ব্যাটিং ধসে পড়ে এখনও ২২৪ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
Published : 07 Dec 2021, 08:28 AM
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস: ৯৮.৩ ওভারে ৩০০/৪ (ডিক্লে.) বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৬ ওভারে ৭৬/৭ |
আলোকস্বল্পতায় বাংলাদেশের স্বস্তি
বাংলাদেশকে স্বস্তি দিয়ে অবশেষে দিনের খেলার সমাপ্তি টানলেন আম্পায়াররা। আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হলো ২৩ ওভার আগেই।
অবিশ্বাস্য ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ও বাজে শটের মহড়ায় নিষ্প্রাণ ম্যাচেও প্রাণ ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। দিন শেষ করেছে তারা ৭ উইকেট ৭৬ রান নিয়ে।
আলো কম থাকায় প্রথম ওভারের পর পেসারদের বোলিং করাতে পারেনি পাকিস্তান। তার পরও বাংলাদেশের ব্যাটিং স্রেফ দাঁড়াতেই পারেনি। ৭ উইকেটের ৬টিই নিয়েছেন সাজিদ খান, আরেকটি রান আউট।
বাংলাদেশের হয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ৩০, সাকিব আল হাসান দিন শেষ করেন ২৩ রানে অপরাজিত থেকে। আর কেউ দু অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। তাই এখনও সামনে ঝুলছে ফলো অনের খড়গ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৯৮.৩ ওভারে ৩০০/৪ (ডি.) (আগের দিন ১৮৮/২) (আবিদ ৩৯, শফিক ২৫, আজহার ৫৬, বাবর ৭৬, ফাওয়াদ ৫০*, রিজওয়ান ৫৩*; ইবাদত ২৩-৩-৮৮-১, খালেদ ১৭.৩-৫-৪৯-১, সাকিব ১৯-৭-৫২-০, তাইজুল ২৫-৬-৭৩-২, মিরাজ ১৪-২-৩৭-০)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬ ওভারে ৭৬/৭ (সাদমান ৩, মাহমুদুল ০, শান্ত ৩০, মুমিনুল ১, মুশফিক ৫, লিটন ৬, সাকিব ২৩*, মিরাজ ০, তাইজুল ০*; আফ্রিদি ১-০-১-০, নুমান ১২-২-৩৩-০, সাজিদ ১২-৩-৩৫-৬, বাবর ১-০-১-০)।
বোলিংয়ে বাবর
স্পিনারদের দাপট দেখে ৩৭ টেস্টের ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো বল হাতে নিলেন বাবর আজম। অফ স্পিনে বেশ ভোগালেনও তাইজুল ইসলামকে। উইকেট নেওয়ার কাছাকাছিও হেলেন একবাল। ব্যাটের কানা নিয়ে বল পড়ল স্লিপ ফিল্ডারের একটু সামনে।
বাজে শটে বিদায় মিরাজের
দলের বিপর্যয়ে প্রতিরোধ গড়তে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজও। বরং তিনিও উইকেট উপহার দিয়ে ফিরলেন সাজিদ খানকে।
অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া বলে স্লগ সুইপের মতো করার চেষ্টা করেন মিরাজ। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। বল টার্ন করে ছোবল দেয় স্টাম্পে।
৮ বলে শূন্য রান করে আউট মিরাজ। বাংলাদেশের রান ২০.৪ ওভারে ৭ উইকেটে ৭১।
নতুন ব্যাটসম্যান তাইজুল ইসলাম।
এবার টিকলেন না শান্ত
বারবার বেঁচে গিয়েও শেষ রক্ষা হলো না নাজমুল হাসান শান্তর। তাকে ফিরিয়ে সাজিদ খান পেলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেটের স্বাদ।
রাউন্ড দা উইকেটে করা বল পিচ করে অফ স্টাম্পের বাইরে। একটু খাটো লেংথ দেখে পেছনের পায়ে চলে যান শান্ত। কিন্তু বল টার্ন না করে বা সোজা না হয়ে বাঁহাতি শান্তর জন্য ভেতরে ঢোকে খানিকটা। শান্ত ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।
এবার রিভিউ নিয়ে বাঁচেননি শান্ত। বরং রিভিউ হারায় দল।
৫০ বলে ৩০ রান করে আউট শান্ত। ১৮.৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ৬৫।
নতুন ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজ।
এবার রক্ষা সাকিবের
উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই ছটফট করছেন সাকিব আল হাসান। সেই ধারাতেই অযথা একটি দ্রুত সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউট হতে বসেছিলেন তিনি। নুমান আলির বল মিড অফে ঠেলেই রান নিতে ছোটেন। ফিল্ডার দ্রুত কুড়িয়ে থ্রো করে দেন। সরাসরি স্টাম্পে লাগলেই অনেকটা ব্যবধানে রান আউট হতে পারতেন সাকিব। তার রান তখন ৭।
এবার আত্মহত্যা লিটনের
মুশফিকের পর আত্মঘাতী শটে উইকেট বিলিয়ে এলেন লিটন কুমার দাস। আরও ঘনীভূত হলো বাংলাদেশের বিপদ।
উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এবং নানাভাবে আগ্রাসী শট খেলার চেষ্টা করছিলেন লিটন। আউট হলেন সেটিরই খেসারত দিয়ে। সাজিদের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ক্রিজ ছেড়ে বেয়ে খেলেন সোজা ব্যাটে। সরাসরি বোলারের হাতেই ক্যাচ।
১২ বলে ৬ রান করে আউট লিটন। বাংলাদেশ ১৬.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ৪৬।
রিভিউ হারাল পাকিস্তান
সাজিদ খানের বল সামনে পা বাড়িয়ে না খেলে ছেড়ে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বল লাগে প্যাডে। জোরাল আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পাকিস্তান নেয় রিভিউ।
রিভিউয়ে দেখা যায়, ইমপ্যাক্ট অফ স্টাম্পের বাইরে। তবে শট না খেলায় ইমপ্যাক্টের প্রভাব ছিল না সিদ্ধান্তে। কিন্তু বলটিও বেরিয়ে যাচ্ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। রিভিউ হারাল পাকিস্তান।
আবার বেঁচে গেলেন শান্ত
নুমান আলির বলে নাজমুল হোসেন শান্তর অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়েছিলেন মোহামবমদ রিজওয়ান। কিন্তু শান্ত বেঁচে গেলেন বলটি ‘নো’ হওয়ায়।
লেগ স্টাম্পের বাইরে থাকা বলে সুইপ করার চেষ্টা করেন শান্ত। দারুণ রিফ্লেক্স ক্যাচ নিয়েই রিজওয়ান উল্লাসে ভাসেন সতীর্থদের সঙ্গে।
খানিকটা ভেবে শান্ত রিভিউ নেন, মূলত বল তার ব্যাটে বা গ্লাভসে লাগেনি ভেবেই। কিন্তু রিভিউয়ের শুরুতেই দেখা যায়, ‘নো বল’ করেছিলেন নুমান। শান্ত বেঁচে যান।
পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগেছিল শান্তর গ্লাভসে। ‘নো বল’ না হলে আউট হতে পারতেন শান্ত।
১৩ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ার পর এবার শান্তর রক্ষা ২১ রানে।
বাজে শটে মুশফিকের বিদায়
রিভিউয়ে রক্ষা পাওয়ার পরের বলে কাট শটে চার মারেন মুশফিকুর রহিম। পরের বলেই স্লগ করতে গিয়ে বিলিয়ে আসেন উইকেট। ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিশ্বাস্য এক শট।
সাজিদের ঝুলিয়ে দেওয়া বল এমনভাবে স্লগ করতে যান মুশফিক, যেন ম্যাচ জিততে প্রয়োজন এক বালৈ চার রান! টাইমিং ঠিকমতো করতে পারেননি। শর্ট মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ নেন ফাওয়াদ আলম।
৮ বলে ৫ রান করে আউট মুশফিক। বাংলাদেশ ১২.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ৩১।
মুশফিকের রক্ষা
অফ স্টাম্পের বাইরে তেখে সাজিদ খানের তীক্ষ্ণ টার্ন করা বল ঠিকমতো খেলতে পারেননি মুশফিক। বল লাগে পেছনের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। পাকিস্তান নেয় রিভিউ। তাতে দেখা যায়, বল স্টাম্পেই লাগছিল, তবে ইমপ্যাক্ট ছিল ‘আম্পায়ার্স কল।’
টিকে যান মুশফিক, পাকিস্তান ধরে রাখে রিভিউ।
রক্ষা পেলেন শান্ত
নুমান আলির অফ স্টাম্পের বাইরের বল পা পাড়িয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন শান্ত। তবে বলের লাইন কাভার করতে পারেননি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল যায় পেছনে। তবে কিপার রিজওয়ান ও স্লিপে থাকা বাবর, দুজনের কেউই বল হাতে জমাতে পারেননি।
‘ড্রপ’ এটি নয়, তবে একটি সুযোগ বটেই। শান্ত বেঁচে গেলেন ১৩ রানে।
অস্বস্তি নিয়ে চা-বিরতিতে বাংলাদেশ
কঠিন কন্ডিশনে পাকিস্তানি পেস সামলানোর চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। আলোকস্বল্পতায় ১ ওভারের পরই সরিয়ে নিতে হয় স্পিনারদের। কিন্তু তার পরও শুরুতেই ধুঁকছে বাংলাদেশ। চা-বিরতির সময় রান ১০.১ ওভারে ৩ উইকেটে ২২।
অভিষেকে মাহমুদুল আউট শূন্য রানে। আরেক ওপেনার সাদমান ৩ রানে বিদায় নেন বাজে শটে। চা-বিরতির ঠিক আগে আত্মঘাতী রান আউটে ফেরেন অধিনায়ক মুমিনুল।
রান আউট মুমিনুল
বাংলাদেশের নড়বড়ে শুরু আর বাজে হয়ে উঠল অধিনায়ককে হারিয়ে। ১ রানেই রান আউট হলেন মুমিনুল হক।
সাজিদের ফ্লাইটেড ফুল লেংথ বল পয়েন্টের দিকে ঠেলে রান নিতে ছোটেন মুমিনুল। ফিল্ডার হাসান আলি দ্রুত বল তুলে সরাসরি থ্রোয়ে লাগান নন স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্পে। মুমিনুল রান নেওয়ার সময় তাকিয়ে ছিলেন ফিল্ডারের দিকে। শেষ মুহূর্তে যখন সামনে তাকান, বোলার সাজিদ তখন ঠিক তার সামনে দাঁড়ানো। সরে যেতে মুমিনুলের সময় লাগে এক মুহূর্ত। তাতে আরও ত্বরান্বিত হয় রান আউট।
বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২২।
টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে তিনবার রান আউট হলেন মুমিনুল। তিনবারই মিরপুরে।
সাজিদের আরেকটি
আলেকস্বল্পতার কারণে পাকিস্তান পেসারদের কাজে লাগাতে না পারলেও তা পুষিয়ে দিচ্ছেন অফ স্পিনার সাজিদ খান। মাহমুদুল হাসান জয়ের পর এই অফ স্পিনার ফেরালেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামকে।
এই উইকেটে অবশ্য অবদান প্রায় সবটুকুই ব্যাটসম্যানের। অফ স্টাম্পের বাইরে নিরীহ এক ডেলিভারি করেছিলেন সাজিদ। বল লাফিয়ে ওঠে একটু। কাট করার মতোই বল, কিন্তু সাদমানের পায়ের কাজ ছিল না ভালো। জায়গা বানিয়ে স্কয়ার কাট করেন তিনি, বল একটু লাফানোয় ভড়কেও যান। শেষ পর্যন্ত আলগা এক শটে ক্যাচিং অনুশীলন করান তিনি পয়েন্টে।
২৮ বলে ৩ করে আউট সাদমান। বাংলাদেশ ৯ ওভারে ২ উইকেটে ২০।
নতুন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক।
হতাশার অভিষেক
মাহমুদুল হাসান জয়ের স্বপ্নের টেস্ট অভিষেক পরিণত হলো দুঃস্বপ্নে। ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান আউট হলেন শূন্য রানে।
বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হওয়ার ২৬তম ঘটনা এটি। তবে টপ অর্ডার (১ থেকে ৩ নম্বর) ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন মাহমুদুলের আগে কেবল সাইফ হাসান। গত বছর রাওয়ালপিণ্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষেই তিনি দুই বলে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে।
অভিষেকে শূন্য মাহমুদুল
আক্রমণে পেস না থাকলেও স্বস্তির শুরু পেল না বাংলাদেশ। অভিষিক্ত মাহমুদুল হাসান জয় আউট হলেন কোনো রান না করেই।
ইনিংসের সেটি তৃতীয় ওভার, সাজিদের প্রথম। ফ্লাইট দেওয়া লেংথ বলে এক পদক্ষেপ এগিয়ে এসে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন মাহমুদুল। কিন্তু বলের লেংথ ও লাইন পড়তে গড়বড় করেন, এগিয়ে গিয়েও যেতে পারেননি বলের পিচ পর্যন্ত। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে বাবর আজমের হাতে।
৭ বলে শূন্য রানে আউট মাহমুদুল। ৩ ওভারে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১।
নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত।
আলোকস্বল্পতায় আক্রমণে স্পিন
ইনিংসের প্রথম ওভারেই দারুণ গতি ও বাউন্সে সাদমান ইসলামকে নাড়িয়ে দিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তবে এরপরই দৃশ্যপটে আম্পায়াররা। আকাশ মেঘলা, চারপাশ গুমোট। ফ্লাড লাইট জ্বালিয়েও পেস বোলিং খেলার জন্য আলো নেই যথেষ্ট।
পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম তাই দ্বিতীয় ওভারেই বোলিংয়ে আনলেন বাঁহাতি স্পিনার নুমান আলিকে। তৃতীয় ওভারে আক্রমণে অফ স্পিনার সাজিদ খান।
সাদমান-মাহমুদুলের জুটি
সাদমান ইসলামের সঙ্গে বাংলাদেশের ইনিংস শুরু করতে নামলেন অভিষিক্ত তরুণ ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয়।
কঠিন কন্ডিশন ও উইকেটে পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে এখন কঠিন পরীক্ষা বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের।
দিনর বাকি আছে নির্ধারিত আরও ৫০ ওভার। তবে মেঘলা আকাশের নিচে খেলা চলছে ফ্লাড লাইট জ্বালিয়ে। দিনের বাকি সময়টায় ৫০ ওভার খেলা চালানো তাই হবে অনেকটাই অসম্ভব।
৩০০ ছুঁয়ে ইনিংস ঘোষণা
ফাওয়াদ আলমের ফিফটির জন্য অপেক্ষা করছিল পাকিস্তান। খালেদ আহমেদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটিতে পা রাখলেন তিনি, দলের রানও স্পর্শ করল ৩০০। ইনিংস ঘোষণা করে দিলেন পাকিস্তান বাবর আজম।
৯৬ বলে ফাওয়াদ স্পর্শ করলেন ফিফটি। ১৫ টেস্টে তার দ্বিতীয় ফিফটি এটি, সেঞ্চুরি আছে ৫টি।
রিজওয়ান অপরাজিত থেকে যান ৫৩ রানে।
পাকিস্তানের তিনশ এলো ৯৮.৩ ওভারে।
তাদের একশ আসে ৩৬ ওভারে, পরের একশ ৩৫.২ ওভারে। তৃতীয় একশ চলে ধরা দেয় ২৭.১ ওভারে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৯৮.৩ ওভারে ৩০০/৪ (ডি.) (আগের দিন ১৮৮/২) (আবিদ ৩৯, শফিক ২৫, আজহার ৫৬, বাবর ৭৬, ফাওয়াদ ৫০*, রিজওয়ান ৫৩*; ইবাদত ২৩-৩-৮৮-১, খালেদ ১৭.৩-৫-৪৯-১, সাকিব ১৯-৭-৫২-০, তাইজুল ২৫-৬-৭৩-২, মিরাজ ১৪-২-৩৭-০)।
রিজওয়ানের ফিফটি
তাইজুল ইসলামের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে ৪৩ থেকে ৪৯ রানে পৌঁছান রিজওয়ান। পরের বলে সিঙ্গে নিয়ে পূর্ণ করেন ফিফটি।
১৯ টেস্টে রিজওয়ানের সপ্তম ফিফটি এটি, সেঞ্চুরি আছে এটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টে প্রথম ফিফটি।
রিজওয়ান বাঁচলেন আবার
মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফেরানোর একটি সুযোগ এসেছিল। কিন্তু ইবাদত হোসেনের বলে ক্যাচ নিতে পারলেন না তাইজুল ইসলাম।
ইবাদতের শর্ট অব লেংথ বল পুল শটের মতো খেলে নিচে রাখতে পারেননি রিজওয়ান। বল উড়ে যায় লং লেগের দিকে। সেখানে ফিল্ডার তাইজুল ছিলেন সীমানা থেকে একটু ভেতরে। খানিকটা দৌড়ে লাফিয়ে ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু বল হাতে লেগে পড়ে যায় মাটিতে।
৩০ রানে জীবন পেলেন রিজওয়ান। এর আগে দুই দফায় আম্পায়ার আউট দিলেও তিনি টিকে যান রিভিউ নিয়ে।
জুটির পঞ্চাশ
ইবাদত হোসেনের বলে রিজওয়ানের সিঙ্গেলে পঞ্চম উইকেট জুটি স্পর্শ করে পঞ্চাশ রান।
১০১ বলে আসে জুটির ফিফটি। তাতে ফাওয়াদের অবদান ২০ রান, রিজওয়ানের ৩০।
আক্রমণে সাকিব
লাঞ্চের পর সাকিব আল হাসানকে দিয়ে বোলিং শুরু করেছে বাংলাদেশ। সাকিবের এটি দিনের প্রথম ওভার।
প্রথম সেশনে জমজমাট লড়াই
উইকেট স্যাঁতস্যাতে। আকাশ মেঘলা। উইকেটে বাউন্স অসমান। ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ কঠিন কন্ডিশন। সঙ্গে বাংলাদেশের বোলিংও হলো বেশ ভালো। সব মিলিয়ে লড়াই জমে উঠল বেশ। চতুর্থ দিন লাঞ্চ বিরতিতে পাকিস্তানের রান ৪ উইকেটে ২৪২।
প্রথম সেশনে ১৯.৪ ওভার খেলে ২ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান তুলেছে ৫৪ রান।
৫২ রান দিয়ে দিন শুরু করে আজহার আলি আউট হন ৫৬ রানে। ৭১ রানে শুরু করে বাবর আজম বিদায় নেন ৭৬ রানে।
বাবরকে ফিরিয়েই তৃতীয় টেস্টে এসে প্রথম উইকেটের স্বাদ পান খালেদ আহমেদ। আজহারের উইকেট নেন ইবাদত।
এরপর ফাওয়াদ আলম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের জুটিতে এগোয় পাকিস্তান। দুজনের অবিচ্ছন্ন জুটি ৪৫ রানের।
কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে সকালে ভালো বোলিং করেন ইবাদত ও খালেদ। পরে তাইজুলও খারাপ করেননি। প্রথম সেশনে বোলিং পাননি সাকিব ও মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (লাঞ্চ পর্যন্ত)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৮৩ ওভারে ২৪২/৪ (আগের দিন ১৮৮/২) (আবিদ ৩৯, শফিক ২৫, আজহার ৫৬, বাবর ৭৬, ফাওয়াদ ১৯*, রিজওয়ান ২৬*; ইবাদত ২০-৯-৭৯-১, খালেদ ১৫-৫-৪০-১, সাকিব ১৫-৬-৩৩-০, তাইজুল ২১-৬-৫৮-২, মিরাজ ১২-২-৩১-০)।
দ্বিতীয় নতুন বল
৮০ ওভার শেষ হতেই দ্বিতীয় নতুল বল নিয়েছে বাংলাদেশ। চকচকে বল হাতে আক্রমণ শুরু করেছেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি। অপরপ্রান্তে নতুন বলেও চলছে তাইজুলের স্পিন।
আবার রিভিউয়ে রক্ষা রিজওয়ানের
তাইজুল ইসলামের বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান। ফুল লেংথ বলটি লাগে রিজওয়ানের প্যাডে। জোরালো আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার মাইকেল গফ। রিজওয়ান একটু ভেবে রিভিউ নেন।
রিভিউয়ে দেখা যায়, বল স্টাম্পে পিচ করলেও অনেকটা টার্ন করে বেরিয়ে যাচ্ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে।
রিজওয়ান টিকলেন ১২ রানে। এর আগে শূন্য রানেও আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর রিভিউয়ে রক্ষা পান তিনি।
আক্রমণে স্পিন
আগের দিনের অসমাপ্ত ওভারসহ দুই প্রান্ত থেকে দুই পেসার ১১.৪ ওভার বোলিং করার পর আক্রমণে আনা হলো স্পিন। বল হাতে পেলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল আসলাম।
৭৫ ওভারে পাকিস্তানের রান তখন ৪ উইকেটে ২২০। দিনের ১১.৪ ওভারে রান এসেছে ২ উইকেট হারিয়ে ৩২।
সম্ভাব্য উইকেট পেল না বাংলাদেশ
আপিল না করায় একটি উইকেট পেল না বাংলাদেশ। বেঁচে গেলেন ফাওয়াদ আলম।
ইবাদত হোসেনের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ঠিকমতো খেলতে পারেননি ফাওয়াদ। ব্যাটের পাশ ঘেঁষে বল যায় কিপারের গ্লাভসে। কিপার, স্লিপ ফিল্ডার, বোলার, সবাই হতাশার মতো ভঙ্গি করেন বল অল্পের জন্য ব্যাটে না লাগায়। কোনো আবেদন হয়নি।
একটু পর টিভি রিপ্লেতে আল্ট্রা এজ-এ দেখা যায়, ব্যাটে হালকা লেগেছিল বল। ফাওয়াদ তাই বেঁচে গেলেন ১২ রানে।
পাকিস্তানের দুইশ
খালেদ আহমেদের লেগ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে আলতো ব্যাট ছুঁইয়ে ফাইন লেগ দিয়ে ফাওয়াদ আলমের বাউন্ডারিতে পাকিস্তানের রান স্পর্শ করল দুইশ।
৭১.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে দুইশতে পা রাখল পাকিস্তান।
রিভিউয়ে টিকে গেলেন রিজওয়ান
ইবাদত হোসেনের অফ স্টাম্প ঘেঁষা ও নিচু হওয়া ডেলিভারি ঠিকমতো খেলতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান। উইকেটের পেছনে এক ড্রপে বল যায় কিপারের গ্লাভসে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ।
রিজওয়ান একটু ভেবে রিভিউ নেন। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল হালকা ছুঁয়ে যায় ব্যাটে।
রিজওয়ান টিকে গেলেন শূন্য রানে।
বাবরকে থামালেন খালেদ
একটি উইকেটের জন্য সৈয়দ খালেদ আহমেদের কাতর অপেক্ষা অবশেষে শেষ হলো। টেস্টে প্রথম উইকেটের স্বাদ পেলেরন তিনি বাবর আজমকে ফিরিয়ে।
আগের তুলনায় এ দিন সকাল থেকে মোটামুটি ভালো বোলিং করছিলেন খালেদ। উইকেট ধরা দিল সেই ধারাবাহিকতায়। উইকেট সোজা বল লেংথে পিচ করে একটু স্কিড করে ও নিচু হয়ে যায়। বাবর ফ্লিকের মতো করতে গিয়ে লাইন মিস করেন। বল লাগে প্যাডে। আম্পায়ার আঙুল তুলে দিতে সময় নেননি খুব একটা।
বাবর টিকতে পারেননি রিভিউ নিয়ে। বরং একটি রিভিউ হারায় পাকিস্তান।
১২৬ বলে ৭৬ রান করে আউট হলেন বাবর আজম। পাকিস্তানের রান ৪ উইকেটে ১৯৭।
টেস্ট ক্যারিয়ারে ৪১৮ বল করার পর তৃতীয় টেস্টে এসে প্রথম শিকারের দেখা পেলেন খালেদ।
ফাওয়াদ আলমের সঙ্গে উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান।
শুরুতেই উইকেট
খেলা শুরু হতেই কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা পেল বাংলাদেশ। আজহার আলিকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি।
বলটি অবশ্য উইকেট নেওয়ার মতো ছিল না। দিনের সেটি দ্বিতীয় ওভার। ইবাদতের একটি শর্ট বলে অনায়াসেই পুল করে চার মারেন আজহার। এক বল পর আরেকটি শর্ট বল করেন ইবাদত। বলে গতি ছিল না খুব একটা, চার হজম করার মতোই আরেকটি ডেলিভারি। কিন্তু বেশি জোরে মারতে গিয়েই হয়তো টাইমিংয়ে গড়বড় করেন আজহার। ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল উঠে যায় আকাশে। কিপার লিটন দাস বল গ্লাভসে জমান অনায়াসেই।
১৪৪ বলে ৫৬ করে আউট হলেন আজহার। ম্যাচের প্রথম দিনে শুরু হওয়া জুটি চতুর্থ দিনে থামল ১২৩ রানে।
বাবর আজমের সঙ্গে উইকেটে নতুন ব্যাটসম্যান ফাওয়াদ আলম।
শঙ্কা-সম্ভাবনার দোলা
মাঠ পরিদর্শনের পর আম্পায়াররা জানালেন, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গোটা দিনে ৮৬ ওভার খেলা চালানোর চেষ্টা করা হবে।
তবে আম্পায়ারদের মাঠ পরিদর্শনের সময় থেকেই আবার কমে আসতে থাকে আলো। আকাশ আবার ছেয়ে যায় কালো মেঘে। তাই শঙ্কা নিয়েই অপেক্ষা করতে হচ্ছে, আবার না শুরু হয় বৃষ্টির উৎপাত!
আশার আলো
বৃষ্টি অবশেষে থেমেছে। আকাশে কালো মেঘের আনাগোনাও কমে গেছে অনেক। আলোর রেখায় চারপাশ উজ্জ্বল হতে শুরু করেছে। কাভার সরিয়ে রোল করা হচ্ছে উইকেট। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মাঠে ফুটবল খেলে গা গরম করছেন।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে মাঠ পরিদর্শন করবেন আম্পায়াররা।
আশা নিয়ে অপেক্ষা
তৃতীয় দিনে দুই দল মাঠেই আসেনি। তবে চতুর্থ দিনে আশার ছবি দেখে সকালেই মাঠে চলে এসেছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। টিপটিপ বৃষ্টিতে হালকা গা গরম করে নিয়েছেন কয়েকজন। বাংলাদেশ দলের কয়েকজনকে দেখা গেছে ইনডোরে ব্যাটিং অনুশীলন করতে।
কালো মেঘ ফুঁড়ে একটু আলোর রেখাও ফুটে উঠেছে। তাতে উজ্জ্বল হয়েছে আশা। প্রথম সেশনে না হলেও অন্তত পরে হতে পারে খেলা।
দিনের শুরু বৃষ্টিময়
শঙ্কাগুলোকে সত্যি প্রমাণ করে আরেকটি দিনের শুরুতেও বৃষ্টির দাপট। মিরপুরে বৃষ্টির বেগ অবশ্য বেশি নয়, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে থেমে থেমে। তবে খেলা বন্ধ রাখার জন্য যথেষ্ট এটুকুই। আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা। চারপাশ গুমোট। উইকেট ও মাঠের অনেকটা অংশ যথারীতি ঢেকে রাখা হয়েছে কাভারে।
তৃতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৬৩.২ ওভারে ১৮৮/২ (আবিদ ৩৯, শফিক ২৫, আজহার ৫২*, বাবর ৭১*; ইবাদত ১২-১-৪৮-০, খালেদ ৭.২-১-২৬-০, সাকিব ১৫-৬-৩৩-০, তাইজুল ১৭-৫-৪৯-২, মিরাজ ১২-২-৩১-০)।