চার ম্যাচে কোনো জয় নেই, সিলেট স্ট্রাইকার্সের জাকির হাসান বললেন, ম্যাচে কোনো কিছুই ঠিক হচ্ছে না তাদের।
Published : 29 Jan 2024, 06:37 PM
বিপিএলে সিলেট পর্বের প্রথম দিনের ঘটনা। মাঠে তখন খেলছিল রংপুর রাইডার্স ও খুলনা টাইগার্স। কিন্তু গ্যালারি থেকে কিছুক্ষণ পরপর ভেসে আসছিল 'সিলেট', 'সিলেট' স্লোগান। সন্ধ্যার ম্যাচের জন্য দুপুর থেকেই গোলাপি হয়ে গিয়েছিল গ্যালারি। উপচেপড়া সমর্থনে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স।
স্রেফ দুই দিনের ব্যবধানে বদলে গেল পুরো পরিস্থিতি। ঘরের মাঠে সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রায় ফাঁকা গ্যালারির সামনেই খেলল সিলেট। তবে দুই দিনে বদলায়নি একটি চিত্র। প্রথম দিন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পর এবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষেও হেরেছে গত আসরের রানার্স আপরা।
শুধু ঘরের মাঠের দুই ম্যাচই নয়, চলতি আসরে সিলেট হেরেছে টানা চার ম্যাচ। কখনও ব্যাটিং ব্যর্থতা, আবার কখনও বোলারদের কারণে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়ে মাঠ ছাড়তে হচ্ছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দলকে। অনুশীলনে সব ঠিকঠাক থাকলেও মাঠে যথাযথ বাস্তবায়নের অভাবকে এই অবস্থার কারণ হিসেবে দেখছেন দলের একমাত্র ছন্দে থাকা ক্রিকেটার জাকির হাসান।
চট্টগ্রামের বিপক্ষে হারের ম্যাচে অবশ্য জাকিরের দায়ও কম নয়। শুরুতে ২ উইকেট পড়ার পর চাপ সামাল দিয়ে হ্যারি টেক্টরের সঙ্গে জুটি গড়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। উইকেটে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে ত্রিশ পেরিয়েছেন তিনি। কিন্তু দলের চাহিদা মিটিয়ে বড় করতে পারেননি নিজের ইনিংস।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাই দায় নিজের ওপরও নিলেন ২৬ বলে ৩১ রান করে আউট হওয়া জাকির।
“আমরা আসলে নিজেদের জায়গা থেকে ভালো করতে পারছি না। এটিই মূল বিষয়। সবাই ব্যাটিং অনুশীলন করছে, চেষ্টা করছে। ওখানে সব ঠিক আছে। কিন্তু জায়গামতো আমরা ওই পারফরম্যান্সটা দিতে পারছি না। এজন্য এবার ফল আসেনি।”
টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী দিন জাকিরের ৪৩ বলে ৭০ রানের সৌজন্যে সিলেট দাঁড় করেছিল ১৭৭ রানের পুঁজি। কিন্তু বোলাররা সেদিন পারেননি নিজেদের কাজ করতে। ৯ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় চট্টগ্রাম।
পরের দুই ম্যাচে দারুণ করেন বোলাররা। স্রেফ ১২০ রানের পুঁজি নিয়েও সম্ভাবনা জাগায় সিলেট। বাবর আজমের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয় পায় রংপুর রাইডার্স।
এরপর সিলেটে প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে তারা আটকে রাখে ১৩০ রানে। সেদিন ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সিলেট গুটিয়ে যায় স্রেফ ৭৮ রানে। জাকির একাই করেন সেখানে ৪১ রান। সোমবারের ম্যাচে তো ব্যাটিং-বোলিং কিছুই ভালো হয়নি। চট্টগ্রাম পায় ৮ উইকেটের জয়।
দলের এমন বিবর্ণ পারফরম্যান্সের পর জাকিরও মেনে নিলেন নিজেদের সার্বিক ব্যর্থতা।
“কিছুটা বলতে পারেন (কিছুই কাজ হচ্ছে না)। ব্যাটিংয়ে আমরা ভালো স্কোর দিতে পারিনি। এর আগের ম্যাচে বোলাররা ভালো বল করেছিল কিন্তু আমরা ওটা তাড়া করতে পারিনি। হয়তো দ্রুত উইকেট যাওয়ার কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। তবে এখনও আমরা ফিরতে পারি, সেই সুযোগ আছে। আশা করি, সামনের ম্যাচ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”
গত বছর সিলেটের ভালো করার পেছনে বড় ভূমিকা রাখেন দেশি ব্যাটসম্যানরা। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৫১৬ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এবার এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে তার সংগ্রহ মোটে ৬০ রান।
গত আসরে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা তাওহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিমকে এবার দলে রাখতে পারেনি সিলেট। এবার দলে আসা মোহাম্মদ মিঠুন, ইয়াসির আলি চৌধুরিরাও পারছেন না প্রত্যাশা পূরণ করতে।
জাকিরের মতে, দলের এমন পারফরম্যান্সের ছাপই হয়তো পড়েছে গ্যালারির দর্শক উপস্থিতিতেও।
“গত বছর পারফর্ম করেছি দেখেই দর্শকরা এসেছে। এখানেও প্রথম ম্যাচে এসেছিল। আজকে আমার মনে হয়, দিনের ম্যাচ বলেই হয়তো কম এসেছে। আমরাও যদি নিজেদের জায়গা থেকে পারফর্ম করতে পারি, তাহলে আবার দর্শকরা আসবে।”
“আসলে হার তো সবসময়ই কষ্টের, হার কখনোই সুখের না। সিলেটে আমাদের ঘরের দর্শক। গতবার ভালো করেছিলাম এখানে। কিন্তু এবার আশা অনুযায়ী ভালো করতে পারছি না। চেষ্টা করছি লড়াই করে ঘুরে দাঁড়াতে।”