প্রায় ১০ বছর পর বাংলাদেশে খেলতে এসেই বিপিএল অভিষেকে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যান অব দা ম্যাচ নিউ জিল্যান্ডের এই ক্রিকেটার।
Published : 10 Feb 2024, 06:34 PM
অনেক বছর ধরেই বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি খেলে বেড়ান জিমি নিশাম। নিউ জিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিকে অগ্রাহ্য করে ক্রিকেট বিশ্বের নানা প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে গোটা বিশেক দলে তার খেলা হয়ে গেছে। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্যি, টি-টোয়েন্টির এই যাযাবর এবারই প্রথম পা রাখলেন বিপিএলে।
নিজের ছাপ রাখতে তিনি সময় নিলেন না একদমই। বিধ্বংসী ব্যাটিং আর কার্যকর বোলিং মিলিয়ে সেই চেনা রূপেই আবির্ভূত হলেন প্রথম ম্যাচে। বিপিএল অভিষেকেই ম্যান অব দা ম্যাচ হয়ে বড় ভূমিকা রাখলেন তিনি রংপুর রাইডার্সের জয়ে।
বিপিএলে আসার আগে এসএ টোয়েন্টিতে খেলেছেন তিনি প্রিটোরিয়া ক্যাপিটালসের হয়ে। বিপিএল খেলতে ঢাকায় পা রেখেছেন শুক্রবার সকালে। এ দিনই দলের সঙ্গে অনুশীলনও করেছেন। শনিবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ম্যাচে মেলে ধরেছেন নিজেকে। ব্যাট হাতে পাঁচে নেমে খেলেছেন ২৬ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংস। পরে বোলিংয়ে ৩২ রানে উইকেট শিকার করেন দুটি।
শুরুটা ভালো হলেও পরে একটু থমকে গিয়েছিল রংপুরের রানের গতি। ১০ ওভারে রান ছিল ৯৯। পরের ৫ ওভারে আসে ৩৭ রান। কিন্তু নিশাম ও নুরুল হাসান সোহানের ঝড়ে শেষ ৫ ওভারে রান আসে ৭৫। চতুর্থ উইকেটে ৪৬ বলে ৮৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন এই দুজন।
বাংলাদেশে আগে স্রেফ দুবার খেলেছেন নিশাম। ২০১৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে সিরিজে ও পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। প্রায় ১০ বছর পর নেমেই যেভাবে এই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিলেন, বিস্মিত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তিনি নিজে অবশ্য বিস্ময়ের উপকরণ খুব একটা পাচ্ছেন না। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বললেন, এই সময়ের ক্রিকেটে এমন কিছুই স্বাভাবিক।
“এটা আসলে নতুন কিছু নয়। গত কয়েক বছরে ক্রিকেট অনেক বিবর্তিত হয়ে গেছে। অনেক বেশি ভ্রমণ করতে হয় এখন, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলো খেলতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছুটোছুটি করতে হয় সবসময়। আগেও এটা করেছি আমি, এমন নয় যে আমি অভ্যস্ত নই। এখানে ব্যাপারটি হলো আসলে আগের অভিজ্ঞতা থেকে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া এবং প্রথম বল থেকেই বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করার চেয়ে নিজেকে ৫-১০ বল সময় দেওয়া।”
“আমাদের ওপেনিং ব্যাটসম্যানরা ও শীর্ষ তিন-চার ব্যাটসম্যান যেভাবে প্রথম ১০ ওভারে আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছে, সেটি আমাকে সুযোগ করে দিয়েছে শুরুতে একট সময়ে নিয়ে পরে চালিয়ে খেলার। দলীয় খেলারই অংশ এটি।”
কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার জন্য স্থানীয় ক্রিকেটাররা বা কোচিং স্টাফ, অ্যানালিস্টরা তো আছেনই। তবে পেশাদার হিসেবে নিশাম মনে করেন, মূল দায়িত্ব এখানেই ক্রিকেটারদেরই।
“বিশ্বের সব জায়গায়ই ব্যাপারটি একই রকম। স্কাউটিং মিটিং হয়ে থাকে, প্রতিপক্ষ বোলার ও ব্যাটারদের ভিডিও বিশ্লেষণ করা হয়। তবে সত্যি বলতে, পেশাদার থাকার ব্যাপারটি বেশির ভাগটুকুই নিজের ওপর, নিজের প্রস্তুতিটুকু নেওয়া এবং জানা যে, সামনে কী অপেক্ষায়। এটা কোচ কিংবা অধিনায়ক-সহ-অধিনায়কদের দায়িত্ব নয় যে আমাকে বলবে কীভাবে একটি ম্যাচের প্রস্তুতি নিতে হবে। এটা ব্যক্তিগত দায়িত্ব।”
“এই যুগে আমাদের হাতের নাগালেই প্রযুক্তি আছে দলগুলিকে বিশ্লেষণ করার জন্য। কিছু ক্রিকেটার আছে, যাদের সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা আছে, কিছু ক্রিকেটার সম্পর্কে নেই। কিন্তু ব্যাপারটি হলো নিজের খেলাটুকু খেলা, নিজের ওপর আস্থা রাখা এবং আজকে আমার জন্য তা কাজে লেগেছে।”