সাংগঠনিক কর্মসূচি ও নির্দেশনার বাইরে ব্যক্তিগত ও দলবদ্ধভাবে জড়ো না হওয়াসহ নেতাকর্মীদের এক গুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে নেতাকর্মীদের ১০টি নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার কন্যা শেখ হাসিনার স্মৃতিধন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ছাত্রসমাজের কাছে অনুকরণীয়। পরিকল্পিত 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা' বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ পথ দেখাবে।
“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মী এক একজন 'অনুকরণীয় এবং নির্ভরশীল' বন্ধু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ভূমিকা পালন করবে।”
এছাড়া মোটরসাইকেলে শোডাউন, উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানোসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত শুক্রবার চাঁদাবাজির ঘটনায় হাতেনাতে গ্রেপ্তার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে ইমন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের রাজিব হোসাইন ওরফে রবিনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ইমন ও রবিনকে আটক করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় মামলা হলে তাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। সেই প্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়গুলো উল্লেখ করে তাদের বহিষ্কার করা হয়।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারধর, হলে সিট নিয়ে সংঘর্ষসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ চার বিশ্ববিদ্যালয় ও এক কলেজের ২১ জন নেতাকর্মীকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এসব অভিযোগ ও বহিষ্কারাদেশের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্মার্ট ক্যাম্পাসে পরিণত করা, হলগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষার বিষয়গুলো উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের ১০টি নির্দেশনা দিল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
নির্দেশনায় যা রয়েছে
১. সাংগঠনিক কর্মসূচি ও নির্দেশনার বাইরে ব্যক্তিগত ও দলবদ্ধভাবে যেকোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়া।
২. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলোতে শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হওয়া; পরিবেশ নষ্ট হতে পারে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়া।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর দেশের শিক্ষা উন্নয়ন ও গবেষণা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও শিল্পচর্চার উদ্যোগ-আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নির্মল-মনোরম রাখতে ব্যক্তিগত ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার না করা।
৫. মোটরসাইকেল শোডাউন, উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, সাউন্ড সিস্টেমের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার না করা।
৬. আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ উন্নতকরণে, সুশৃঙ্খল আবাসন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখা।
৭. বিশ্ববিদ্যালয় পরিমণ্ডলে ক্রিয়াশীল অপরাপর প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাস কমিটির সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা।
৮. সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা।
৯. ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো, অপরাধমূলক প্রবণতা, মাদক সংশ্লিষ্টতার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।
১০. সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি, নিরাপত্তা বিঘ্নকারী, ইভটিজিং, র্যাগিংয়ের সঙ্গে না জড়ানো।
আরও পড়ুন_