সর্বশেষ তিন ইনিংসে ৭৬, ৭৩ ও ৩৭ করার পরও আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ দুই ওয়ানডেতে দলে ছিলেন না ইমরুল। এবার প্রস্তুতি ম্যাচে সুযোগ পেয়েই নিজের সামর্থ্যটা দেখিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে বিসিবি একাদশকে ৩০৯ রানের সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে ১২১ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেন ইমরুল। ক্রিস ওকসের করা ম্যাচের প্রথম বলে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে চার হাঁকিয়ে শুরু; আলো ঝলমলে ইনিংসটি খেলার পথে দারুণ সব পুল, হুকও করেছেন তিনি। অন ড্রাইভ, অফ ড্রাইভ, সুইপ, রিভার্স সুইপও ছিল সমান কার্যকর।
বাংলাদেশে প্রথম ম্যাচে সঠিক লেংথ বুঝতে সময় লেগেছে ইংল্যান্ডের বোলারদের। সুবিধাটুকু পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন ইমরুল। চতুর্থ ওভারে হুক করে ম্যাচের প্রথম ছক্কা হাঁকান তিনি। এরপর আরও পাঁচটি ছক্কা এসেছে তার ব্যাট থেকে।
ওকস, ডেভিড উইলি আর লিয়াম প্লানকেট শর্ট বল দিয়ে চমকে দিতে চেয়েছিলেন। তবে চমৎকার সব পুলে তার জবাব দিয়েছেন ইমরুল। অবশ্য ব্যক্তিগত ৩৫ রানে দুরূহ এক ক্যাচ দিয়ে এক্সট্রা কাভারে জেমস ভিন্সের হাতে জীবন পান তিনি।
আফগান সিরিজে লেগ স্পিনার রশিদ খান খুব ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। ইংল্যান্ড দলে আছেন আরেক লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। তাকে কিভাবে সামলাতে হবে দেখিয়েছেন ইমরুল। রশিদের শর্ট বলে তিনি ছিলেন ক্ষমাহীন। তার শর্ট বলে পুল করে হাঁকিয়েছেন বিশাল ছক্কা।
ম্যাচের ২৬তম ওভারে রশিদের বলে এক রান নিয়ে শতকে পৌঁছান ইমরুল। ৮১ বলে তিন অঙ্কে পৌঁছানো এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এরপর খেলেন আর ১০ বল। সে সময়ে অতিথিদের ওপর চড়াও হন তিনি। উইলির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বোল্ড হওয়ার আগের তিন বলের মধ্যে দুটি বিশাল ছক্কা হাঁকান ইমরুল।
৯১ বলে ১২১ রান করতে ১১টি চার ও ৬টি ছক্কা মারেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
ইমরুলের দাপুটে ব্যাটিংয়ে নির্ভার হয়ে খেলার সুযোগ মেলে মুশফিকের। হঠাৎ করেই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলা এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান পেয়েছেন অর্ধশতক।
ইংল্যান্ডের দুই স্পিনার মইন আলি ও রশিদকে খেলার ব্যাপারে বেশ সতর্ক ছিলেন মুশফিক। সুইপ আর ড্রাইভে নিজের ইনিংস সাজান তিনি। শর্ট বলে পুলও ছিল কার্যকর। আফগান সিরিজে কিপিংও খুব একটা ভালো হয়নি তার। তবে এদিন উইকেটের পেছনে দাঁড়াননি।
আফগানিস্তান সিরিজে কোনো ম্যাচে খেলার সুযোগ মেলেনি নাসিরের। বিসিবি একাদশকে নেতৃত্ব দেওয়া এই অলরাউন্ডার ৪৫ বলে করেছেন ৪৬ রানে। শুরুতে এগিয়ে এসে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে আদিল রশিদকে উড়িয়ে ফেলেন সাইট স্ক্রিনে। চমৎকার সব ড্রাইভ আর ফ্লিকে ছড়িয়েছেন মুগ্ধতা।
ইমরুল-মুশফিক-নাসিরের সুযোগ কাজে লাগানোর দিনে হতাশ করেছেন সৌম্য সরকার। চার মেরে শুরু করে ওকসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ৭ রানে ফিরেন ফর্ম হারিয়ে ফেলা বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
আগামী শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে।