ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় দিনে ফল হয়েছে স্রেফ এক ম্যাচে, পরিত্যক্ত অন্য দুইটি।
Published : 19 Mar 2023, 05:35 PM
সারাদিনই থাকল মেঘের ঘনঘটা। থেমে থেমে কিছুক্ষণ পরপর নামল বৃষ্টি। যার প্রভাব পড়ল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। রোববারের তিন ম্যাচের দুটিতেই হলো না ফল। অন্য ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারাল আবাহনী লিমিটেড।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে ফল হওয়া ম্যাচেও খেলা হয়েছে স্রেফ ৫৪ ওভার। ডাক-ওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে ১০ রানের জয় পেয়েছে আবাহনী। আসরে এটি তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। শাইনপুকুরের প্রথম হার।
বৃষ্টিতে প্রায় তিন ঘণ্টা পর শুরু হয় খেলা। প্রতি ইনিংস ৩৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ১৯৬ রান করে শাইনপুকুর।
জবাবে আবাহনী ১ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রান করার পর আলোকস্বল্পতায় আর খেলা সম্ভব হয়নি। তখন তারা ডিএলএস পদ্ধতিতে ১০ রানে এগিয়ে থাকায় তাদেরকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
আবাহনীর এই জয়েও বড় ভূমিকা এনামুল হকের। ১ চার ও ৪ ছয়ে ৬৪ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন তিনি। আগের ম্যাচে খেলেছিলেন ১২৩ রানের ইনিংস।
এনামুল এদিন শুরুতে আলোচনার ছিলেন আরেক কারণে। মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের যোগ দিতে। যে কারণে শুরু থেকে ফিল্ডিং করতে পারেননি তিনি। শাইনপুকুরের ইনিংসের শেষ দিকে ফিল্ডিংয়ে নামেন এনামুল। পরে দলের হয়ে ওপেনিংও করেন।
এই বিষয়ে ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ শিপার জানিয়েছেন, অনুমতি নিয়েই মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
"বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা এনামুলকে অনুমতি দিয়েছি। কারণ তার জীবনের এই দিনটি আর আসবে না। প্রতিপক্ষ দলেরও এই বিষয়ে কোনো আপত্তি ছিল না। তাই লম্বা সময় ফিল্ডিং না করলেও এনামুলের ব্যাটিংয়ে নামতে সমস্যা হয়নি।"
এনামুলের ফিফটি ছাড়া নাইম শেখের ব্যাট থেকে আসে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৪৮ বলে ৪৩ রান।
শাইনপুকুরকে দুইশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ এনে দেওয়ার কৃতিত্ব সাজ্জাদুল হক রিপনের। ৩ চার ও ২ ছয়ে ২৪ বলে ৩৬ রান করেন তিনি। ফরহাদ রেজা খেলেন ৯ বলে ১৯ রানের ক্যামিও।
বিপিএলে দারুণ বোলিংয়ের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হওয়া তানভির ইসলাম ৬ ওভারে ২৭ রান খরচায় নিয়েছেন ৩ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনারের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৩৩ ওভারে ১৯৬/৮ (অভিষেক ৩৩, খালিদ ৩৫, অমিত ১১, সঙ্গিত ১৫, আমিনুল ২৬, সাজ্জাদুল ৩৬, মাসুম ১২*, ফরহাদ ১৯, মেহেদি ১; সাইফ উদ্দিন ৫-০-৩১-২, নাহিদুল ৫-০-৩৬-০, তানজিম ৬-০-৪৩-০, মোসাদ্দেক ৬-০-২৪-০, তানভির ৬-০-২৭-৩, রাকিবুল ৫-০-৩৩-২)
আবাহনী লিমিটেড: ২১ ওভারে ১১৪/১ (এনামুল ৫৪*, নাইম ৪৩, জয় ১৩*; মাসুম ২-০-২৯-০, নাবিল ৭-০-২৯-০, সঙ্গিত ৪-০-২০-০, হাসান ৪-০-১৯-০, আমিনুল ৩-০-১৪-১, মেহেদি ১-০-৩-০)
ফল: ডিএলএস পদ্ধতিতে আবাহনী লিমিটেড ১০ রানে জয়ী
বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া ম্যাচে মুমিনুলের ঝড়
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে রুপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ। তার আগে ঝড় তুলেছেন রুপগঞ্জ টাইগার্সের ওপেনার মুমিনুল হক।
বৃষ্টির কারণে প্রায় পৌনে ৪ ঘণ্টা পর শুরু হয় খেলা। ম্যাচ নেমে আসে ২১ ওভারের ইনিংসে।
রুপগঞ্জ টাইগার্স ৫ উইকেট হারিয়ে ২২২ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায়। এরপর ফের বৃষ্টি নামলে ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগই পায়নি মোহামেডান।
২১ ওভারের ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিংই করেন মুমিনুল। আগের ম্যাচে ৬৫ রান করতে ১০২ বল খেলা ব্যাটসম্যান এদিন স্রেফ ৪১ বলে করেন ৭৪ রান।
১১ চার ও ১ ছক্কা হাঁকান তিনি। ৩১ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর আরিফুল হকের এক ওভারে টানা চারটি ৪ মারেন তিনি। খালেদ আহমেদের বলে স্কুপ করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন মুমিনুল। তখনও বাকি ছিল ইনিংসের ৭.৫ ওভার।
মুমিনুল ছাড়াও আগ্রাসী ব্যাটিং করেন ভারতীয় আমানদিপ খারে ও শামীম হোসেন। ৮ চার ও ৩ ছয়ে ৩৬ বলে ৬৩ রান করেন আমানদিপ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া শামীম খেলেন ২১ বলে ৩৭ রানের ইনিংস। ২ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। শুভাগত হোমের বলে স্লগ সুইপ করে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের দোতলার কাছাকাছি বল পাঠান তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
আগের ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের কাছে ১২৮ রানের বড় ব্যবধানে হারা মোহামেডান বৃষ্টির কল্যাণে লিগে তাদের প্রথম পয়েন্ট পেল। রুপগঞ্জ টাইগার্সও পেল প্রথম পয়েন্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রুপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ২১ ওভারে ২২২/৫ (মুমিনুল ৭৪, ইমরানুজ্জামান ২৫, আমানদিপ ৬৩, শামীম ৩৭, আলাউদ্দিন ১১, সালমান ১*, নাইম ৩*; রুয়েল ৫-০-৪০-১, খালেদ ৪-০-২৯-২, শুভাগত ২-০-২৮-০, অনুশ্তাপ ৩-০-৩৪-০, মুশফিক ৩-০-৪২-০, আরিফুল ১-০-১৯-০, সৌম্য ৩-০-২৭-১)
ফল: বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত
বিকেএসপিতেও জিতল বৃষ্টি
মিরপুরের মতো বিকেএসপিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও ঢাকা লেপার্ডসের ম্যাচেও বৃষ্টির কারণে ফল আসেনি।
ওভার কমে যাওয়া ম্যাচে ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৭ রান করে গাজী গ্রুপ। জবাবে ঢাকা লেপার্ডস ১৩.১ ওভার ব্যাটিং করার পর আর খেলা চালানো সম্ভব হয়নি।
লিস্ট 'এ' ম্যাচের নিয়ম অনুযায়ী দুই দল ন্যুনতম ২০ ওভার করে ব্যাটিং না করায় ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন মেথড ব্যবহার করা যায়নি এই ম্যাচে।
বৃষ্টির কারণে প্রায় ২ ঘণ্টা বিলম্বে ম্যাচ শুরুর সময় ইনিংসপ্রতি ৪০ ওভার করে নির্ধারণ করা হয়।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা গাজী গ্রুপের ইনিংসের ১৯ ওভারের সময় আবার নামে বৃষ্টি। লম্বা বিরতির পর নতুন করে ইনিংসপ্রতি ন্যুনতম ২০ ওভার করে খেলার সিদ্ধান্ত হয়।
ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে লেপার্ডসের সামনে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০ ওভারে ১৩৩ রান। রান তাড়ায় ১৩.১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৭৭ রান করে লেপার্ডস।
ঝড়ো শুরু করা পিনাক ঘোষ ৭ চারে ২৭ বলে ৪০ রান করেন।
দুই ওভারে স্রেফ ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন সুমন খান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ২০ ওভারে ৯৭/৩ (মেহেদি ৯, হাবিবুর ১৭, ফরহাদ ১৫, রবি তেজা ৩৩*, মাহমুদুল ১৮; সালাউদ্দিন ৪-০-১৭-০, সোহেল ৪-০-২২-১, চতুরাঙ্গা ৪-০-১৪-১, সোহরাওয়ার্দি ৫-০-২১-১, মইন ২-০-১৪-০, রায়হান ১-০-৮-০)
ঢাকা লেপার্ডস: ১৩.১ ওভারে ৭৭/৪ (পিনাক ৪০, জসিম ০, জুনায়েদ ১১, রকিবুল ১২*, সাব্বির ৮, মইন ২*; সুমন ২-০-৮-২, এনামুল ৩-০-২২-১, রবি তেজা ১.১-০-১০-০, কাজি অনিক ৩-০-১৩-০, হুসনা হাবিব ৩-০-১৫-১)
ফল: বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত