Published : 02 May 2025, 09:12 PM
বলের রঙ সাদা হোক বা লাল, গায়ের পোশাক হোক সাদা বা রঙিন, দেশে কিংবা বিদেশে, জাসপ্রিত বুমরাহর ঔজ্জ্বল্য থাকে একইরকম। চোট কাটিয়ে ফিরে আইপিএলেও জাদুকরি বোলিং উপহার দিয়ে চলেছেন ভারতের তারকা পেসার। তার দাপুটে পারফরম্যান্স ও সব সংস্করণে সামগ্রিক প্রভাব বিবেচনা করে তাকে ‘বোলিংয়ের স্যার ডন ব্র্যাডম্যান’ অভিহিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং গ্রেট অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির পুরস্কার ‘পার্পল ক্যাপ’ জয়ের লড়াইয়ে বুমরাহকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে ম্যাচে তার চার ওভারে যে প্রভাব তিনি ফেলেন, তা দলের জন্য অনেক বড় কিছু। আসরে এখন পর্যন্ত খেলা সাত ম্যাচে বুমরাহ বল করেছেন ৬৯টি। প্রতি ম্যাচে গড়ে প্রায় ১০টি ডট বল করেছেন, যা ওভারপ্রতি আটের কম রান দেওয়া বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। খালিল আহমেদ ও জশ হেইজেলউড ডট বলের শতাংশে বুমরাহর চেয়ে এগিয়ে থাকলেও, ওই দুজন ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন আটের বেশি। সেখানে বুমরাহ দিয়েছেন ৬.৯৬ করে।
পিঠের চোটের কারণে আসরে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের প্রথম চারটি ম্যাচে বুমরাহ খেলতে পারেননি, যার তিনটিতেই হারে দল। ৩১ বছর বয়সী এই পেসার ফেরার পর থেকে সাত ম্যাচের ছয়টিই জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছে পাঁচবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা।
নিজের প্রথম দুই ম্যাচে বুমরাহ খুব একটা প্রভাব রাখতে পারেননি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ২৯ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে একটি উইকেট পেলেও রান দিয়েছিলেন ৪৪। এরপর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সবশেষ দুটি ম্যাচে আট ওভারে মাত্র ৩৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট শিকার করেছেন এই তারকা।
জয়পুরে বৃহস্পতিবার রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে স্রেফ ১৫ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে আলোচনায় সব সংস্করণে বুমরাহর প্রভাব বোঝাতে সাবেক কিপার-ব্যাটসম্যান গিলক্রিস্ট ভারতীয় পেসারকে তুলনা করেন ডন ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে, যিনি সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে একরকম অবিসংবাদিত।
“সে সম্ভবত সর্বকালের সেরা বোলার, ফাস্ট বোলার। যখন পরিসংখ্যানে চোখ রাখবেন, দেখবেন কোন কোন পরিস্থিতিতে সে তার বোলিং দক্ষতা দেখিয়ে চলেছে, তখন তাকে মনে হবে ব্র্যাডম্যানের মতোই, যিনি অন্যদের তুলনায় অনেক এগিয়ে, তেমনি বুমরাহও অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশন ও পিচে যেভাবে সে বোলিং করে, তাতে বোঝা যায় আমরা সত্যিই বড় মাপের এক খেলোয়াড়কে দেখছি।”
গত অস্ট্রেলিয়া সফরে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ভারত ভালো করতে না পারলেও বুমরাহ বল হাতে ছিলেন দারুণ উজ্জ্বল। শেষ টেস্টে চোটে পড়ার আগে সিরিজে ৩২ উইকেট শিকার করেন তিনি স্রেফ ১৩.০৬ গড়ে।
বুমরাহর বিপক্ষে খেলার মতো ভয় অস্ট্রেলিয়ানরা কখনও কোনো ভারতীয় বোলারকে পেয়েছিল কি না, এমন প্রশ্নে গিলক্রিস্টের উত্তর, “একজন ভারতীয় পেসার, যে দারুণ ধারাবাহিক, বিশেষ করে গত অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মে যেমনটা দেখেছি… না, (বুমরাহর মতো) আমার মনে হয় না (আগে দেখেছি)।”
“ওই সিরিজে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় আমরা অবাক হয়ে দেখছিলাম। এখন আবার, জানি এটা ভিন্ন সংস্করণ, তবে সব সংস্করণের সেরা বোলার সে, এটা নিয়ে তর্ক করার কিছু নেই।”