ফরচুন বরিশালের প্রথম শিরোপা জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসরের সেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেলেন তামিম ইকবাল।
Published : 01 Mar 2024, 09:42 PM
পুরোনো চোটের সঙ্গে লড়াই, বিশ্বকাপে না থাকা ঘিরে বিতর্ক, জাতীয় দলে ভবিষ্যৎ নিয়ে মাঠের বাইরের প্রসঙ্গেই বেশি আলোচিত ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে মাঠের লড়াই শুরুর পর সেগুলোর ছাপ নিজের ব্যাটে পড়তে দেননি অভিজ্ঞ ওপেনার। আসরজুড়ে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তিনিই পেলেন টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি।
বিপিএলে বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম শিরোপা জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিম। ফরচুন বরিশালের জার্সিতে তিনি করেছেন আসরের সর্বোচ্চ ৪৯১ রান। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তিনি খেলেছেন ২৬ বলে ৩৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।
টুর্নামেন্টের এক আসরে তামিমের চেয়ে বেশি রানের কৃতিত্ব আছে শুধু দুজন ব্যাটসম্যানের- রাইলি রুশো (২০১৯ সালে ৫৫৮ এবং ২০২০ সালে ৪৯৫ রান) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (২০২৩ সালে ৫১৬ রান)।
বরিশালকে চ্যাম্পিয়ন করার পথে নিজেকেও ছাড়িয়ে গেছেন তামিম। ২০১৬ সালে চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে ৪৭৬ রান করেছিলেন তারকা বাঁহাতি ওপেনার। সেবার ১৩ ম্যাচে ৬টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এবার ফিফটি ছুঁয়েছেন তিন ম্যাচে।
খেলোয়াড় হিসেবে এর আগেও বিপিএল জিতেছেন তামিম। ২০১৯ সালে ফাইনাল ম্যাচে ৬১ বলে ১৪১ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ফাইনাল সেরার স্বীকৃতিও পেয়েছিলেন তিনি। এবার অধিনায়ক হিসেবে প্রথম শিরোপা জেতার আসরে প্রথমবার পেলেন টুর্নামেন্ট সেরার স্বীকৃতিও।
সেরার দৌড়ে তামিমের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। ফাইনাল ম্যাচে বড় কিছু করতে পারলে হয়তো তার হাতেই উঠত এই পুরস্কার। কিন্তু ১০ বলে ১৫ রান করে ফেরেন ২৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। তার দল কুমিল্লাও পায়নি বড় পুঁজি।
ফাইনালে হৃদয় যা পারেননি সেটিই করেছেন তামিম। ১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বরিশালের প্রয়োজন ছিল ইতিবাচক শুরু। ৩টি করে চার ও ছক্কার ইনিংসে দলকে সেই দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করেন বরিশাল অধিনায়ক।
টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে অবশ্য বড় রানের খোঁজে ধুঁকছিলেন তামিম। প্রথম ৮ ম্যাচে ৫ বার ২০ ছুঁয়েও পঞ্চাশ করতে পারেননি তিনি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৪৯ রান করতে তিনি খেলেন ৪৬ বল।
দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ৪৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস পঞ্চাশের অপেক্ষা শেষ করেন বরিশাল অধিনায়ক। পরে প্লে-অফ নিশ্চিত করার ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে তিনি করেন ৪৮ বলে ৬৬ রান।
পরে এলিমিনেটর ম্যাচে ৪৩ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে চলতি আসরে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৪শ রান পূর্ণ করেন তিনি। একইসঙ্গে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলের ভিন্ন ৪টি আসরে ৪শ রান করারও কৃতিত্ব দেখান তামিম।
তামিম-হৃদয় ছাড়াও টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাকিব আল হাসান ও শরিফুল ইসলাম। ব্যাটিংয়ে ১৫৮.৩৮ স্ট্রাইক রেটে ২৫৫ রানের পাশাপাশি আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট নেন সাকিব। কিন্তু রংপুর রাইডার্স দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার থেকে বিদায় নেওয়ায় অনেকটাই কমে যায় তার সম্ভাবনা।
দুর্দান্ত ঢাকার টানা ১১ পরাজয়ের বিব্রতকর রেকর্ডের আসরে শরিফুল ইসলাম ছিলেন উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। নিয়মিত সুইংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখেন তিনি। ১২ ম্যাচে ২২ উইকেট নিয়ে তিনিই এবারের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। কিন্তু দলের ব্যর্থতায় পিছিয়ে পড়েছেন বাঁহাতি এই পেসার।