ব্যাটিং উইকেট বিশাল রান তাড়ায় ১১ ওভার শেষে সৈকত আলির রান ছিল ২৯ বলে ১৭।
Published : 10 Feb 2024, 05:41 PM
দুইশর বেশি রান তাড়ায় জয়ের জন্য প্রয়োজন উড়ন্ত শুরু। পাওয়ার প্লেতে জরুরি বিস্ফোরক ব্যাটিং। কিন্তু বিস্ময়করভাবে, সৈকত আলি পড়ে রইলেন যেন গভীর ঘুমে। ম্যাচ পরিস্থিতি কিংবা কোনো পারিপার্শ্বিকতাই জাগিয়ে তুলতে পারল না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওপেনারকে!
বিপিএলে শনিবার অবিশ্বাস্য এই ব্যাটিংয়ের নজির মেলে ধরেন সৈকত। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্স তোলে ২০ ওভারে ২১১ রান। এবারের বিপিএলে যা প্রথম দুইশ রানের স্কোর। সেই রান তাড়ায় ইনিংস শুরু করতে নেমে ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অমন প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিং।
চট্টগ্রামের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার জশ ব্রাউন প্রথম ওভারে ছক্কায় ম্যাচ শুরু করলেও সাকিব আল হাসানের আর্ম ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান তৃতীয় ওভার। তিনে নেমে টম ব্রুস দুই ওভারে দুটি বাউন্ডারি মারেন। কিন্তু সৈকত আলি ছিলেন একদমই ঝিমিয়ে।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে স্রেফ ১ উইকেট হারালেও চট্টগ্রামের রান ছিল মাত্র ৩২। সৈকতের স্ট্রাইক রেট তখন পঞ্চাশের একটু বেশি (১৭ বলে ৯)।
ব্রুস আউট হয়ে যান পাওয়ার প্লের পরপর। সৈকত তখন আরও মিইয়ে যান।
এভাবেই পেরিয়ে যায় ১১ ওভার। ২৯ বল খেলে সৈকতের রান সেই সময় ২৯ বলে ১৭।
চট্টগ্রামের জয়ের জন্য তখন লাগে ৫৪ বলে ১৫৪ রান। অর্থাৎ ওভারপ্রতি ১৭ রানের বেশি!
সমীকরণ অসম্ভব হয়ে ওঠার পর জেগে ওঠার ডাক শুনতে পান সৈকত। দ্বাদশ ওভারের প্রথম বলে স্লগ করে ছক্কায় উড়িয়ে দেন ইমরান তাহিরকে।
পরের ওভারে আবার স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন তিনি সাকিবকে। এর পরের ওভারে আশিকুর জামানকে মারেন দুটি ছক্কা। পরে দুটি ছক্কা মারেন শেখ মেহেদি হাসানের ওভারেও।
২৯ বলে কোনো বাউন্ডারি না মারার পর ১৬ বলের মধ্যেই ৬ ছক্কা! কিন্তু ততক্ষণে ম্যাচে কোনো উত্তেজনা আর বাকি নেই। তার ৪৫ বলে ৬৩ রানের ইনিংসটির মূল্যও নেই কিছু। বরং তার ওসব শট প্রশ্নগুলিকেই উচ্চকিত করেছে আরও, এই চেষ্টা তিনি আগে করেননি কেন!
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়ে প্রশ্ন ছুটে গেল তার দিকে। তিনি শোনালেন তার ব্যাখ্যা।
“আমাদের প্রথম পরিকল্পনা ছিল, যদি জশ ব্রাউনের ভালো লাগে (ব্যাটে)… আমি তো আজকে প্রথম ওপেন করলাম (এবারের আসরে)… আমি স্রেফ একটা মোমেন্টাম খুঁজছিলাম। আর প্রথম ৬ ওভারে সাকিব ভাই, মেহেদি ওরা খুব ভালো বোলিং করেছে।”
“আমাদের যখন জশ ও টম (ব্রুস) আউট হয়ে যায়, তখন চেষ্টা করেছি যে অযথা উইকেট ছুড়ে না এসে যদি মোমেন্টাম পেয়ে যাই, তখন থেকে (শট খেলব)। ইমরান তাহিরকে যখন একটা ছয় মারলাম, তখন ভাবলাম যে মোমেন্টাম চলে এসেছে। আগেও চেষ্টা করেছি, তবে ওরা খুব ভালো বল করেছে, বিশেষ করে সাকিব ভাই ও শেখ মেহেদি।”
মোমেন্টাম খোঁজার জন্য হলেও আসলে শট খেলার চেষ্টা করা প্রয়োজন। সাধারণত, এসব ক্ষেত্রে ব্যাটসম্যানরা ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বা উদ্ভাবনী কিছু করে কিংবা নানা ভাবে চেষ্টা করেন শেকল ভাঙার। সেই চেষ্টায় কখনও তারা সফল হন, কখনও আউট হয়ে যান। কিন্তু সৈকতকে আদতে কোনোরকম চেষ্টাই করতে দেখা যায়নি।
বারংবার প্রশ্নে সৈকত অবশ্য তার আগের ব্যাখ্যাতেই থাকলেন।
“রংপুর খুবই ভালো বল করেছে। ওদের বোলাররা সবাই টি-টোয়েন্টির স্পেশালিস্ট। আমরাও চেষ্টা করেছি। তবে প্রথম দুই-তিন উইকেট পড়ার পর রান রেট ধীরগতির হয়ে যায়।”