ইমরুলের শতকের পরও ইংল্যান্ডের সহজ জয়

ইমরুল কায়েসের ঝড়ো শতক আর মুশিফকুর রহিমের অর্ধশতকে বড় সংগ্রহ গড়েও লাভ হয়নি বিসিবি একাদশের। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে জস বাটলার ও মইন আলির দৃঢ়তায় সহজেই ৪ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2016, 01:08 PM
Updated : 4 Oct 2016, 04:15 PM

মঙ্গলবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ৩০৯ রান করে বিসিবি একাদশ। জবাবে ৪৬ ওভার ১ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

লক্ষ্য তাড়ায় অতিথিদের উড়ন্ত সূচনা এনে দেন জেসন রয় ও জেমস ভিন্স। বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা থাকা এই দুই ব্যাটসম্যান ৮.৪ ওভারে গড়েন ৭২ রানের জুটি। নিজের তিন ওভারের মধ্যে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে ফেরান এবাদত হোসেন। ২২ বলে দুটি করে ছক্কা চারে ২৮ রান করেন রয়। ভিন্স ৩৯ বলে ৮ চারে করেন ৪৮ রান।

রানের গতিতে বাঁধ দিতে বেন ডাকেটকে বোল্ড করেন শুভাগত হোম চৌধুরী। শুরুতে এলোমেলো বল করা কামরুল ইসলাম রাব্বি ফেরান জনি বেয়ারস্টোকে। এক সিরিজ পরই দলে ফেরা আল আমিন বিদায় করেন বেন স্টোকসকে।

১৭০ রানে ইংল্যান্ডের প্রথম ৫ ব্যাটসস্যানকে আউট করে ঘুরে দাঁড়ায় বিসিবি একাদশ। তবে তাদের হতাশায় ডুবিয়ে ইংল্যান্ডকে দারুণ জয়ে পথে নিয়ে যান অধিনায়ক বাটলার ও মইন। দুই দলের স্কোর সমান থাকা অবস্থায় ছক্কা মারতে গিয়ে মইন সীমানায় এবাদতের ক্যাচে পরিণত হলে ভাঙে ১৬.৫ ওভার স্থায়ী ১৩৯ রানের জুটি।  

৫১ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭১ রান করেন মইন। চার হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন বাটলার। ৬৪ বলে খেলা তার ৮০ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংসটি গড়া তিনটি চার ও চারটি ছক্কায়।

এর আগে ক্রিস ওকসের করা ম্যাচের প্রথম বলে দারুণ এক কাভার ড্রাইভে চার হাঁকিয়ে শুরু করেন ইমরুল। সেই ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে সৌম্য সরকারও একই শটে চার দিয়ে রানের খাতা খোলেন। প্রথম ওভারে ১৪ রান নিয়ে স্বাগতিকদের শুরুটা হয় দারুণ।

তবে রানে ফেরার লড়াইয়ে থাকা সৌম্য নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। পঞ্চম ওভারে ওকসের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে জস বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে তরুণ নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ১৫.৫ ওভারে ৮৫ রানের জুটি গড়েন ইমরুল। ওকস, ডেভিড উইলি আর লিয়াম প্লানকেট শর্ট বল দারুণভাবে সামাল দেন এই দুই ব্যাটসম্যান। আদিল রশিদের বলে শান্ত (৩৬) স্টাম্পড হলে ভাঙে বিপজ্জনক জুটি।

তৃতীয় উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে ৭১ রানের আরেকটি ভালো জুটি উপহার দেন ইমরুল। ৮১ বলে শতকে পৌঁছানো এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত ৯১ বলে করেন ১২১ রান। তার আক্রমণাত্মক ইনিংসটি সাজানো ১১টি চার ও ছয়টি ছক্কায়।

চতুর্থ উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন মুশফিক ও অধিনায়ক নাসির হোসেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে সব মিলিয়ে ৫৬ রান করা মুশফিক ফিরেন অর্ধশতকে পৌঁছে। ৫৭ বলে পাঁচটি চারে তিনি করেন ৫১ রান।

আফগান সিরিজে তিন ম্যাচেই বাইরে বসে থাকা নাসির ৪৫ বলে খেলেন ৪৬ রানের আত্মবিশ্বাসী এক ইনিংস। এক সময়ে বিসিবি একাদশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২৮১ রান। সে সময় সাড়ে তিনশ’ রানে চোখ ছিল স্বাগতিকদের। তবে শেষে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোয় তত দূর যেতে পারেনি দলটি।

ইংল্যান্ডের ক্রিস ওকস তিন উইকেট নেন ৫২ রানে।

স্বাগতিকদের ঝড়টা সবচেয়ে বেশি গেছে রশিদের ওপর দিয়ে। ১০ ওভারে ১ উইকেট পেতে ৭৬ রান খরচ করেছেন এই লেগ স্পিনার। অফ স্পিনার মইন আলি ৭ ওভারে ৪১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বিসিবি একাদশ: ৫০ ওভারে ৩০৯/৯ (ইমরুল ১২১, সৌম্য ৭, শান্ত ৩৬, মুশফিক ৫১, নাসির ৪৬, শুভাগত ১১, নুরুল ৮, আল আমিন জুনিয়র ৮, সানজামুল ৪*, আল আমিন ৩, রাব্বি ১*; ওকস ৩/৫২, স্টোকস ২/৩৬, উইলি ২/৬৩, রশিদ ১/৭৬)

ইংল্যান্ড: ৪৬.১ ওভারে ৩১৩/৬ (রয় ২৮, ভিন্স ৪৮, ডাকেট ২৯, বেয়ারস্টো ১১, স্টোকস ২৮, বাটলার ৮০*, মইন ৭০, ওকস ০; এবাদত ২/২৬, সানজামুল ১/২৩, শুভাগত ১/৪২, আল আমিন ১/৬৪, রাব্বি ১/৭২)

ফল: ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী।