রান তাড়ায় জয়ের পথে থাকলেও ব্যাটিং ধসে ভেঙে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা, সম্মিলিত পারফরম্যান্সে সিরিজ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
Published : 26 Aug 2024, 11:03 AM
সাত ওভারে প্রয়োজন তখন ৫৫ রান, উইকেট আছে সাতটি। মোটামুটি সহজ সমীকরণ দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। কিন্তু সেই পথ পেরোই মুখ থুবড়ে পড়ল প্রোটিয়া ব্যাটিং। পরের সময়টায় বাউন্ডারি এলো না একটিও, উইকেটের পতন হলো নিয়মিত। ব্যাটিং ধসে তারা যেতে পারল না লক্ষ্যের কাছাকাছিও। ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ত্রিনিদাদে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩০ রানে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তিন ম্যাচে সিরিজ তারা জিতে নিল টানা দ্বিতীয় জয়ে।
প্রথম ম্যাচে তাণ্ডব চালানো নিকোলাস পুরানের ব্যাট এ দিন অনেকটাই শান্ত। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ। তবে কার্যকর সম্মিলিত অবদানে ২০ ওভারে ১৭৯ রান তোলে ক্যারিবিয়ানরা। রান তাড়ায় জয়ের পথে থাকলেও শেষে খেই হারিয়ে ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা।
বিশ্বকাপের রানার্স আপ দলটি শেষ ৭ উইকেট হারায় মাত্র ২০ রানের মধ্যেই।
ব্রায়ার লারা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের দিনের মতো বিস্ফোরক উদ্বোধনী জুটি না হলেও আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন আলিক আথানেজ ও শেই হোপ। ৪১ রান যোগ করেন দুজন। দুটি করে চার-ছক্কায় ২৮ রান করা আথানেজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন লিজাড উইলিয়ামসন।
দ্বিতীয় উইকেটে ১৮ বলে ৪২ রানের জুটি গড়েন হোপ ও পুরান। সেখানে মূল অবদান হোপের। শুরুতে ১৪ রান করতে ১৪ খেললেও পরে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন এই ওপেনার। এইডেন মার্করামকে টানা দুটি ছক্কা মারার পর ছক্কায় ওড়ান তিনি কোয়েনা মাফাকা ও প্যাট্রিক ক্রুগারকে।
চার ছক্কায় ২২ বলে ৪১ করে বিদায় নেন তিনি। পুরান একটি ছক্কা মারলেও ১৯ বলে ১৯ রান করে আউট হন।
পরে রোস্টন চেইস ব্যর্থ হলেও অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলের ব্যাট থেকে আসে তিন ছক্কায় ২২ বলে ৩৫, শেরফোন রাদারফোর্ড শেষ দিকে করেন ১৮ বলে ২৯।
তিন উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার একাদশে ফেরা লিজাড উইলিয়ামস।
দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়ার শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। প্রথম দুই ওভারে চারটি চার মারেন রিজা হেনড্রিকস। চতুর্থ ওভারে চেইসকে বিধ্বস্ত করেন তিনি দুই ছক্কা ও দুই চারে। অন্য প্রান্তে রায়ান রিকলটনের ব্যাট থেকে আসে দুটি ছক্কা। ৪.২ ওভারেই ৬৩ তুলে ফেলেন দুজন।
রিকলটন ফেরেন ১৩ বলে ২০ রান করে। পরের ওভারে হেনড্রিকসের ঝড় থামে ১৮ বলে ৪৪ রান করে। অধিনায়ক মার্করাম তিনে নেমে ৯ বলে করেন ১৯ রান।
বড় বিপদ তখনও ছিল না। প্রয়োজন ছিল স্রেফ প্রক্রিয়াটা ধরে রাখা। ট্রিস্টান স্টাবস ও রাজি ফন ডার ডাসেন সেই পথেই ছিলেন। কিন্তু গড়বড় হয়ে যায় পরের সময়টাতেই।
চতুর্দশ ওভারে স্টাবসের বিদায় দিয়েই তাদের পথ হারানো শুরু। ফন ডার ডাসেন ২৪ বল খেলে করতে পারেন কেবল ১৭ রান। পরের আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। দ্রুতই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে প্রোটিয়ারা।
হেনড্রিকস, মার্করামের উইকেটসহ তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা রোমারিও শেফার্ড।
সিরিজের শেষ ম্যাচ মঙ্গলবার ত্রিনিদাদেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৭৯/৬ (আথানেজ ২৮, হোপ ৪১, পুরান ১৯, চেইস ৭, পাওয়েল ৩৫, রাদারফোর্ড ২৯, শেফার্ড ৯*, আকিল ৩*; ফোরটান ৩-০-৩১-০, উইলিয়ামস ৪-০-৩৬-৩, মাফাকা ৪-০-২৯-০, বার্টম্যান ৪-০-৩২-১, মার্করাম ২-০-২১-০, ক্রুগার ৩-০-২৯-২)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ (রিকলটন ২০, হেনড্রিকস ৪৪, মার্করাম ১৯, স্টাবস ২৮, ফন ডাসেন ১৭, ফেরেইরা ৪, ক্রুগার ৬, ফোরটান ২, উইলিয়ামস ০, মাফাকা ৩, বার্টম্যান ১*; আকিল ৪-০-২৫-২, ফোর্ড ২.৫-০-২৫-১, চেইস ১-০-২৩-০ শামার ৪-০-৩১-৩, শেফার্ড ৪-০-১৫-৩, মোটি ৪-০-২৭-১,)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩০ রানে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রোমারিও শেফার্ড।