শিক্ষাকে উন্নত করতে, মানসম্পন্ন করতে অনেক কাজ হচ্ছে বলে জানান অধ্যাপক আমিনুল।
Published : 25 Jan 2025, 03:51 PM
অভিভাবকদের চাওয়ার কারণে অনেক প্রতিভার 'মৃত্যু' হচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু প্রতিভা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, সেই প্রতিভাকে পরিশীলিত, উজ্জীবিত করা ও বাস্তবে পরিণত করার প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, “অনেকের প্রতিভা মরে যায়, যার কারণ অভিভাবকরাই। অভিভাবকরা বলেন, ‘তোকে ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে, তোকে ডাক্তার হতে হবে, তোকে পুলিশ হতে হবে, তোকে বিসিএস অ্যাডমিনিস্ট্রশন ক্যাডার হতে হবে’।
“এগুলো বলার মাধ্যমে তার সেগুলো ভালো লাগুক না লাগুক, দেখা যায়, সেখানে গিয়ে ভর্তি হয়। এতে তাদের প্রতিভাও নষ্ট হয়ে যায় আর যেখানে পড়তে গিয়েছে সেখানেও মানিয়ে নিতে পারে না।”
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উত্তরা ইউনিভার্সিটির নবম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে ২২টি ক্লাব রয়েছে উল্লেখ করে এটিকে 'একটি অসাধারণ বিষয়' বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আমিনুল।
এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলছে এবং সামনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিপ্লব অপেক্ষা করছে উল্লেখ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদার বিশেষ সহকারী বলেন, “উন্নত দেশগুলো ব্যাপকভাবে কাজ করছে এআইয়ে উত্তরণের জন্য। আমরা কি বসে থাকব? বাংলাদেশের ভালো ভালো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি ভালো ভালো কলেজগুলো এবং বেসরকারি খাত এ ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে কাজ করছে।”
শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে সমৃদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশে কিংবা বিদেশে তোমরা যাই করো না কেন এই দুইটা জিনিসে তোমারা যদি সমৃদ্ধ হতে পারো তাহলে তোমারা হট কেকের মত বিক্রি হবে। তোমাদের কোনো সীমা থাকবে না।”
শিক্ষাকে উন্নত করতে, মানসম্পন্ন করতে অনেক কাজ হচ্ছে জানিয়ে অধ্যাপক আমিনুল বলেন, “সরকারিভাবেও হচ্ছে, বেসরকারিভাবেও হচ্ছে। যারা লেখাপড়া করছে তারা যেন শিক্ষিত বেকারে পরিণত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
“তাদের কর্মক্ষম রাখার জন্য বিভিন্ন ডিপ্লোমা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছে। পাশাপাশি তাদেরকে উদ্যোক্তায় পরিণত করে উদ্যোক্তারা যাতে অন্যদের কাজ দিতে পারে সেটাও দেখানো হচ্ছে। অসম্ভব সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে তার প্রতিনিধি হিসেবে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুল হান্নান চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন।
নবম সমাবর্তন বক্তব্য দেন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ইয়াসমীন আরা লেখা ও ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য গৌর গোবিন্দ গোস্বামী।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৩৪৯৭ জন শিক্ষার্থীকে গ্র্যাজুয়েশন ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি এবং কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ২ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সলর স্বর্ণপদক ও ৩৫ জনকে শিক্ষার্থীকে ট্রাস্টি, ভিসি, ও ডিন পদক দেওয়া হয়।
সমাবর্তনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য এম আজিজুর রহমান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্র্যাজুয়েটদের অভিভাবকরা।