পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ
বাঁহাতি এই স্পিনারের চমৎকার বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট।
Published : 27 Jan 2025, 06:24 PM
সিরিজের প্রথম টেস্টে ১০ উইকেট নিয়েও হারের যন্ত্রণায় পুড়তে হয়েছিল জোমেল ওয়ারিক্যানকে। দ্বিতীয় টেস্টে ৯ উইকেট নিয়ে দলের জয়ের নায়ক তিনিই। তবে শুধু বোলিংই নয়, ব্যাটে হাতেও যেভাবে আলো ছড়িয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিনার, তাকে নিয়ে খুবই খুশি ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়কের চোখে, পুরো সিরিজে ওয়ারিক্যান ছিলেন ‘অসাধারণ।’
মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টে আড়াই দিনেই পাকিস্তানকে সোমবার ১২০ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৪ বছরের বেশি সময় পর পাকিস্তানে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। যেখানে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন ওয়ারিক্যান।
এই সফরের আগে ১৭ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ওয়ারিক্যানের উইকেট ছিল মোট ৫৪টি। ম্যাচে ১০ উইকেট তো দূরের কথা, ইনিংসে ৫ উইকেটও ছিল না একবারও।
এই সিরিজে মুলতানে স্পিন সহায়ক উইকেটে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩টির পর দ্বিতীয় ইনিংসে স্রেফ ৩২ রানে ৭ উইকেট নেন তিনি। একই মাঠে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে নেন ৪ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭ রানে ৫টি। ম্যাচ-সেরার পাশাপাশি জেতেন সিরিজ-সেরার পুরস্কারও।
তার ১৯ উইকেট পাকিস্তানের মাটিতে দুই টেস্টের সিরিজে সফরকারী কোনো বোলারের সর্বোচ্চ। আর দুই ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ।
স্মরণীয় জয়ের পর ৩২ বছর বয়সী এই বোলারকে প্রশংসায় ভাসান অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট।
“জোমেল ছিল অসাধারণ। প্রথম বল থেকেই সে যেভাবে বোলিং করেছে এবং (প্রতিপক্ষের ওপর) চাপ তৈরি করেছে, তা দেখা ছিল অসাধারণ।”
ব্যাট হাতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন ওয়ারিক্যান। ৮৫ রান করে সিরিজের চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোরার তিনি। আরেক স্পিনার গুডাকেশ মোটি করেন ৯২ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বোচ্চ দুই স্কোরারই বোলার! এই তথ্যই বলে দিচ্ছে, মুলতানে ব্যাটিং করা কতটা কঠিন ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য এবং এই দুজনের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নোমান আলির হ্যাটট্রিকে এক পর্যায়ে ৩৮ রানে ৭ ও ৯৫ রানে ৯ উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর শেষ উইকেটে ৬৮ রানের অসাধারণ এক জুটি গড়েন মোটি ও ওয়ারিক্যান। সেটিই পরে হয়ে রইল মহামূল্য।
ওয়ারিক্যানের ব্যাটিংয়ের কথাও তাই আলাদা করে বললেন ব্র্যাথওয়েট। এই সিরিজে সুযোগ পেয়ে যেভাবে তিনি নিজেকে মেলে ধরেছেন, তাকে নিয়ে গর্বিত ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।
“আমার মনে হয়, ব্যাট হাতেও সে দুর্দান্ত কাজ করেছে। তবে বোলিংয়ের কথা বললে, আমি জানি সে বছরের পর বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছে। সে দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিল। তবে ভালো লাগছে যে, সে সুযোগ পেয়েছে এবং সেটা কাজে লাগিয়েছে। তার জন্য আমি খুব গর্বিত, অসাধারণ ছিল সে।”
গত বছরের জানুয়ারিতে ব্রিজবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অসাধারণ এক জয় পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রায় ২১ বছর পর আর অস্ট্রেলিয়ার মাঠে প্রায় ২৭ বছর পর তাদের টেস্ট জয়।
ঠিক এক বছর পর আরেকটি স্মরণীয় জয়ে পাকিস্তানের মাটিতে দীর্ঘ খরা কাটাল তারা। ব্র্যাথওয়েট বললেন, ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে তাদের মানিয়ে নিতে পারার সামর্থ্য প্রমাণ করে এটিই।
“এটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ জয়। এটাই প্রমাণ করে যে, আমরা যদি বিশ্বাস রাখি এবং আমাদের পরিকল্পনা ঠিক থাকে, তাহলে যেকোনো কন্ডিশনেই আমরা জিততে পারি। এখানে এসে, পাকিস্তানে খেলে, টেস্ট ম্যাচ জেতা কখনই সহজ নয়, তাই এই জয়টা অসাধারণ।”