ইংল্যান্ডের বাইরে খুব একটা পরিচিতি ছিল না গ্রাহাম ক্লার্কের, প্রথমবার বিপিএলে এসে চার ম্যাচে ১৪ ছক্কায় রান করেছেন এখনও পর্যন্ত ২৪০।
Published : 17 Jan 2025, 10:42 AM
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম ও সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের তুলনায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের সীমানা একটু বড়। গ্রাহাম ক্লার্কের ছক্কার নেশায় অবশ্য তা বাধা হতে পারেনি। বরং বেশি ছক্কা মারলেন তিনি এখানেই। ছয় ছক্কায় দারুণ এক সেঞ্চুরির পর চিটাগং কিংসের ইংলিশ ব্যাটসম্যান বললেন, ইংল্যান্ডে তিনি আরও বড় ছক্কা মারতে অভ্যস্ত।
বিদেশি ক্রিকেটারদের তারকা খরায় এবারের বিপিএলের চমক বলা যায় গ্রাহাম ক্লার্ককে। এই অঞ্চলে যে তার পরিচিতি তেমন একটা ছিল না আগে!
ইংলিশ ক্রিকেটে তিনি মোটামুটি পরিচিত একজন। কাউন্টি ক্রিকেটে খেলছেন বছর দশেক ধরে। ডারহামের হয়ে লাল বলের ক্রিকেটে অবশ্য খুব ভালো নয় পারফরম্যান্স। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাই নিয়মিত সুযোগ পান না এখন আর। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ও দা হান্ড্রেড-এ তার উপস্থিতি নিয়মিতই। ২০ ওভারের ক্রিকেটে দুটি সেঞ্চুরিতে এখন প্রায় তিন হাজার রান তার। এই সংস্করণেই খেলেছেন সবচেয়ে বেশি ম্যাচ।
ডারহামে তাকে দেখেই মনে ধরেছিল চিটাগং কিংসের কোচ শন টেইটের। সেঞ্চুরি করা এই ম্যাচের আগেই সেই গল্প শুনিয়ে সাবেক অস্ট্রেলিয়ান গতি তারকা বলেন, ক্লার্কের মতো যারা এই অঞ্চলের ক্রিকেটে ততটা পরিচিত নন, তাদের জন্য নিজেদের চেনানোর বড় সুযোগ বিপিএলের মতো আসর।
তা ক্লার্ক নিজেকে চেনাচ্ছেন বটে!
চিটাগং কিংসের প্রথম ম্যাচে তিনি ছিলেন না একাদশে। সেই ম্যাচটি হেরেছিল চিটাগং। পরের চারটি ম্যাচে ক্লার্ক খেলেছেন এবং প্রতিটিই জিতেছে তার দল। সেটি কোনো কাকতাল নয়। প্রতিটি জয়েই ক্লার্কের ছিল উল্লেখযোগ্য অবদান।
বিপিএল অভিষেকে মিরপুরে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে পাঁচটি চার ও দুই ছক্কায় তিনি করেন ২৫ বলে ৪০ রান। পরের ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩২ বলে করেন ৩৯। প্রথম ফিফটির স্বাদ পান সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে। তিন চার ও পাঁচ ছক্কায় সেদিন ৩৩ বলে করেন ৬০ রান। পরের ম্যাচেই পেয়ে গেলেন বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরির ছোঁয়া।
খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে স্থানীয় দর্শকদের মাতিয়ে ৫০ বলে ১০১ রানের ইনিংস উপহার দেন তিনি। সাতটি চারের সঙ্গে ছক্কা ছিল এ দিন ছয়টি।
মিরপুর ও সিলেটের তুলনায় সীমানা এই মাঠে একটু বড়। তবে তার জন্য এটা তেমন বড় নয়, ম্যাচ শেষে টি-স্পোর্টসকে বললেন ক্লার্ক।
“দেশে আমি যে ধরনের বাউন্ডারি মারতে অভ্যস্ত, এর চেয়ে ছোট বাউন্ডারিই এখানে মেরেছি এখনও পর্যন্ত! ভালো একটি পিচ পাওয়া ছিল দারুণ, জানতাম যে বলের লাইনে গিয়ে শট খেলতে পারি এবং নিজের ওপর আস্থা রেখে ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে বল সীমানা ছাড়া করতে পারি।”
“সৌভাগ্যবশত, দিনটি আজকে আমার ছিল। কালকে হয়তো অন্য কারও দিন হবে।”
চার ম্যাচে এখন ৬০ গড় ও ১৭২.৪২ স্ট্রাইক রেটে ২৪০ রান ক্লার্কের। চিটাগংয়ের হয়ে তার চেয়ে বেশি রান করেছেন কেবল এক ম্যাচ বেশি খেলা উসমান খান (২৫৯)।
দেশের বাইরের লিগে ক্লার্ক খেলছেন প্রথমবার। বাংলাদেশে প্রথম সফরটিও দারুণ উপভোগ করছেন তিনি।
“আমার খুবই ভালো লাগে। যে ধরনের দর্শক দেখছি, এই অভিজ্ঞতা আমার আগে ছিল না। গ্যালারি ভরা দর্শক, এত আওয়াজ, সবই দারুণ। আরও বেশি করে এই অভিজ্ঞতা পেতে তর সইছে না আমার। এখনও পর্যন্ত সবকিছুই ভালো লাগছে।”
চলতি আসরে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলেছে চিটাগং কিংস। তবে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি খেলবে তারাই। একটি ম্যাচ হয়ে গেছে তাদের, ঘরের মাঠে আরও চারটি ম্যাচ খেলবে দলটি।
“এখন বেশ দ্রুত অনেকগুলো ম্যাচ আছে আমাদের। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, এই মুহূর্তে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি। ছেলেরা ভালো ব্যাট করছে, ব্যাটাররা ভালো ব্যাটিং করছে। এখন দ্রুত একের পর এক ম্যাচ আসছে। আশা করি, এই পারফরম্যান্স আমরা ধরে রাখব।”