মেসির হাতে শিরোপা: উল্লাস-উন্মাদনায় মাতলো ঢাকাও

অসাধারণ এক খেলায় শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও রাজধানীর সড়কে ফুটবলপ্রেমীদের বিজয়োল্লাসের রেশ ছিল দীর্ঘ সময়জুড়ে।

রাসেল সরকারঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2022, 08:03 PM
Updated : 18 Dec 2022, 08:03 PM

ক্ষণে ক্ষণে নাটকীয়তা আর টানটান উত্তেজনার রোমাঞ্চকর এক খেলায় সমর্থকদের হৃদয় কাঁপিয়ে অবশেষে লিওনেল মেসির হাতে ধরা দিল সেই বিশ্বকাপ; বিশ্বজুড়ে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের আনন্দে ভাসার ঢেউ যেন আছড়ে পড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও।

রোববার রাতে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের মহারণে চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো আর্জেন্টিনার, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের শিরোপা পেল মারাদোনার উত্তরসূরী মেসি। অসাধারণ এক খেলায় শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাঁধভাঙা উল্লাস আর উন্মাদনায় মেতে উঠেন ফুটবলপ্রেমীরা।

‘মেসি’ ‘মেসি’ ‘আর্জেন্টিনা’ স্লোগান আর ভুভুজেলা বাজিয়ে একের পর এক ঝটিকা মিছিল, নেচে-গেয়ে জয় উদযাপন করেন ভক্তরা।

শুধু ক্যাম্পাস নয়, পুরো রাজধানীজুড়েই এর রেশ চলেছে ফাইনাল শেষেও দীর্ঘক্ষণ। শিরোপা নির্ধারণী এ খেলাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর ও মুহসীন হল মাঠে বড় পর্দায় খেলা দেখতে মানুষের ঢল নামে। প্রিয় দলের পতাকা, জার্সি আর ভুভুজেলা নিয়ে সমর্থকরা একেকটি স্থানকে বানিয়ে ফেলেন মিনি স্টেডিয়ামে।

শুরু থেকেই আক্রমণে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয় গোলের পর উল্লাসে ফেটে পড়েন সবাই। ম্যাচজুড়েই তৈরি হওয়া নাটকীয়তায় তা কখনও নিরবতাতেও রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার জয়ে বিজয়োল্লাসে ছেয়ে যায় পুরো ক্যাম্পাস।

উল্লসিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিলয় কুমার বিশ্বাস বলেন, মেসির হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি দেখার যে আক্ষেপ ছিল, সেটা অবশেষে মিটল। আজকের দিনটা আমার মত আর্জেন্টাইন সমর্থকদের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আরেক সমর্থক অনামিকা বলেন, অনেক অনেক বেশি উচ্ছ্বসিত। বিশেষ করে মেসির জাতীয় দলের হয়ে একটা ট্রফি বড্ড প্রয়োজন ছিল।

“মেসির ঝুলিতে কোপা আমেরিকা কাপ, ফাইনালিসিমাসহ বিভিন্ন ক্লাব ট্রফি এবং বর্ষসেরা ব্যালন ডি অর শোভা পেয়েছে। কিন্তু একটা অপূর্ণতা ছিল, অবশেষে সেটা ধরা দিয়েছে।”

এ শিরোপা জয়ের মাধ্যমে মেসি নিন্দুকের মুখে ‘ছাই ঢেলে দিয়েছেন’ বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মাহী।

আর্জেন্টিনার এই পাড় সমর্থক বলেন, “মেসি যে শুধু ক্লাবের নয়, তা তিনি ফিফা বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে প্রমাণ করে দিয়েছেন।”

আরেক সমর্থক শেখ মোহাম্মদ আরমান বলেন, জীবনে যতদিন বাঁচি আর কোনো ট্রপি আর্জেন্টিনার হাতে না দেখলেও কোনো দুঃখ থাকবে না, শুধু কাতার বিশ্বকাপটা মেসির হাতে চেয়েছিলাম। অবশেষে সেই আশা পূরণ হলো। সত্যিই আমি আজ গর্বিত।

আর্জেন্টিনার আরেক সমর্থক আমজাদ হোসেন বলেন, এবারের বিশ্বকাপটা মেসির হাতেই শোভা পেয়েছে। বিশ্বের অধিকাংশ ফুটপ্রেমীর এই প্রত্যাশা ছিল।

“কেননা বিশ্বের সমস্ত ফুটবলপ্রেমী মানুষ মাত্রই মেসির নান্দনিক এবং শৈল্পিক পায়ের যাদুতে মুগ্ধ। এত এত অর্জন, এত ভালোবাসার সাথে সাথে বিশ্বকাপ ট্রফিটাও নিশ্চই মেসির হাতে ওঠার জন্য ব্যাকুল ছিল।”

পর্তুগাল দলের সমর্থক হলেও মেসির হাতে শিরোপা উঠায় খুশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল সাদী ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, খেলায় হার-জিত থাকবে। পর্তুগাল আগেই বিদায় নিয়েছে, দুঃখ নাই। একজন ফুটবলপ্রেমী হিসেবে চেয়েছিলাম ফুটবলের সবচেয়ে বড় অর্জন বিশ্বকাপ এমন একজন ব্যক্তির হাতে উঠুক যার পায়ের জাদুতে ফুটবল বিশ্বে জনপ্রিয় করেছে। মেসিদের এই জয় ফুটবলের জয়, নান্দনিকতার জয়।