বিপিএলে প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে আসরে নিজের প্রথম ফিফটি করলেন পারভেজ হোসেন।
Published : 01 Feb 2025, 10:49 PM
টানা ছয় জয়ে উড়তে থাকা ফরচুন বরিশালকে পরাজয়ের তেতো স্বাদ দিল চিটাগং কিংস। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে রংপুর রাইডার্সকে ছাড়িয়ে গেল তারা। তাই প্রথম কোয়ালিফায়ারে আবার মুখোমুখি হবে বরিশাল ও চিটাগং।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে ২৪ রানে জিতল চিটাগং। ১২ ম্যাচে তাদের এটি অষ্টম জয়। সমান আটটি জয় রংপুরেরও। তবে শ্রেয়তর নেট রান রেটের সৌজন্যে দুইয়ে উঠল চিটাগং।
১২ ম্যাচে ৯ জয় পাওয়া বরিশালই রইল সবার ওপরে। রংপুরের বিপক্ষে দুটি ও চিটাগংয়ের বিপক্ষে এক ম্যাচ হেরেছে তামিম ইকবালের দল।
এলিমিনেটর ম্যাচে সোমবার খুলনা টাইগার্সের মুখোমুখি হবে রংপুর।
শনিবার টস হেরে ব্যাটিং নেমে পারভেজ হোসেনের ঝড়ো ফিফটির সঙ্গে হায়দার আলি, শামীম হোসেনদের ক্যামিওতে ৪ উইকেটে ২০৬ রান করে চিটাগং।
রান তাড়ায় দাভিদ মালানের ফিফটির পর চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ১৮২ রানের বেশি করতে পারেনি বরিশাল।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২ চার ও ৮ ছক্কায় ৭৫ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন পারভেজ।
শুরুতেই পারভেজের জীবন ও ঝড়
প্রথম ওভারে পাঁচ বল ডট খেলার পর শেষটিতে বাউন্ডারি মারেন খাওয়াজা নাফে। পরের ওভারে তাইজুল ইসলামের বলে ছক্কা মারেন পারভেজ।
পরের বলও ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে ক্যাচ ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ওপেনার। তবে হাতে রাখতে পারেননি জেমস ফুলার। উল্টো ছক্কা পেয়ে যান পারভেজ।
শুরুর ঝড় অব্যাহত রাখেন দুই ওপেনার। নিয়মিত চার-ছক্কায় পাওয়ার প্লেতে ৫৫ রান করে চিটাগং।
সপ্তম ওভারে মোহাম্মাদ নাবির বলে তাওহিদ হৃদয়ের দারুণ ক্যাচে বিদায়ঘণ্টা বাজে নাফের। ১৯ বলে তিনি করেন ২২ রান।
ক্লার্কের সঙ্গে পারভেজের জুটি
দারুণ শুরুর পর দলকে আরও টেনে নেন পারভেজ ও গ্রাহাম ক্লার্ক। দ্বিতীয় উইকেটে দুজন মিলে মাত্র ৩৬ বলে গড়ে তোলেন ৭০ রানের জুটি।
৬টি ছক্কায় ৩১ বলে চলতি টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ফিফটি পূর্ণ করেন পারভেজ। পঞ্চাশ ছুঁয়ে প্রথম বাউন্ডারি মারেন তরুণ ওপেনার।
ত্রয়োদশ ওভারে ইবাদত হোসেন চৌধুরির বলে ক্যাচ আউট হন পারভেজ। ৪০ বলের ইনিংসে ২ চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা মারেন তিনি।
পরে পরপর দুই ওভারে ক্লার্ক ও মোহাম্মদ মিঠুনকে আউট করেন তাইজুল।
শেষে হায়দার-শামীমের তাণ্ডব
পারভেজের গড়ে দেওয়া ভিতে শেষটা চমৎকার করেন হায়দার ও শামীম। দুজনের জুটিতে মাত্র ১৯ বলে আসে ৪০ রান।
উনবিংশ ওভারে ফুলারের বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ২২ রান নেন শামীম। ইনিংসের শেষ বল ছক্কায় ওড়ান হায়দার।
৩টি করে চার-ছক্কায় ২৩ বলে ৪২ রান করেন হায়দার। শামীমের ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১২ বলে ৩০ রান।
শুরুতেই পেছন পানে
বড় লক্ষ্যে প্রথম ওভারের পুরোটা মেডেন খেলে শেষ বলে আউট হন তামিম ইকবাল। এরপর রানের জন্য সংগ্রাম করতে থাকেন তাওহিদ হৃদয় ও মালান। পঞ্চম ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন ১১ বলে ৯ রান করা হৃদয়। স্কোর বোর্ডে তখন মাত্র ১৩ রান।
মালানের পাল্টা আক্রমণ
শুরুর ধাক্কায় পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৩০ রান করে বরিশাল। পরে পাল্টা আক্রমণের পথ ধরেন মালান। এক পর্যায়ে ১৩ বলে ১১ রানে থাকা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাত্র ২৮ বলে করে ফেলেন ফিফটি।
সবচেয়ে বেশি ঝড় বইয়ে দেন আরাফাত সানির ওপর। ত্রয়োদশ ওভারে দুটি করে চার-ছক্কা মারেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
এর আগে দশম ওভারে আউট হয়ে যান মুশফিক। ২৪ রান করতে তিনি খেলেন ২২ বল।
চতুর্দশ ওভারে মালানকে ফেরান আলিস আল ইসলাম। ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৩৪ বলে ৬৭ রান করেন তিনি।
শেষে মাহমুদউল্লাহর চেষ্টা
মালানের বিদায়ের পর মোহাম্মাদ নাবিও টিকতে পারেননি। পরে মাহমুদউল্লাহ একাই চেষ্টা করেন দলকে টেনে নিতে। তবে পরাজয়ের ব্যবধান কমানো ছাড়া কাজে লাগেনি তার ইনিংস।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ২৬ বলে ৪১ রান করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং কিংস: ২০ ওভারে ২০৬/৪ (নাফে ২২, পারভেজ ৭৫, ক্লার্ক ২৬, হায়দার ৪২*, মিঠুন ১, শামীম ৩০*; ইমরান ৪-০-৪৪-০, তাইজুল ৪-০-৪৬-২, ইবাদত ৪-০-১৯-১, নাবি ৩-০-২২-১, ফুলার ৩-০-৪১-০, রিশাদ ২-০-২৬-০)
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৮২/৭ (তামিম ০, তাওহিদ ৯, মালান ৬৭, মুশফিক ২৪, মাহমুদউল্লাহ ৪১*, নাবি ০, রিশাদ ১১, ফুলার ১৮, তাইজুল ১*; ফার্নান্দো ৪-১-১৮-২, শরিফুল ৪-০-৪৩-০, আলিস ৪-০-৩২-২, খালেদ ৪-০-৪৭-১, সানি ৪-০-৪১-১)
ফল: চিটাগং কিংস ২৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: পারভেজ হোসেন