জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে লিটন দাসকে একাদশে রাখার সম্ভাবনা সামান্যই, এই সময়টায় তাকে ছন্দে ফেরাতে নিবিড়ভাবে কাজ করা হবে বলে জানালেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।
Published : 08 May 2024, 05:12 PM
স্কোয়াডে তো টিকে গেছেন লিটন কুমার দাস, একাদশে টিকবেন তো? প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেনের কথায় যা ইঙ্গিত, তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ দুই টি-টোয়েন্টিতে লিটনের খেলার সম্ভাবনা সামান্যই। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের ফর্ম যে দুর্ভাবনার কারণ, তা অকপটে স্বীকার করছেন প্রধান নির্বাচকও। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে দল থেকে ছুড়ে ফেলতেও চান না তারা। শেষ দুই টি-টোয়েন্টির সময়টায় মূলত নিবিড়ভাবে কাজ করা হবে তার ব্যাটিং নিয়ে।
চলতি সিরিজের তিন ম্যাচে মোট ৩৬ রান করতে পেরেছেন লিটন। পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগাতে ব্যর্থ তো হয়েছেনই, এই রান করতে ৪৩ বল খেলে দলকে প্রতি ম্যাচে পিছিয়েও দিয়েছেন তিনি। তবু শেষ দুই ম্যাচের স্কোয়াডে টিকে গেছেন ২৯ বছর বয়সী ওপেনার।
গত বছরের মার্চে আয়ারল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচ থেকেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ছন্দে নেই লিটন। এই ১৪ মাসে খেলা দশ ম্যাচের একটিতেও পঞ্চাশের দেখা পাননি স্টাইলিশ ওপেনার। চল্লিশ ছুঁয়েছেন স্রেফ একবার। সব মিলিয়ে করেছেন ১৭৬ রান। স্ট্রাইক রেটও মাত্র ১০১.১৩।
অবশ্য শুধু টি-টোয়েন্টিই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে সব সংস্করণেই নিশ্চুপ তার ব্যাট। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ৬৬ রানের পর তিন সংস্করণেই আর ফিফটির ছোঁয়া পাননি। এই সময়ে ২১ ইনিংসে তার সংগ্রহ ৩৪৫ রান। চারবার ফিরেছেন শূন্য রানে। দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে থেমে গেছেন ১০ বার।
শুধু রানের খরাই নয়, বেশ কয়েকটি ম্যাচে তার আউট হওয়ার ধরনও চোখে লেগেছে বাজেভাবে।
২২ গজে লিটনকে যে রূপে দেখা যাচ্ছে, তা উপেক্ষা করতে পারছেন না প্রধান নির্বাচকও। তবে বিশ্বকাপের দুয়ারে দাঁড়িয়ে তাকে দূরে সরিয়ে দেওয়াও যৌক্তিক মনে করছেন না তারা। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বললেন, লিটনকে ছন্দে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে এই সময়টায়।
“অবশ্যই (শেষ দুই ম্যাচে) লিটন কুমার দাসকে নিয়ে কাজ করা হবে। সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কারণ এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের দায়িত্বটা সহজ নয়। আমরা চাই যে, যত দ্রুত সম্ভব সে যেন ফিরে আসতে পারে। তাহলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা।”
“বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞতার একটা আলাদা মূল্য আছে। যদিও অভিজ্ঞতার সঙ্গে তার বর্তমান ছন্দ একই রেখায় যাচ্ছে না। যেটা অবশ্যই চিন্তিত হওয়ার একটা কারণ। সেখান থেকে যত দ্রুত সম্ভব তাকে (ছন্দে) ফেরত আনা যায়, সেজন্য এই ম্যাচগুলোতে একাদশে না রাখলেও, তাকে নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করা হবে। চট্টগ্রামে যেভাবে সৌম্য সরকারকে নিয়ে কাজ করা হয়েছে। তার ফিটনেস ও ব্যাটিং নিয়ে কাজ করবে আমাদের কোচিং স্টাফ।”
লিটনকে দলে রাখতে গিয়ে কপাল পুড়েছে পারভেজ হোসেনের। কোনো ম্যাচ না খেলেই বাদ পড়েছেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার। বিসিবির ভিডিওবার্তায় নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক অবশ্য বলেছেন, সৌম্য সরকার ফেরায় জায়গা হারিয়েছেন পারভেজ।
প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফও অনেকটাই নিশ্চিত করে দিলেন, শেষ দুই ম্যাচের একাদশে লিটনের জায়গায় খেলবেন পায়ের চোট কাটিয়ে ফেরা সৌম্য। আর লিটনকে নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করবেন কোচিং স্টাফের সদস্যরা।
“আমাদের কোচিং স্টাফ যেন নিবিড়ভাবে কাজ করতে পারে, এ কারণেই তাকে দলের সঙ্গে রেখে দেওয়া। তাকে হয়তো আমরা ছেড়ে দিতে পারতাম। কিন্তু এককভাবে তো কিছু করা সম্ভব নয়। তার যে বিশ্রাম দরকার তেমনও না। প্রিমিয়ার লিগের সময় তো বিরতি পেয়েছে। তবে ম্যাচ খেলা থেকে বিরতি পেতেও পারে সৌম্য সরকার আসায়। অন্তত তার উন্নতি নিয়ে যতটা সম্ভব কাজ করা হবে।”
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল গত ১ মে। সময়মতোই আইসিসির কাছে বিশ্বকাপ স্কোয়াড জমা দিয়েছে বিসিবি। তবে সেটি প্রকাশ্য করেনি বোর্ড। ২৫ মে পর্যন্ত দলে পরিবর্তনের সুযোগ আছে কোনো কারণ দেখানো ছাড়াই। তাই জিম্বাবুয়ে সিরিজ শেষে একেবারেই চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হবে দল।
সেই দলে লিটনের থাকাটাই অনুমেয়। এজন্যই তাকে ছন্দে ফেরানোর বাড়তি চেষ্টা কি না, জানতে চাওয়া হলে মুচকি হাসিতে প্রধান নির্বাচক বললেন, “তা এখনই বলব না। আগামী ১২-১৩ মে বিশ্বকাপের দল ঘোষণার সময় এই বিষয়ে কথা হবে।”