বরিশালের লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তাদের আড্ডায় পরে যোগ দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তও। বিপিএলে পরের ম্যাচে লিটন-তানজিদরা মুখোমুখি হবেন রিশাদ-শান্তদের। তবে সেসব ভুলে জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বুধবার সকালের ওই মুহূর্তে চারজন যেন জাতীয় দলেরই সতীর্থ।
বিপিএলের পরপর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের জার্সিতেই দেখা যাবে শান্ত, তানজিদ, রিশাদকে। তবে সেখানে থাকবেন না লিটন। বিপিএল সতীর্থের জন্য তাই খারাপ লাগছে ঢাকা ক্যাপিটালসের ওপেনার তানজিদের।
দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচে উদ্বোধনী জুটিতে ২৪১ রান যোগ করে রেকর্ড বইয়ের পাতা ওলটপালট করেছেন লিটন ও তানজিদ। দুজনই পেয়েছেন সেঞ্চুরির স্বাদ। এক ম্যাচে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি, সর্বোচ্চ উদ্বোধনী, বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোরসহ নানা কীর্তি তারা গড়েছেন সেদিন।
নিজের সহজাত ব্যাটিংয়ে উইকেটের চারপাশে দৃষ্টিনন্দন সব শটে সেদিন ১০ চার ও ৯ ছক্কায় ৫৫ বলে ১২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন লিটন। তার উদ্বোধনী সঙ্গী হিসেবে সম্ভাব্য সেরা জায়গায় দাঁড়িয়ে ওই ইনিংসটি দেখেন তানজিদ।
বরিশালের বিপক্ষে আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে লিটনের শতকছোঁয়া ইনিংসে মুগ্ধতার কথা বলেন ২৪ বছর বয়সী ওপেনার।
“(নন স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে লিটনের সেঞ্চুরি দেখতে পেরে) আমি নিজে অনেক সৌভাগ্যবান। আমি উনার বড় একজন ভক্ত। উনার ব্যাটিং দেখাটাও একটা... অনেক উপভোগ করেছি। মানে কী বলব... শটগুলো সব চোখজুড়ানো।”
কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ বেশ কিছু ম্যাচে একদমই নিষ্প্রভ লিটনের ব্যাট। এর মাশুল গুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে জায়গা হারিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। তাই আইসিসি টুর্নামেন্টে সঙ্গী হিসেবে তাকে পাবেন না তানজিদ।
লিটনের মতো অভিজ্ঞ একজন বাদ পড়ায় তানজিদরাও বার্তা পেয়েছেন, পারফর্ম না করলে জায়গা হারাতে হবে। লিটন না থাকায় মনোকষ্টের কথাও বলেছেন তানজিদ।
“ভালো না খেললে (জাতীয় দল থেকে) বাদ পড়তে হবে। এটা সবাইকে মেনে নিতে হবে। (লিটন) দাদা কেমন ব্যাটসম্যান, আমরা সবাই জানি। আমি নিজেও উনার অনেক বড় ভক্ত। এদিক থেকে তাই আমার মন খারাপ যে, উনি দলে নেই। যেভাবে সবশেষ দুই ম্যাচ খেলেছেন, উনার আত্মবিশ্বাস অনেক ওপরে। আশা করি সামনের ম্যাচগুলো অনেক ভালো করবেন।”
লিটন না থাকলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের ১৫ স্বপ্নসারথির একজন তানজিদ। এ নিয়ে টানা তিনটি আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন বাঁহাতি ওপেনার।
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচের সবকটি খেলে মাত্র ১৬.১১ গড়ে ১৫১ রান করেন তানজিদ। ওই আসরের আগে তার ছিল মাত্র ৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা।
পরে গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও হাসেনি তার ব্যাট। সেবার ৭ ম্যাচে মাত্র ১০.৮৫ গড়ে তিনি করেন ৭৬ রান। কোনো ম্যাচে ৪০ রানও করতে পারেননি তানজিদ।
দুই সংস্করণের দুই বিশ্বকাপের হতাশা ভুলে এবার সামনের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বড় ইনিংস খেলার লক্ষ্য তার।
“প্রমাণের বিষয়টা আসলে, আমরা যতগুলো ম্যাচই খেলি প্রতিটা ম্যাচেই কিছু না কিছু প্রমাণ করার থাকে। প্রত্যেক ম্যাচেই উন্নতির অনেক জায়গা থাকে। এর আগে যে দুইটি আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলেছি, আমি নিজেও নিজের ওপর খুশি নই।”
“যেভাবে রান করার প্রয়োজন ছিল, আমি করতে পারিনি। কয়েক ম্যাচে ভালো শুরু করে ইনিংস টেনে নিতে পারিনি। তাই এবার যে ইনিংস ভালো শুরু করব, নিজেকে সময় দিয়ে কীভাবে ইনিংস বড় করা যায়, সেটাই চেষ্টা থাকবে।”