ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে ১১৫ রানে অপরাজিত রয়ে যান জাস্টিন গ্রেভস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ঘোষণার পর বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুতই হারায় জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়কে।
Published : 24 Nov 2024, 08:29 AM
অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া কনা মিকাইল লুই প্রথম দিন শেষে বলেছিলেন, অন্তত চারশ রান ছুঁতে চান তারা। দ্বিতীয় দিনে দলের সেই লক্ষ্য পূরণের কান্ডারি হলেন জাস্টিন গ্রেভস। ঘরোয়া একদিনের টুর্নামেন্টে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি করে টেস্ট দলে জায়গা করে নেওয়া ব্যাটসম্যান দেখালেন ফর্মের মূল্য। দলে ফেরার টেস্টে তিনি উপহার দিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। পর বল হাতেও শুরুটা ভালো করলেন ক্যারিবিয়ানরা। দুই দিন শেষে তাই বেশ বিপাকে বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ৯ উইকেটে ৪৫০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ ২০ ওভার খেলে দিন শেষ করে ২ উইকেটে ৪০ রান নিয়ে।
৫ উইকেটে ২৫০ রান নিয়ে দিন শুরু করা ক্যারিবিয়ানদের বড় স্কোরে নিয়ে যান জাস্টিন গ্রেভস। তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা অলরাউন্ডার উপহার দেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি।
২০৬ বলে ১১৫ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলেন এই অলরাউন্ডার। সেখানে বাউন্ডারি ছিল স্রেফ চারটি। দৌড়ে রান নেওয়ার প্রবণতা তো বটেই, তার ফিটনেস ও লড়ায়ের মানসিকতাও ফুটে ওঠে এতে।
সপ্তম উইকেটে ১৪০ রানের জুটি গড়েন তিনি কিমার রোচের সঙ্গে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যা বাংলাদেশের রেকর্ড। ২৫২ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন রোচ।
অথচ দিনের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের জন্য ছিল আশা জাগানিয়া। দ্বিতীয় নতুন বল তখনও তরতাজা। দিনের প্রথম ওভারেই জশুয়া দা সিলভাকে বিদায় করেন হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশের হয়ে এক পঞ্জিকাবর্ষে ২৪ উইকেট নিয়ে সফলতম পেসারের রেকর্ড গড়েন তিনি।
নিজের পরের ওভারেই রেকর্ডটি আরও সমৃদ্ধ করে আলজারি জোসেফকে আউট করেন হাসান। গালিতে দারুণ ক্যাচ নেন জাকির হাসান।
শুরুর জোড়া সাফল্যের পর আরেকটি উইকেট নিতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ৪৮ ওভারের বেশি। গ্রেভস ও রোচ গড়ে তোলেন দৃঢ়তাপূর্ণ জুটি।
প্রথম সেশনেরবাকি সময়টায় আর কোনো বিপদ হয়নি ক্যারিবিয়ানদের। এমনকি দ্বিতীয় সেশনও প্রায় পুরোটা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন তারা। গ্রেভস তো ছিলেন দলের ভরসার প্রতিমূর্তি, রোচও দারুণভাবে নিজেকে মেলে ধরেন দলের প্রয়োজনে।
প্রথম সেশনে ৮৬ রান এলেও বাউন্ডারি ছিল মাত্র দুটি।
গ্রেভস টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন ৮৮ বলে। পরে একইভাবে খেলে তিনি শতরানে পা রাখেন ১৮১ বল খেলে। রোচকে ফেরানোর কোনো পথও বের করতে পারেনি বাংলাতেশ।
অবশেষে চা-বিরতির একটু আগে রোচকে ৪৭ রানে বোল্ড করে ১৪০ রানের জুটি থামান হাসান।
পরে দশে নেমে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৮ রান করেন জেডেন সিলস। শেষ জুটিতে শামার জোসেফকে নিয়ে দলকে সাড়ে চারশ রানে নিয়ে যান গ্রেভস।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামার পর সতর্কতায় শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। দশম ওভারে উদ্বোধনী জুটি থামে ২০ রানে।
সিলসের বল স্টাম্পে টেনে আনেন জাকির (৩৫ বলে ১৪)। পরের ওভারেই আলজারি জোসেফের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন আরেক ওপেনার জয় (৩৩ বলে ৪)।
অভিজ্ঞ মুমিনুল হক ও দলে ফেরা শাহাদাত হোসেন মিলে দিনের বাকি ৯ ওভার নিরাপদে কাটিয়ে দেন। তবে ৪১০ রানে পিছিয়ে থাকা দলের সামনে অপেক্ষায় কঠিন পরীক্ষার আরেকটি দিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিস ১ম ইনিংস: ১৪৪.১ ওভারে ৪৫০/৯ (ডিক্লে. আগের দিন ২৫০/৫) (গ্রেভস ১১৫*, জশুয়া ১৪, আলজারি জোসেফ ৪, কিমার রোচ ৪৭, সিলস ১৮, শামার জোসেফ ১১*; হাসান ২৭-৩-৮৭-৩, শরিফুল ১৮-৪-৫৩-০, তাসকিন ২৬-৩-৭৬-২, তাইজুল ৩৮-৭-১১১-১, মিরাজ ৩৫.১-৫-৯৯-২)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২০ ওভারে ৪০/২ (জয় ৫, জাকির ১৫, মুমিনুল ৭*, শাহাদাত ১০*; রোচ ৪-০-৬-০, ৬-৪-১৫-১, আলজারি জোসেফ ৫-৩-২-১, শামার জোসেফ ৩-১-৮-০, হজ ১-০-৩-০, আথানেজ ১-০-৪-০)।