Published : 28 Mar 2025, 07:29 PM
গত আসরে চমক দেখিয়ে এবার ভালো পারিশ্রমিকে দিল্লি ক্যাপিটালসে নাম লিখিয়েছেন আশুতোষ শার্মা। আর প্রথম ম্যাচেই প্রমাণ করেছেন নিজের মূল্য। একার লড়াইয়ে দিল্লিকে এনে দিয়েছেন রোমাঞ্চকর জয়। নিজের সাফল্যের পেছনে শিখার ধাওয়ান, কেভিন পিটারসেন ও মাহেন্দ্র সিং ধোনির কথা বলেছেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
ঘরের মাঠে সোমবার লাক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ২০৯ রান টপকে ১ উইকেটে জিতেছে দিল্লি। মাত্র ১০ রানে ৩ উইকেটে হারানো দলটি মিলিয়েছে শেষ ১৫ বলে ৩৮ রানের সমীকরণ। ৩ বল বাকি থাকতে দলকে জেতানোর নায়ক আশুতোষ।
মাত্র ৬৫ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর ‘ইমপ্যাক্ট বদলি’ হিসেবে নেমে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেন আশুতোষ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৫টি করে চার-ছক্কায় ৩১ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
রোমাঞ্চকর ওই জয়ের ৪ দিন পরও কাটেনি রেশ। শুক্রবার নির্ধারিত সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় বারবার উঠে এলো ওই ইনিংসের কথা। আশুতোষ বললেন, কঠোর পরিশ্রমের ফলে নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল তার।
“আমি অনেক অনুশীলন করেছি। যখনই আমি ফাঁকা সময় পাই রেঞ্জ হিটিংয়ের জন্য ২-৩ ঘণ্টা সময়ও দেই। এটি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। সবকিছুরই সুনির্দিষ্ট অনুশীলন প্রয়োজন। ওয়াইড ইয়র্কারের বিপক্ষে সুফল পাওয়ার জন্যও আমি এটি করি।”
“দিন শেষে আপনি কতটা পরিশ্রম করেছে সেটিই মূখ্য। আরও অনেক কিছুই থাকে। তবে ওয়াইড ইয়র্কারের বিপক্ষে নিখুঁতভাবে শট খেলার জন্য কঠোর পরিশ্রমই সবচেয়ে বড় বিষয়। আমার ওই ইনিংসের সময় নিজের প্রক্রিয়ায় ছিলাম এবং খেলাটি গভীরে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম।”
আইপিএলের গত আসরে মাত্র ২০ লাখ রুপিতে তাকে দলে নিয়েছিল পাঞ্জাব কিংস। সেবারও ইমপ্যাক্ট বদলি হিসেবে নেমে বেশ কিছু ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এবারের মেগা নিলামে ৩ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে আশুতোষকে দলে নিয়েছে দিল্লি।
প্রথম ম্যাচেই অবিশ্বাস্য ইনিংসে দলকে জেতানোর পথে একপর্যায়ে ২০ বলে ২০ রানে ছিলেন আশুতোষ। পরের ১১ বলে চোখধাঁধাঁনো ব্যাটিংয়ে ৪৬ রান নেন তিনি। শাহবাজ আহমেদের বল ছক্কায় উড়িয়ে ম্যাচ শেষ করার পর ‘সুইচ হিট’ উদযাপন করেন আশুতোষ।
সেটি ছিল মূলত দিল্লির মেন্টর কেভিন পিটারসেনের উদ্দেশ্যে। কারণ ব্যাটিংয়ে নামার আগে পিটারসেনের ইতিবাচক বার্তাই ছিল আশুতোষের বড় প্রেরণা।
“ডাগআউটে আমি কেপির (পিটারসেন) সঙ্গে কথা বলছিলাম। নিজেকে উজাড় করে খেলার কথা বলছিলেন তিনি। নিজের সামর্থ্যের ওপর ভরসা রাখতে বলেছিলেন। আমার মনে হচ্ছিল তিনি আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। তাই উদযাপনটা তাকে উৎসর্গ করতে চেয়েছিলাম।”
“তিনি একজন কিংবদন্তি। যখন টানা উইকেট পড়ছিল, তিনি বলছিলেন, তুমি পারবে। তার সঙ্গে ডাগআউটে থাকা উপভোগ করছি। নেটে অনেক সহায়তা করছেন, ভালো পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি অনেক বড় ক্রিকেটার। তার কাছ থেকে শিখতে পারাও আনন্দের।”
এসময় নিজের ব্যক্তিগত মেন্টর শিখার ধাওয়ানের অবদানের কথাও তুলে ধরেন আশুতোষ।
“তিনি (ধাওয়ান) আমার মেন্টর। গত বছর পাঞ্জাব কিংসের হয়ে ক্যাম্পের সময় থেকে আমি তার সঙ্গে কথা বলছি। তখন থেকে তিনি অনেক কিছুতে আমাকে সাহায্য করেছে। খেলাটির মানসিক দিক থেকে অনেক সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, সব ক্রিকেটারের ভিন্ন ভিন্ন স্কিল থাকে। তবে মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাস তোমাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। এটি আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমার পারফরম্যান্সে তিনি অনেক খুশি।”
গত বছর চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে খেলার সময় মাহেন্দ্র সিং ধোনির কাছ থেকেও কিছু পরামর্শ পেয়েছেন আশুতোষ।
“চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচে আমি ধোনির সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার জন্য নামার সময় তার মাথায় কী কাজ করে? তিনি আমাকে অনেক কিছু বলেছেন।”
ধোনির কাছ থেকে কী পরামর্শ পেয়েছেন জানতে চাইলে অবশ্য আশুতোষের মুখে তালা, ‘এটি সিক্রেট।’