চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ দলের ব্যর্থতার পেছনে নিজেদের দায় মেনে নিচ্ছে বিসিবি, সামনের একটি সভায় সারাদিন আলোচনা করা হবে শুধু জাতীয় দল নিয়েই।
Published : 04 Mar 2025, 08:43 AM
জাতীয় দলের পারফরম্যান্স ভালো থাকলে দেশের ক্রিকেটের সবকিছু ভালো। এখানে টানাপোড়েন থাকলে সব গোলমাল। বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের উপলব্ধি এটি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ব্যর্থতার পর এখন জাতীয় দল নিয়ে উঠেপড়ে লাগা হবে বলে জানালেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন। সামনের একটি সভায় সারাদিন শুধু জাতীয় দল নিয়েই আলোচনা হবে বলে জানলেন এই বিসিবি পরিচালক।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যাওয়ার আগে এবার বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলেছিলেন, প্রস্তুতি খুব ভালো হয়নি দলের। তবে দেশ ছাড়ার আগে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, তাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে কোচের তুলে ধরা বাস্তবতার আঘাতে। প্রথম দুই ম্যাচ হেরেই নিশ্চিত হয়ে গেছে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়।
টুর্নামেন্ট শেষে দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়ে আক্ষেপ করে বলেন, বিপিএল আরও ১৫ দিন আগে শেষ হলে জাতীয় দলের জন্য ভালো হতো।
জাতীয় দলের প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাপারগুলি দেখার দায়িত্ব বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের। এই বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন এখানে নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নিলেন। নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরলেন তিনি।
“আগেও বলেছি বোধহয়, আমাদের আদর্শ প্রস্তুতি হয়নি। দায় তো অবশ্যই আমাদের যে, আমরা ঠিকমতো পরিকল্পনা করতে পারিনি। তবে আমি যখন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব নিয়েছি, সেটা খুবই সাম্প্রতিক সময়ে। আমার সুযোগ ছিল না, সরাসরি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের স্বার্থ দেখাটা।”
“এই আলোচনা যে আগে হয়নি, তা অবশ্য নয়। তবে আমরা এমন একটি জটিল পরিবেশের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম, যে কারণে হয়নি। পরে আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি, শেষ মুহূর্তে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, অনেক কিছু বদলাতে হচ্ছে।”
নাজমুল আবেদীন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে পান গত ২৫ জানুয়ারি। ক্রিকেটাররা তখন ব্যস্ত ছিলেন বিপিএলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর বাকি ছিল না তখন এক মাসও। তার পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ার ব্যাপারটি তাই সত্যি।
প্রস্তুতির ঘাটতির কারণেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দল প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, এখানে কোচদের সঙ্গে একমত তিনিও।
“আমরা খুব আশাবাদী ছিলাম এবার… বিশেষ করে বিপিএলে যা দেখেছিলাম, তাতে আশাবাদী ছিলাম (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে)। কিন্তু আমার ধারণা, প্রস্তুত ঠিকমতো না হওয়ার কারণে আমাদের পারফরম্যান্সটা ওই জায়গায় যায়নি।”
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা ছিল সোমবার। তবে এখানেও জাতীয় দলের বিস্তারিত সবকিছু আলোচনা করা যায়নি। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল যে অনেক!
সামনের একটি সভা তাই শুধু দিনজুড়ে জাতীয় দলের প্রতি নিবেদিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানালেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান।
“আমরা আজকে খুব সুনির্দিষ্টভাবে আলোচনা করেছি, খুব কম সময় ছিল, আরেক দিন পুরোটা দিন আলোচনা করব… সেদিন আর কিছু থাকবে না, শুধু জাতীয় দল নিয়ে আলোচনা করব। জাতীয় দলে আমাদের কী হবে, কী করা উচিত, জাতীয় দলকে সাজানোর জন্য নিচে কীভাবে সাজানো উচিত, সার্বিক ব্যাপারগুলি কীভাবে করা উচিত… অন্য কোনো এজেন্ডা থাকবে না, শুধু জাতীয় দল নিয়ে আলোচনা করব।”
“এটা সবাই উপলব্ধি করতে পারছে যে, জাতীয় দল ভালো করা মানেই সবকিছু ঠিক থাকা। জাতীয় দল ভালো না করলে অন্য কোনো কিছু ভালো থাকে না, যা-ই করি না কেন, যতই সাফল্যের গল্প বলি না কেন, আসল কাজটা হয় না। জাতীয় দলকে ভালো করতেই হবে।”