শেষ ইনিংসে ৫ উইকেট ও ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের ক্রিকেটে পথচলা শেষ করলেন নিল ওয়্যাগনার।
Published : 01 Apr 2025, 11:09 AM
স্বপ্নের মতো সমাপ্তি বুঝি একেই বলে। কিংবা স্বপ্নকেও ছাড়ানো! যে দেশে এসে নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেয়েছিলেন নিল ওয়্যাগনার, যেখান থেকে তিনি ছুটে গেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে, নাম লিখিয়েছেন ক্রিকেটের ইতিহাসে, সেই নিউ জিল্যান্ডের ক্রিকেটে শেষটা স্বপ্নময় হলো বাঁহাতি এই পেসারের।
ম্যাচের আগেই ওয়্যাগনার ঘোষণা করেছিলেন, নিউ জিল্যান্ডে তার শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ ছিল এটিই। তার দল নর্দান ডিস্ট্রিক্টসের সামনে তখন শিরোপার হাতছানি। শেষ ম্যাচে আগুনে বোলিংয়ে দলকে ট্রফি এনে দিয়েছেন তিনিই।
প্রথম ইনিংসে তার শিকার ছিল তিন উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে যোগ করেন আরও পাঁচটি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার ৩৭তম পাঁচ উইকেট সেটি।
ওয়্যাগনারের আট উইকেটে ১৩৪ রানে ওটাগোকে হারিয়ে প্লাঙ্কেট শিল্ডের শিরোপা জয় করে নর্দান ডিস্ট্রিক্টস। নিউ জিল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী এই আসরে ১৩ বছর পর শিরোপা জয় করল দলটি।
নিউ জিল্যান্ডের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের এই টুর্নামেন্ট হয়ে আসছে সেই ১৯০৬-০৭ মৌসুম থেকে।
নিউ জিল্যান্ডের ক্রিকেটে ওয়্যাগনারের শুরুটা হয়েছিল ওটাগোর হয়ে নর্দান ডিস্ট্রিক্টসের বিপক্ষে। শেষ ম্যাচে তার নিজের দল ও প্রতিপক্ষ ছিল উল্টো।
নিউ জিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা টেস্ট বোলারদের একজন হিসেবে এখন তার পরিচিতি। তবে তার নিজের দেশ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখানেই তার জন্ম, বেড়ে ওঠা ও ক্রিকেটের পথে এগিয়ে চলা। কিন্তু বিভিন্ন পর্যায়ে সুযোগ না পেয়ে নিউ জিল্যান্ডের ক্রিকেটে খেলতে শুরু করেন ২০০৫-০৬ মৌসুম থেকে। ইংল্যান্ডেও খেলতে থাকেন ওই সময়টায়। একসময় ইংল্যান্ডে চলে যাবেন বলেও ভাবনা ছিল তার। তবে শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালে তিনি পাকাপাকিভাবে পাড়ি জমান নিউ জিল্যান্ডে।
চার বছর সেখানে খেলার পর নিউ জিল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও খেলার শর্ত পূরণ হয় তার। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্সের পর টেস্ট অভিষেক হয়ে যায় ওই বছরই।
টেস্টের আঙিনায় তার এক যুগের পথচলা শেষ হয় গত বছর। ৬৪ টেস্টে ২৬০ উইকেট নিয়ে থামে তার ক্যারিয়ার। প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাসহ নিউ জিল্যান্ডের অনেক সাফল্যে তিনি রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। বিশেষ করে, পুরোনো বলে তার বোলিং হয়ে ওঠে কিংবদন্তিসম। ‘
টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এবার সেখানেও একটি পথের ইতি টানলেন।
নিউ জিল্যান্ডে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৪ ম্যাচ খেলে ৫৬৮টি উইকেট তার। তার ক্যারিয়ারের এই সময়ে এত উইকেট নিতে পারেননি আর কেউ।
নিউ জিল্যান্ডের ক্রিকেটকে বিদায় বললেও আগামী কাউন্টি মৌসুমের শেষ চার মাসে ডারহামের হয়ে খেলবেন ৩৯ বছর বয়সী এই পেসার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার ৮৪৯ উইকেটের সঙ্গে যোগ হবে তাই আরও কিছু।