বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন ৬৬২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে আফগানিস্তান।
Published : 16 Jun 2023, 10:07 AM
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৮২
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস: ১৪৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৪২৫/৪ ইনিংস ঘোষণা
আফগানিস্তান ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৬৬২) ১১ ওভারে ৪৫/২
ম্যাচের বাকি পুরো তিন দিন। ৯ উইকেট হাতে রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের লিড ৩৭০ রানের। এটিকে আরও বড় করার লক্ষ্য নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামবে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১১৬ রান যোগ করে অপরাজিত জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনই সমান ৬৪ বল খেলে করেছেন ৫৪ রান। নতুন দিনে তাদের কাছে আরও বড় কিছুর প্রত্যাশাই থাকবে বাংলাদেশের।
ছুটির দিন সকাল থেকেই তীব্র রোদ মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। গত দুই দিনের মতো আজ বিকেলেও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে রয়েছে বৃষ্টির শঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে):
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৮৬ ওভারে ৩৮২ (আগের দিন ৩৬২/৫) (মুশফিক ৪৭, মিরাজ ৪৮, তাসকিন ২, তাইজুল ০, শরিফুল ৬, ইবাদত ০*; ইয়ামিন ১০-১-৩৯-২, মাসুদ ১৬-২-৭৯-৫, করিম ১১-৩-৩৩-০, জাহির ১৬-০-৯৮-১, হামজা ২৪-১-৮৫-১, শাহিদি ৩-০-৯-০, রহমত ৬-১-৩০-১)
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৯ ওভারে ১৪৬ (ইব্রাহিম ৬, মালিক ১৭, রহমত ৯, শাহিদি ৯, জামাল ৩৫, জাজাই ৩৬, জানাত ২৩, হামজা ৬, আহমাদজাই ০, মাসুদ ০, জাহির ০*; তাসকিন ৭-০-৪৮-০, শরিফুল ৮-২-২৮-২, ইবাদত ১০-১-৪৭-৪, তাইজুল ৫-০-৭-২, মিরাজ ৯-১-১৫-২)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৩ ওভারে ১৩৪/১ (জয় ১৭, জাকির ৫৪*, শান্ত ৫৪*; আহমাদজাই ৫-০-৩৪-০, মাসুদ ৩.৫-০-৩০-০, হামজা ৬.১-০-২৭-১, জানাত ৪-০-২৪-০, জাহির ৪-০-১৯-০)
হাতে সময় অফুরান, লিডও প্রায় আকাশছোঁয়া। তাই কোনো তাড়াহুড়োর পক্ষে নয় বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে প্রধান কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে জানালেন, যত বেশি সময় সম্ভব ব্যাট করতে চায় তার দল।
"যদি আমাদের পরিকল্পনার কথা জিজ্ঞেস করেন, আমরা সারা দিন ব্যাটিং করতে পছন্দ করব। যাতে বুঝতে পারি এই ধরনের কন্ডিশনে আমরা কেমন করি। যেহেতু এটি স্রেফ একটি টেস্ট। তো এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য নেই।"
আগের দিন যেখানে শেষ করেন, তৃতীয় দিন সকালে সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। সাবলিল ব্যাটিংয়ে ৫ ওভারের মধ্যেই লিড চারশ পার করালেন দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
লিড চারশ পেরোনোর পর দুজনের জুটিতেওপূরণ হয়েছে দেড়শ রান। এর আগে চার ইনিংস একসঙ্গে ইনিংস সূচনা করেছেন জাকির, শান্ত। সেখানে ছিল একটি সেঞ্চুরি ছোঁয়া জুটি।
এবার প্রথমবার দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেধে দেড়শ পেরোলেন তারা। পরে নামলেও ৭৬ রান করে জুটিতে বড় অংশের অবদান শান্তর, জাকির করেছেন ৬৫।
৩০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৭৩ রান। স্বাগতিক লিড বেড়ে হয়েছে ৪০৯।
এক টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারের মালিক এখন নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় ইনিংসের ৩১ ওভার পর্যন্ত এই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৫টি চার। এর মধ্যে ২৩টি প্রথম ইনিংসে আর ১২টি দ্বিতীয়বারে।
শান্ত ভাঙলেন তামিম ইকবালের রেকর্ড। ২০১৯ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিল্টন টেস্টের দুই ইনিংসে ১২৬ ও ৭৪ রানের ইনিংস খেলার পথে তামিম মারেন ৩৩টি চার।
বিশ্ব রেকর্ড থেকে অবশ্য এখনও অনেক দূরে বাংলাদেশের তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ১৯৯০ সালে ভারতের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টের দুই ইনিংসে ৩৩৩ ও ১২৩ রান করার পথে গ্রাহাম গুচের ব্যাট থেকে আসে ৫৬টি চার।
পরে ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক কলকাতা টেস্টে ৫৯ ও ২৮১ রানের ইনিংস খেলার পথে ভিভিএস লক্ষ্মণও মারেন ৫৬টি চার।
আফগানিস্তানের বোলাররাযখন জুটি ভাঙার কোনো পথই খুঁজে পাচ্ছিলেন না, তখন নিজ থেকেইযেন তাদের সেই পথ বের করে দিলেন জাকির হাসান। অযথাই তৃতীয় রান নিতে গিয়ে বিলিয়ে এলেন নিজের উইকেট।
হাশমতউল্লাহ শাহিদিরঅফ স্টাম্পের বাইরের বল জাকিরের ব্যাটেরবাইরের কানায় লেগে স্লিপের পাশ দিয়ে চলে যায় ডিপ থার্ড ম্যানে। অনায়াসেই দুই রান নেন জাকির ও নাজমুল হোসেন শান্ত।
ফিল্ডার ডাইভ দিয়ে বল থামানোর পর তৃতীয় রানের ডাক দেন জাকির। শান্তও তাতে সাড়া দেন। কিন্তু ইব্রাহিম জাদরানের থ্রো ধরে আফসার জাজাই স্টাম্প ভাঙার আগে পপিং ক্রিজে ঢুকতে পারেননি জাকির।
তার বিদায়ে ভাঙল ১৭৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ৯৫ বলে ৮ চারে ৭১ রান করেছেন বাঁহাতি ওপেনার। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৯২ রানে খেলছেন শান্ত।
জাহির খানের গুগলি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারলেন না মুমিনুল হক। বল তার প্যাডে আঘাত করলেই জোরাল আবেদন করে আফগানিস্তান। তবে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার।
কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নিলেন সফরকারী অধিনায়ক। রিপ্লেতে দেখা যায়, বলের পিচিং ও ইমপ্যাক্ট ঠিক ছিল। কিন্তু বিশাল টার্ন ও বাউন্সের কারণে সেটি লেগ স্টাম্প উপর দিয়ে বেরিয়ে যেত। ফলে ব্যর্থ হয় আফগানিস্তানের রিভিউ।
৩৭ ওভারে দুইশ পেরিয়েছে বাংলাদেশের স্কোর। সেঞ্চুরির দুয়ারে দাঁড়িয়ে ৯৬ রানে খেলছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের লিড এখন ৪৩৮ রানের।
হাশমতউল্লাহ শাহিদির মিডল স্টাম্পেরওপর করা ডেলিভারি অন সাইডে ঠেলে দিয়ে রানের জন্য ছুটলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মাঝ পিচেই খুলে ফেললেন হেলমেট। পপিং ক্রিজে পৌঁছে ড্রেসিং রুমের দিকে গিয়ে দিলেন চিরচেনা লাফ। পরে চুমু আঁকলেন ব্যাটে।
উদযাপনে নতুন কিছু না থাকলেও শান্তর কীর্তিটাএকদমই নতুন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিরলও বটে। স্রেফ দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি করলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। সেটিও কি না মুমিনুল হককে অন্য প্রান্তে রেখে। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে যে, তিনিই করেছিলেন জোড়া সেঞ্চুরি।
২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসে মুমিনুল করেন ১৭৬ ও ১০৫ রান। ওই ম্যাচে তার মোট সংগ্রহ ছিল ২৮১ রান। যা এক ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানেরও রেকর্ড।
মুমিনুলের পাঁচ বছর পর এবার মিরপুরে প্রথম ইনিংসে শান্ত খেলেছেন ১৪৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ক্যারিয়ারের চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছেন ১১৫ বল খেলে। ১৩ চার।
শান্তর সেঞ্চুরির পর সাড়ে চারশ পেরিয়েছে বাংলাদেশের লিড। ৪১ ওভারে সংগ্রহ ২ উইকেটে ২১৮ রান। লিড এখন ৪৫৪।
জাকির হাসানেরঅহেতুক রানআউটের কোনো প্রভাবপড়তে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। এরই মধ্যে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়ে ফেলেছেন তারা। বাংলাদেশ পেয়েছে নিজেদের সর্বোচ্চ লিড।
জুটির পঞ্চাশ ছুঁতে শান্ত ও মুমিনুলেরলেগেছে ৭০ বল। যেখানে মুমিনুলের অবদান ২৯ রান, শান্তর ২০। সেঞ্চুরি পেরিয়ে শান্ত খেলছেন ১১২ রানে। ফিফটিরসম্ভাবনা জাগিয়ে মুমিনুল করে ফেলেছেন ৪৩ রান।
৪৮ ওভারেবাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২৫৫ রান। লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯১ রানে। এই অবস্থায় ইনিংস ঘোষণা করলে আফগানিস্তানের সামলে লক্ষ্য দাঁড়াবে ৪৯২ রান।
টেস্ট ক্রিকেটে এটিইবাংলাদেশের দেওয়া সর্বোচ্চ রানের লক্ষ্য। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্টে তারা দিয়েছিল ৪৭৭ রানের লক্ষ্য।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আরও তিনবার চারশর বেশি লক্ষ্য দিয়েছে তারা। এবারই প্রথম জিম্বাবুয়ে ছাড়া অন্য কোনো দলকে চারশর বেশি লক্ষ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ।
জহির খানের বল বেরিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটের কানা ঘেঁষে। উইকেটের আশায় কট বিহাইন্ডের আবেদন করলেন আফগানরা, কিন্তু পেলেন না আম্পায়ারের সাড়া। রিভিউয়ে দেখা গেল তিনিই ঠিক, ফের ব্যর্থ হলো আফগানিস্তান।
লিড ছাড়িয়ে গেছে পাঁচশ, ক্রিজে সাবলীল দুই ব্যাটসম্যান। উইকেটে বেশ সহায়তা আছে কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারছেন না কোনো বোলার। অনায়াসেই এগিয়ে যাচ্ছিন শান্ত ও মুমিনুল হক।
তাদের জুটি ভাঙার মরিয়া চেষ্টায় রিভিউ নেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। রিপ্লেতেই স্পষ্ট ছিল, ব্যাটে নেই বলের স্পর্শ, আল্ট্রাএজেও মেলে সেই প্রমাণ। নষ্ট হয় আফগানদের দ্বিতীয় রিভিউ।
সে সময় ১১৯ রানে ছিলেন শান্ত।
৫২ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ২৭০। লিড এখন ৫০৬ রানের।
জাহির খানের ইয়র্কার ধরনের ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টা করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটের নিচের দিকে লেগে ক্যাচ উঠে যায় শর্ট মিড উইকেটে। অনায়াসে তা তালুবন্দী করেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি।
ব্যাটের লাগার পর বল মাটি ছুঁয়ে গিয়েছে কি না তা দেখার জন্য টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হয় সিদ্ধান্ত। রিপ্লে দেখে জায়ান্ট স্ক্রিনে আউটের সিদ্ধান্ত জানান আম্পায়ার।
প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানের পর এবার ১২৪ রান করেছেন শান্ত। ১৫১ বলের ইনিংসেমেরেছেন১৫টি চার। তার বিদায়ে ভেঙেছে মুমিনুল হকের সঙ্গে গড়া ৮৩ রানের জুটি।
শান্তর বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু পরের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে গ্লাভসে লেগে স্লিপে ক্যাচ আউট হন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
ওই ওভারের শেষ বলে রিভার্স সুইপেচার মারেন বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন দাস।
বাংলাদেশ এখন এগিয়ে ৫২২ রানে।
প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে দ্বিতীয়বারে দারুণ ব্যাটিং করছেন মুমিনুল হক। এরই মধ্যে তিনি পৌঁছে গেছেন পঞ্চাশে।
ক্যারিয়ারের ১৭তম ফিফটি ছুঁতে ৬৭ বল খেলেছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মেরেছেন ৭টি চার। এর সঙ্গে ১১টি সেঞ্চুরি রয়েছে তার।
৫৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেট ২৯৩ রান। লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২৯। মুমিনুল ৫৩ ও লিটন দাস ৫ রানে খেলছেন।
হঠাৎ করেই যেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিতে শুরু করলেন জাহির খান। এক ওভারে দুই উইকেট নেওয়ার পর লিটন দাসকে পরপর দুই বলে পরাস্ত করলেন বাঁহাতি লেগ স্পিনার।
ওভারের প্রথম বলে কোনো শট না খেলে ছেড়ে দেন লিটন। বল টার্ন করে আঘাত হানে প্যাডে। জোরাল আবেদন করলেও রিভিউ নেয়নি আফগানিস্তান।
পরের বলটি মিডল স্টাম্পের ওপর করেন জাহির। এবার অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। জোরাল আবেদনে এবারও সাড়া দেননি আম্পায়ার।
কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেয় সফরকারীরা। রিপ্লেতে দেখা যায়, টার্ন করে লেগ স্টাম্প দিয়ে বেরিয়ে যেত বলটি। তাই কোনো সমস্যা হয়নি লিটনের। উল্টো নিজেদেরশেষ রিভিউও হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান।
এর আগেই দলীয় তিনশ পূরণ করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টার বিরতি পর্যন্ত তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩১১ রান। লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪৭ রান।
ফিফটি পেরিয়ে ৬৬ রানে খেলছেন মুমিনুল হক। লিটন অপরাজিত ১০ রানে।
মুমিনুল হক ও লিটন দাসেরজুটিতে ছয়শ ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশের লিড। ৬৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৬৬ রান। লিড বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৬০২ রানে। অর্থাৎ এই মুহূর্তে ইনিংস ঘোষণা করলে আফগানিস্তানের সামনে লক্ষ্য দাঁড়াবে ৬০৩ রান।
টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড়শ বছরের ইতিহাসে ছয়শর বেশি লক্ষ্য দেওয়ার ২১তম ঘটনা এটি। সবশেষ ২০১৯ সালের ব্রিজটাউন টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৬২৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সর্বোচ্চ লক্ষ্যের বিশ্ব রেকর্ড ইংল্যান্ডের। ১৯৩০ সালে টাইমলেস টেস্টেরযুগে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮৩৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল তারা।
সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৮৮ রানে খেলছেন মুমিনুল। লিটন অপরাজিত ৪৩ রানে।
ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে দ্রুত গতিতে রান তুলছে বাংলাদেশ। ক্রমেই বাড়ছে লিড। তৃতীয় দিনের চা বিরতি পর্যন্ত তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৭৮ রান। ওভারপ্রতি রান তোলার হার ৫.৪০! লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১৪ রান।
দিনের দ্বিতীয় সেশনে ২২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১২২ রান করেছে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ১২৪ রানে ক্যাচ দিয়েছেন জাহির খানের বলে। একই ওভারে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম (৩ বলে ৮)।
এরপর আর কোনো উইকেট পড়তে দেননি মুমিনুল হক ও লিটন দাস। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৯৯ বলে ৯৬ রান যোগ করেছেন তারা।
সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৯৫ রানে খেলছেন মুমিনুল। লিটন অপরাজিত ৪৮ রানে।
ব্যাটিংয়ের দ্বিতীয় বলে রিভার্স সুইপে চার মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস। এরপর উইকেটের চারপাশে বাহারি শটে এগিয়ে নেন নিজের ইনিংস। সাবলীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিলেন নিজের ফিফটি।
জাহির খানের বলে স্কুপে চার মেরে তিনি পৌঁছান পঞ্চাশে। ৫৩ বলে ৮ চারে ১৬তম ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। শুরুর ওই রিভার্স সুইপের পর আর কয়েকবার সফলভাবে একই শট খেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
লিটনের ফিফটির বাউন্ডারিতেইমুমিনুল হকের সঙ্গে তার পঞ্চম উইকেট জুটির শতরান পূরণ হয়। যেখানে মুমিনুলের অবদান ৪৯, লিটন ৫৩। সেঞ্চুরির দুয়ারে দাঁড়িয়ে ৯৭ রানে অপরাজিত মুমিনুল।
ইয়ামিন আহমাদজাইয়ের খাটো লেংথের ডেলিভারি উইকেটরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে আপার কাট করলেন মুমিনুল হক, প্রায় ২৬ মাসের অপেক্ষা ঘুচিয়ে পৌঁছে গেলেন তিন অঙ্কে। ড্রেসিং রুমের দিকে ব্যাট উঁচিয়ে সারলেন উদযাপন।
ক্যারিয়ারের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি করতে তিনি খেলেছেন ১২৩ বল, মেরেছেন ১২টি চার। আগে থেকেই তিনি টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ান। এবার সেটিকে বাড়িয়ে নিলেন আরও এক ধাপ।
মুমিনুলের জন্য সেঞ্চুরিটি ভীষণ জরুরি। ২০২১ সালের এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টে ১২৭ রানের ইনিংসের পর আর তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পাওয়া হচ্ছিল না তার।
মাঝের ২৬ মাসে ২৬ ইনিংসে ব্যাট করে ৩ বার পঞ্চাশ পেরোনঅভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পাঁচ বার আউট হন রানের খাতা খোলার আগেই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এবার পেলেন কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরির দেখা।
এই সংস্করণে এরআগে সর্বোচ্চ টানা ২৩ ইনিংস সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি।
মুমিনুলের সেঞ্চুরির পর চারশ পেরিয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ। লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩৬ রানে।
দ্বিতীয় নতুন বল আসার আগেই ইনিংস ঘোষণা করল বাংলাদেশ। ৮০ ওভারে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪২৫ রান। টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে এটি তাদের তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।
প্রথম ইনিংসের ২৩৬ রানের লিডসহআফগানিস্তানের সামনে লক্ষ্য ৬৬২ রানের। প্রায় দেড়শ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রানের লক্ষ্য দেওয়ার ঘটনা আছে আর মাত্র ৭টি।
এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তাই এবার জিততে হলে নতুন ইতিহাস গড়তে হবে আফগানদের।
এজন্য অবশ্য অফুরান সময় রয়েছে তাদের সামনে। চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের পুরো ১৮০ ওভার তো বটেই, আজকেও বাকি রয়েছে ৩১ ওভার। তবে পুরো ৩১ ওভার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে খেলা।
ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন জাকির হাসান ও লিটন দাস। শান্ত ১২৪ ও জাকির ৭১ রান করে আউট হলেও মুমিনুল ১২১ ও লিটন ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
আফগান বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে ওভারপ্রতি ৫.৩১ হারে রান করেছে বাংলাদেশ। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এটিই তাদের সর্বোচ্চ রান তোলার হার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস:৩৮২
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস:১৪৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস:৮০ ওভারে ৪২৫/৪ (ডিক্লে.) (জয় ১৭, জাকির ৭১, শান্ত ১২৪, মুমিনুল ১২১*, মুশফিক ৮, লিটন ৬৬*; আহমাদজাই ১৩-১-৬১-০, মাসুদ ১২.৫-০-৮৩-০, হামজা ১৬.১-০-৯০-১, জানাত ৮-০-৪৮-০, জাহির ২৩-০-১১২-২, শাহিদি ৩-০-১৯-০, জামাল ২-০-৪-০, রহমত ২-০-৪-০)
বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারাল আফগানিস্তান। শরিফুল ইসলামের বলেএলবিডব্লিউ হলেন ইব্রাহিম জাদরান।
ফুল লেংথেরডেলিভারি ফ্লিক করার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি জাদরান। বল আঘাত হানে প্যাডে। জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার।
কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন জাদরান। রিপ্লেতে দেখা যায় বল আঘাত করত মিডল-লেগ স্টাম্পে। তাই খালি হাতেই ড্রেসিং রুমে ফিরতে হয় আফগান ওপেনারকে।
প্রথম ইনিংসে কিছুটা খরুচে বোলিং করেন তাসকিন আহমেদ, থাকেন উইকেটশূন্য। তবে দ্বিতীয়বারে প্রথম ওভারেই পেলেন উইকেটের দেখা। ড্রেসিং রুমে ফেরত পাঠালেন আব্দুল মালিককে।
তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরে গুডলেংথের ডেলিভারি কভার ড্রাইভের চেষ্টা করেন মালিক। বল তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। ৫ রান করে ফেরেন আফগান ওপেনার।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপদে আফগানিস্তান। ক্রিজে এখন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি ও সহ-অধিনায়ক রহমত শাহ।
আকাশে মেঘের ঘনঘটা, বেশ জোরেই বইছে বাতাস। মাঠে আলো কিছুটা কমে আসায় জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ফ্লাডলাইট। কৃত্রিম আলোর নিচে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় লড়ছে আফগানিস্তান।
৫ ওভারে তাদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ২২ রান। ইতিহাস গড়তে প্রয়োজন আরও ৬৪০ রান। হাশমতউল্লাহ শাহিদি ৯ ও রহমত শাহ ৬ রানে অপরাজিত।
শুরুতে দুই ওপেনারকে হারানোর পর এবার আফগানিস্তান শিবিরে এলো চোটের ধাক্কা। তাসকিন আহমেদের বাউন্সারে মাঠ ছেড়ে গেলেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি।
তাসকিনের খাটো লেংথের ডেলিভারি যতটা উঠবে ভেবেছিলেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি, ততটাওঠেনি। মাথার ওপর দিয়ে চলে যাবে ভেবে নিচু হয়ে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু আগেই চোখ সরিয়ে নেওয়ায় বলের অল্প বাউন্স দেখতে পাননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বল গিয়ে আঘাত করে তার হেলমেটের নিচে মাথার অরক্ষিত অংশে।
সঙ্গে সঙ্গে ক্রিজে লুটিয়ে পড়েন শাহিদি। দৌড়ে ছুটে আসেন আফগান দলের ফিজিও। জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় মাঠে আসেন বিসিবি চিকিৎসক মঞ্জুরুল ইসলামও।
প্রায় ৭ মিনিট ধরে চলে শাহিদির প্রাথমিক শুশ্রূষা। একপর্যায়ে স্ট্রেচারও ডাকেন আফগান ফিজিও। তবে সেটির প্রয়োজন পড়েনি। উঠে দাঁড়িয়ে হেঁটেই মাঠ ছাড়েন শাহিদি।
তার জায়গায় নেমেছেন নাসির জামাল।
আলোকস্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ের ২৪ মিনিট আগেই শেষ হয়ে গেছে মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। সারা দিনে খেলা হয়েছে মোটে ৬৮ ওভার। এর সঙ্গে ইনিংস বিরতির জন্য কাটা গেছে ২ ওভার। অর্থাৎ তৃতীয় দিন হারিয়ে গেছে ২০ ওভার।
৬৬২ রানের বিশাল লক্ষ্যে তৃতীয় দিন শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৪৫ রান। ইতিহাস গড়ে জয়ের জন্য তাদের করতে হবে আরও ৬১৭ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। এদিন ৫৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে আরও ২৯১ রান যোগ করে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে একই ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দ্বিতীয় বারে তিনি খেলেন ১২৪ ইনিংস। দুই ইনিংস মিলে তার সংগ্রহ ২৭০ রান৷ এটিও এক ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
শান্তর পর তিন অঙ্কের দেখা পান মুমিনুল হক৷ দীর্ঘ ২৬ মাস ও ২৬ ইনিংস পর সেঞ্চুরি করেন তিনি। ক্যারিয়ারের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরিতে ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
এছাড়া জাকির হাসান খেলেন ৭১ রানের চমৎকার ইনিংস। অধিনায়ক লিটন দাস অপরাজিত থাকেন ৬৬ রানে৷
রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই ইব্রাহিম জাদরানকে এলবিডব্লিউ করেন শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারে আব্দুল মালিককে ফেরান তাসকিন আহমেদ।
পরে তাসকিনের বাউন্সারে মাঠ ছেড়ে যান হাশমতউল্লাহ শাহিদি। রহমত শাহ ও নাসির জামাল দিনের বাকি অংশ কাটিয়ে দেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস:৩৮২
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস:১৪৬
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস:৮০ ওভারে ৪২৫/৪ (ডিক্লে.) (জয় ১৭, জাকির ৭১, শান্ত ১২৪, মুমিনুল ১২১*, মুশফিক ৮, লিটন ৬৬*; আহমাদজাই ১৩-১-৬১-০, মাসুদ ১২.৫-০-৮৩-০, হামজা ১৬.১-০-৯০-১, জানাত ৮-০-৪৮-০, জাহির ২৩-০-১১২-২, শাহিদি ৩-০-১৯-০, জামাল ২-০-৪-০, রহমত ২-০-৪-০)
আফগানিস্তান ২য় ইনিংস:(লক্ষ্য ৬৬২) ১১ ওভারে ৪৫/২ (জাদরান ০, মালিক ৫, রহমত ১০*, শাহিদি ১৩ আহত অবসর, জামাল ৫*; শরিফুল ৪-১-৬-১, তাসকিন ৪-০-২৮-১, তাইজুল ২-০-৬-০, মিরাজ ১-০-১-০)