Published : 27 Jan 2024, 09:04 PM
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে একপ্রান্ত আগলে রাখলেন বাবর আজম। শেষ দিকে ঝড় তুলে রংপুর রাইডার্সকে বড় সংগ্রহে পৌঁছে দিলেন আজমতউল্লাহ ওমারজাই। পরে বল হাতেও আলো ছড়ালেন আফগান অলরাউন্ডার। তাদের নৈপুণ্যে জয়ে ফিরল রংপুর।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার ৭৯ রানে জিতেছে রংপুর। ১৮৪ রানের লক্ষ্যে ২১ বল বাকি থাকতেই ঢাকার ইনিংস থেমেছে ১০৪ রানে।
চার ম্যাচে রংপুরের দ্বিতীয় জয় এটি। তিন ম্যাচে ঢাকার দ্বিতীয় হার।
অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে ৪৬ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলেন বাবর। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ব্যাটিংয়ে ৩২ রানের পর বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে বড় অবদান রাখেন ওমারজাই।
আগের ম্যাচে ৮ নম্বরে ব্যাটিং করা সাকিব আল হাসান এবার ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও নামেননি ব্যাটিংয়ে। পরে দশম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসে তিন ওভারে তিনি নেন ১টি উইকেট।
ম্যাচে টস জিতে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ঢাকা। ব্যাটিং সহায়ক কন্ডিশনে ব্র্যান্ডন কিংয়ের ব্যাটে ছিল দ্রুত রান তোলার আভাস। তবে তাকে বেশি দূর যেতে দেননি তাসকিন আহমেদ। তৃতীয় ওভারে ১৩ বলে ২০ রান করে ফেরেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার।
তিন নম্বরে নামা রনি তালুকদার হতাশ করেন আরও একবার। তৃতীয় উইকেটে নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে ৩৯ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন বাবর। রংপুর অধিনায়ক খেলেন ২৪ বলে ২৬ রানের ইনিংস।
ফিফটির পথে ৩১ রানে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান বাবর। পরে ৪১ বলে পূর্ণ করেন চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চাশ। সপ্তদশ ওভারে দানুশকা গুনাথিলাকার বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক।
ছয় নম্বরে নেমে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৫ বলে ৩২ রান করেন ওমারজাই। শামীম হোসেন একটি করে চার-ছক্কায় নেন ৮ বলে ১৭ রান।
ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন আরাফাত সানি।
কুয়াশাভেজা কন্ডিশনে রান তাড়ায় শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ঢাকা। প্রথম ওভারে খালি হাতে ফেরেন দানুশকা গুনাথিলাকা। তিন নম্বরে নেমে সাইম আইয়ুব চেষ্টা করেন দ্রুত রান তুলতে। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৪ বলে ১৭ রান করে পঞ্চম ওভারে ফেরেন পাকিস্তানি তরুণ।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে একই পথ ধরেন লাসিথ ক্রসপুল। তিনিও রানের খাতা খুলতে পারেননি। পরের ওভারে মোহাম্মদ নবির বলে স্লগ সুইপ করে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ১৫ বলে ৯ রান করা মোহাম্মদ নাইম। স্রেফ ৩২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে ঢাকা।
এরপর লড়াই করেন অ্যালেক্স রস। কিন্তু পরাজয়ের ব্যবধান কমানো ছাড়া আর বেশি কিছু করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। পঞ্চম উইকেট জুটিতে মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে তিনি যোগ করেন ৪৯ রান।
দশম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন সাকিব। দুই চারে ১১ রান নেন রস। সাকিবের পরের ওভারেও জোড়া বাউন্ডারি মারেন সুইপ শটের জন্য পরিচিত এই ব্যাটসম্যান।
চতুর্দশ ওভারে মোসাদ্দেককে ফেরান হাসান মাহমুদ। ১৮ বলে স্রেফ ১৫ রান করেন ঢাকার অধিনায়ক। পরের বলে স্লোয়ার বাউন্সারে কট বিহাইন্ড হন ইরফান শুক্কুর।
একপ্রান্ত ধরে রেখে খেলতে থাকা রস ৩২ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি।
নিজের তৃতীয় ওভারে আলাউদ্দিন বাবুকে বোল্ড করে প্রথম সাফল্য পান সাকিব। পরের ওভারে রসকে বোল্ড করেন শেখ মেহেদি হাসান। এরপর জয়ের জন্য আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি রংপুরকে।
ফিল্ডিংয়ের সময় পিঠে অস্বস্তি বোধ করায় স্রেফ দুই ওভার বোলিং করা তাসকিন পরে ব্যাটিংয়ে নামেননি। ফলে ৯ উইকেট পড়তেই সমাপ্তি ঘটে ঢাকার ইনিংসের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৮৩/৮ (কিং ২০, বাবর ৬২, রনি ১১, নুরুল ২৬, নবি ১, ওমারজাই ৩২, শামিম ১৭, মেহেদি ৮*, রিপন ১, হাসান ০*; তাসকিন ২-০-১৪-১, শরিফুল ৪-০-৩৫-১, আরাফাত ৪-০-৩২-৩, আলাউদ্দিন ৪-০-৪৩-১, গুনাথিলাকা ৩-০-২৫-১, মোসাদ্দেক ৩-০-৩২-০)
দুর্দান্ত ঢাকা: ১৬.৩ ওভারে ১০৪ (গুনাথিলাকা ০, নাইম ৯, সাইম ১৭, ক্রসপুল ০, রস ৫১, মোসাদ্দেক ১৫, ইরফান ০, আলাউদ্দিন ৩, শরিফুল ০, আরাফাত ১*, তাসকিন আহত অনুপস্থিত; ওমারজাই ৩-১-১৪-২, মেহেদি ৩.৩-০-১১-৩, হাসান ২-০-১৮-২, নবি ২-০-১০-১, সাকিব ৩-০-২৩-১, রিপন ৩-০-২৭-০)
ফল: রংপুর রাইডার্স ৭৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: বাবর আজম