এনসিএল
জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় রাউন্ডে দুই ইনিংসেই ৫ উইকেট পেলেন শেখ মেহেদি হাসান, পরে ঝড় তুলে দলের জয় নিশ্চিত করলেন এনামুল হক ও ইমরুল কায়েস।
Published : 05 Nov 2024, 07:14 PM
শেখ মেহেদি হাসানের স্পিনে আরেকবার ধরাশায়ী ঢাকা মেট্রো। তবু বেশ বড় লক্ষ্যই দিল তারা। পরে রান তাড়ায় এনামুল হক ও ইমরুল কায়েসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে অনায়াসে জয় পেল খুলনা।
জাতীয় ক্রিকেট লিগের তৃতীয় রাউন্ডে ঢাকা ও চট্টগ্রামের লড়াই ড্রয়ে শেষ হয়েছে।
মেহেদির আরেকটি ৫ উইকেটের পর এনামুল-ইমরুলের ঝড়
দেড়শ ছোঁয়া মার্শাল আইয়ুবকে ফিরিয়ে পথ করে দিলেন সালমান হোসেন। পরে দ্রুতই ঢাকা মেট্রোর ইনিংস গুটিয়ে দিলেন শেখ মেহেদি হাসান। দুইশ ছাড়ানো লক্ষ্যে ওয়ানডে ব্যাটিংয়ে দলকে সহজ জয় এনে দিলেন এনামুল হক ও ইমরুল কায়েস।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা মেট্রোকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা। ২০৭ রানের লক্ষ্য ৩৫ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেছে তারা।
তিন ম্যাচে খুলনার এটি প্রথম জয়। আগের দুটি ম্যাচে ড্রসহ ১২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান তৃতীয়। প্রথম দুই ম্যাচ জেতা মেট্রো ১৬ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে দুই নম্বরে।
আগের দিন শতকছোঁয়া জুটিকে মঙ্গলবার দুইশর কাছাকাছি নিয়ে যান মার্শাল ও আমিনুল ইসলাম। দলের সাড়ে তিনশ হওয়ার আগে সালমানের বলে কট বিহাইন্ড হন মার্শাল। ১৮ চার ও ১ ছক্কায় ১৫২ রান করে ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
১৮২ রানে থামে পঞ্চম উইকেট জুটি। এরপর আর মাত্র ২৪ রানের মধ্যে বাকি সব উইকেট হারিয়ে ফেলে মেট্রো। ৮৮ রানে ৫ উইকেট নেন মেহেদি। প্রথম ইনিংসে তার শিকার ছিল ৬২ রানে ৫টি।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন এনামুল। মাত্র ২৮ বলে ফিফটি করেন প্রথম ইনিংসে ১২৫ রান করা এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ১৫তম ওভারে তার বিদায়ে ভাঙে ৯৪ রানের উদ্বোধনী জুটি। ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ বলে ৭১ রান করেন এনামুল।
এরপর দায়িত্ব নেন ইমরুল। ৪৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি। দলকে জিতিয়ে ৮০ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৯টি চারের সঙ্গে তিনি মারেন ৪টি ছক্কা।
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা আরেক ওপেনার অমিত মজুমদার ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মেহেদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা ১ম ইনিংস: ৩৭৬
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ২১০
ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: (ফলো-অন) ১১৫ ওভারে ৩৭২ (আগের দিন ২৯৭/৪) (মার্শাল ১৫২, আমিনুল ৭৩, তাহজিবুল ৮, রকিবুল ৩, আশরাফুল ১*, ফাহিম ১; আল আমিন ১৮-৪-৬৩-২, সালমান ১৪-০-৫৫-১, হালিম ১৭-১-৫২-০, মেহেদি ৩৭.১-৯-৮৮-৫, টিপু ২৮-৪-৮০-২, ইমরুল ১-০-৬-০)
খুলনা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২০৭) ৩৫ ওভারে ২০৯/১ (এনামুল ৭১, অমিত ৪১*, ইমরুল ৮৩*; শহিদুল ৪-০-১৮-০, রকিবুল ১১-২-৬০-০, ফাহিম ৮-১-৫৪-০, আশরাফুল ৫-০-১৮-০, আনিসুল ১-০-৬-০, আমিনুল ৩-০-২৩-১, আইচ ১-০-৩-০, শামসুর ১-০-৬-০, মার্শাল ১-০-১১-০)
ফল: খুলনা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: শেখ মেহেদি হাসান
মাহিদুলের ১ রানের আক্ষেপ
কক্সবাজারের একাডেমি মাঠে ম্যাচের শেষ দিনে ১ রানের আক্ষেপে পুড়েছেন মাহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রামের ৩৭১ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ঢাকা করে ৪০১ রান। ৩০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ৩২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রান করে চট্টগ্রাম।
আগের দিন ৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহিদুল। মঙ্গলবার দিনের দ্বিতীয় বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান ঢাকার অধিনায়ক।
এরপর দলকে এগিয়ে নেন তাইবুর রহমান। অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান খেলেন ৬১ রানের ইনিংস। শেষ দিকে সুমন খান ৩২, নাজমুল ইসলাম ২৬ ও রিপন মন্ডল ২৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে চারশ পার করান।
পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪০ বলে ৩৯ রান করেন চট্টগ্রামের তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন। প্রথম ইনিংসে চমৎকার সেঞ্চুরি করা সাজ্জাদুল হক এবার করেন ৯ রান। তবে তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
তিন ম্যাচে এই প্রথম পয়েন্ট পেল চট্টগ্রাম। ২ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে তারা। সমান ম্যাচে তিন ড্রয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৩৭১
ঢাকা ১ম ইনিংস: ১৩২.৫ ওভারে ৪০১ (আগের দিন ২৮১/৪) (মাহিদুল ৯৯, মোসাদ্দেক ৫, তাইবুর ৬১, শুভাগত ২, সুমন ৩২, নাজমুল ২৬, রিপন ২৮, এনামুল ১*; ইফরান ১৩.৫-০-৫২-৩, শরিফ ২০-৪-৫৩-১, মুরাদ ৩৯-৪-১০৫-৩, নাঈম ৪৭-১২-১৩১-৩, ইয়াসিন ১২-০-৪০-০, পারভেজ ১-০-৯-০)
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৩২ ওভারে ১২৪/৪ (সাব্বির ১৯, পারভেজ ৩৯, সাজ্জাদুল ৯, ইরফান ২, নাঈম ২৪*, শামীম ১৯*; সুমন ৩-০-২১-০, শুভাগত ৭-০-১৮-১, রিপন ২-০-১১-০, নাজমুল ১৩-৩-৪২-১, মোসাদ্দেক ২-০-৮-০, এনামুল ৫-০-১৭-২)
ফল: ড্র
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাজ্জাদুল হক